জাতীয় সমাজ সেবা দিবস-২০২৫ উপলক্ষে সমাজ সেবা অধিদপ্তর আয়োজিত ওয়াকাথন ও সমাজ সেবা সম্মেলন উদ্বোধন করেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে অনুষ্ঠানস্থল জাতীয় সংসদ সংলগ্ন মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে পৌঁছান প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, সমাজ সেবা প্রতিটি মানুষের দায়িত্ব আর মন্ত্রণালয়ের কাজ হলো সবাইকে মনে করিয়ে দেওয়া, যেন কেউ ভুলে না যায় এই দায়িত্ব থেকে, দূরে সরে না যায়...আশা করি, এই আহ্বান সবার কাছে পৌঁছে যাবে।
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, প্রত্যেক মানুষের মধ্যেই পরের স্বার্থে কাজ করার প্রবণতা আছে। সেই ইচ্ছাকে জাগিয়ে তুলতে হবে। নিজের জন্য কিছু করার তুলনায় পরের কল্যাণে কাজ করায় আনন্দ মেলে বেশি।
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস দৈনন্দিন জীবনে জনস্বার্থে কাজ করার অভ্যাস গড়ে তোলার আহ্বান জানান।
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, সরকারের শক্তির থেকেও মানুষের শক্তি বেশি।
দেশকে এগিয়ে নিতে সরকারের ওপর শতভাগ নির্ভরশীল না হয়ে ব্যক্তিপর্যায়ে সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বানও জানান প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
মন্তব্য করুন
‘আন্তর্জাতিক নারী দিবস’ উপলক্ষ্যে শুক্রবার (০৭ মার্চ) দেওয়া এক বাণীতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, নারীদের সম্ভাবনা ও কর্মদক্ষতাকে উৎপাদনমুখী কাজে সম্পৃক্ত করে উন্নত বাংলাদেশ গড়ার অভীষ্ট লক্ষ্য অর্জনে বর্তমান সরকার নিরবচ্ছিন্নভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
উন্নত বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করতে উন্নত বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এগিয়ে যাবে বাংলাদেশের নারীরা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের নারী সমাজের উন্নয়ন ও ক্ষমতায়নের ক্ষেত্রে এটাই হোক আমাদের অঙ্গীকার।’
ড. ইউনূস বলেন, ৮ মার্চ- আন্তর্জাতিক নারী দিবস। ১৯৭৫ সালে ৮ মার্চকে জাতিসংঘ আন্তর্জাতিক নারী দিবস হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করে। নারী অধিকার রক্ষায় এই দিনটি বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও প্রতি বছর উদযাপিত হয়। এবারের নারী দিবসের প্রতিপাদ্য বিষয়: ‘অধিকার, সমতা, ক্ষমতায়ন-নারী ও কন্যার উন্নয়ন’।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক রূপান্তরের আকাঙ্ক্ষায় ছাত্র-শ্রমিক-জনতা যে অভ্যুত্থান সংগঠিত করেছিল গত জুলাই-আগস্টে তার সম্মুখ সারিতে ছিল নারী। লাখ লাখ ছাত্রী বিভিন্ন ক্যাম্পাসে দমন নিপীড়নের বিরুদ্ধে প্রতিবাদমুখর হয়েছে। একাধিক নারী এই গণ-অভ্যুত্থানে শাহাদতবরণ করেছেন। আমি এই গণ-অভ্যুত্থানে আত্মত্যাগকারীদের শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি এবং জুলাই যোদ্ধাদের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি।’
তিনি বলেন, দেশের মোট জনসংখ্যার অর্ধেকই নারী। তারা এগিয়ে যাচ্ছে সর্বক্ষেত্রে। নারীদের অধিকার ও ক্ষমতায়নের পাশাপাশি দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নসহ প্রতিটি ক্ষেত্রে নারীদের অংশগ্রহণ বৃদ্ধি এবং অংশীদারিত্ব নিশ্চিত করতে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় বহুমুখী কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে।
তিনি আরও বলেন, নির্যাতিত, দুস্থ ও অসহায় নারীদের জন্য শেল্টার হোম, আইনি সহায়তা দিতে ‘মহিলা সহায়তা কেন্দ্র’, কর্মজীবী মহিলাদের আবাসন ও নারীদের আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে সহায়তা ও ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রম নারীদের আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী করতে এবং সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
ড. উইনূস বলেন, বাংলাদেশের অদম্য মেয়েরা দেশের গণ্ডি পেরিয়ে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে স্বমহিমায় এগিয়ে যাচ্ছে।
মন্তব্য করুন
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ছাড়া অভিযান চালানোর অধিকার কারও নেই বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত লে. জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর পল্টনে ট্যুরিস্ট পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের তিনি এই কথা জানান।
রমজানে বাজার অস্থিতিশীল না করার আহ্বান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার
মহাসড়কে যেসব জায়গায় ডাকাতি হচ্ছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সেসব জায়গায় নিরাপত্তা জোরদার করছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা।
তিনি বলেন, ‘রমজান ও ঈদ ঘিরে ডাকাতি আর ছিনতাই রোধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।’
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘মব হচ্ছে এটা অস্বীকার করব না। জনগণকে সচেতন হতে হবে। জনগণ উচ্ছৃঙ্খল হলে তো চলবে না।’
দেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তৎপর জানিয়ে জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘মব প্রতিরোধে কাজ করছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ছাড়া কারও অধিকার নেই অভিযান চালানো।’
মন্তব্য করুন
আজ রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলনকক্ষে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপারসন শেখ হাসিনা।
সভায় ৩৯ হাজার ৩৪৪ কোটি টাকা ব্যয় সংবলিত ৪৪ প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়।
পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান জানান সভায় ৩৬ টি এবং টেবিলে ৯টি প্রকল্প উপস্থাপিত হয়। এর মধ্যে ১টি ফিরিয়ে দেওয়া হয়।এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম, পরিকল্পনা সচিব সত্যজিৎ কর্মকার ও পরিকল্পনা কমিশনের সদস্যরা।
অনুমোদন পাওয়া প্রকল্পগুলো হলো-শেরেবাংলা নগর প্রশাসনিক এলাকায় বহুতল সরকারি অফিস ভবন নির্মাণ প্রকল্প; তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল এলাকায় সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জন্য ১২৩টি ফ্ল্যাট নির্মাণ প্রকল্প; চট্টগ্রাম শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনকল্পে খাল পুনঃখনন, সম্প্রসারণ, সংস্কার ও উন্নয়ন (প্রথম সংশোধিত) প্রকল্প; বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগর অর্থনৈতিক অঞ্চলের সঙ্গে লক্ষ্মীপুর, নোয়াখালী ও ফেনী জেলার সংযোগকারী সড়ক যথাযথ মানে উন্নীতকরণ প্রকল্প।
ইলিয়টগঞ্জ-মুরাদনগর-রামচন্দ্রপুর-বাঞ্ছারামপুর জেলা মহাসড়কটি যথাযথ মানে ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ প্রকল্প; রাজউক পূর্বাচল ৩০০ ফুট মহাসড়ক হতে মাদানী এভিনিউ সিলেট মহাসড়ক পর্যন্ত সংযোগ সড়ক নির্মাণ (দ্বিতীয় সংশোধিত) প্রকল্প; সাতক্ষীরা-সখিপুর-কালীগঞ্জ মহাসড়ক এবং কালীগঞ্জ-শ্যামনগর-ভেটখালী মহাসড়ক যথাযথ মানে উন্নীতকরণ প্রকল্প; চার লেনে উন্নীত ঢাকা-চট্টগ্রাম জাতীয় মহাসড়কের (এন-১) (দাউদকান্দি-চট্টগ্রাম অংশ) চার বছরের জন্য পারফরম্যান্স-বেজড অপারেশন ও দৃঢ়করণ (প্রথম সংশোধিত) প্রকল্প; ভাঙ্গা-যশোর-বেনাপোল মহাসড়ককে চার লেনে উন্নীতকরণের জন্য ভূমি অধিগ্রহণ ও ইউটিলিটি স্থানান্তর প্রকল্প; গাবতলী সিটি পল্লীতে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ক্লিনারবাসীদের জন্য বহুতলা বিশিষ্ট আবাসিক ভবন নির্মাণ (তৃতীয় সংশোধিত) প্রকল্প; ঢাকা পানি সরবরাহ নেটওয়ার্ক উন্নয়ন (দ্বিতীয় সংশোধিত) প্রকল্প; বর্ধিত ঢাকা পানি সরবরাহ রেজিলিয়েন্স প্রকল্প; ঢাকা স্যানিটেশন উন্নয়ন (প্রথম সংশোধিত) প্রকল্প।
বরিশাল সিটি করপোরেশন এলাকায় বিভিন্ন রাস্তা উন্নয়ন, জলাবদ্ধতা নিরসন ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা উন্নয়ন প্রকল্প; বাংলাদেশ ই-পাসপোর্ট ও স্বয়ংক্রিয় বর্ডার নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাপনা প্রবর্তন (প্রথম সংশোধিত) প্রকল্প; ঢাকার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামের অধিকতর উন্নয়ন (প্রথম সংশোধিত) প্রকল্প; রাজশাহী মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (আরএমইউ) স্থাপন (প্রথম সংশোধিত) প্রকল্প; মুগদা মেডিকেল কলেজের প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণ এবং আনুষঙ্গিক সুবিধা সম্প্রসারণ প্রকল্প; সাপোর্টিং ইমপ্লিমেন্টেশন অব দ্য মাদার অ্যান্ড চাইল্ড বেনিফিট প্রোগ্রাম প্রকল্প; বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয়, কিশোরগঞ্জের জন্য ভূমি অধিগ্রহণ, উন্নয়ন এবং আনুষঙ্গিক কাজ বাস্তবায়ন প্রকল্প; আইসিটি শিক্ষা ও গবেষণা কার্যক্রম জোরদারকরণের জন্য নেকটারের ভৌত অবকাঠামো উন্নয়ন ও প্রশিক্ষণ কার্যক্রম প্রকল্প; উদ্ভাবন ও উদ্যোক্তা উন্নয়ন একাডেমি প্রতিষ্ঠাকরণ (তৃতীয় সংশোধিত) প্রকল্প; ইমপ্রুভমেন্ট অব আরবান পাবলিক হেলথ প্রিভেনটিভ সার্ভিসেস প্রজেক্ট; যমুনা নদী টেকসই ব্যবস্থাপনা প্রকল্প-১ দুর্যোগ ঝুঁকি অর্থায়ন (কম্পোনেন্ট ৩) প্রকল্প; মহেশখালী অর্থনৈতিক অঞ্চল-৩ এর গ্যাস, বিদ্যুৎ ও যোগাযোগ অবকাঠামো নির্মাণ প্রকল্প; যশোর রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা প্রকল্প।
সুগন্ধা নদীর ভাঙ্গন হতে ঝালকাঠি জেলার সদর উপজেলা ও নলছিটি উপজেলার বিভিন্ন এলাকা রক্ষা প্রকল্প; সমগ্র দেশে শহর ও ইউনিয়ন ভূমি অফিস নির্মাণ (দ্বিতীয় পর্ব) প্রকল্প; প্রাণী সম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন (প্রথম সংশোধিত) প্রকল্প; আধুনিক খাদ্য সংরক্ষণাগার নির্মাণ (তৃতীয় সংশোধিত) প্রকল্প; বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্ক, মৌলভীবাজার (প্রথম পর্যায়) প্রকল্প; মেহেরপুর সদরে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের আঞ্চলিক কৃষি গবেষণা কেন্দ্র স্থাপন ও দেশের মধ্য পশ্চিমাঞ্চলের পরিবেশ-প্রতিবেশ উপযোগী গবেষণা কার্যক্রম জোরদারকরণ প্রকল্প; বঙ্গবন্ধু পিয়েরে এলিয়ট ট্রুডো কৃষি প্রযুক্তি কেন্দ্র স্থাপন এবং বাংলাদেশ কৃষি গবেষণায় সক্ষমতা বৃদ্ধি প্রকল্প; পার্বত্য চট্টগ্রাম পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প; মাদারীপুর, শরীয়তপুর ও রাজবাড়ী জেলার গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন (দ্বিতীয় সংশোধিত) প্রকল্প।
মন্তব্য করুন
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক
ড. মুহাম্মদ ইউনূস দেশে চোখের যত্ন ও পরিষেবা সম্প্রসারণের জন্য অলাভজনক প্রতিষ্ঠান
অরবিস ইন্টারন্যাশনালের সাথে কাজ ও সহযোগিতা করার জন্য বাংলাদেশের আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।
অরবিস ইন্টারন্যাশনালের
প্রেসিডেন্ট ও সিইও ডেরেক হডকির সাথে এক বৈঠকে তিনি বলেন, বাংলাদেশে চোখের যত্নের সেবা
সম্প্রসারণ করতে হবে এবং এ লক্ষ্যে আরা অরবিস ইন্টারন্যাশনালের সাথে কাজ করতে প্রস্তুত।
আজ শুক্রবার (২২
নভেম্বর) এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা বলা হড, অরবিস ফ্লাইং আই হাসপাতালের প্রশিক্ষণ
কর্মসূচির অংশ হিসেবে ডেরেক বাংলাদেশ সফর করছেন। এখন চট্টগ্রামে প্রশিক্ষণ চলছে। ডেরেকে
গত বুধবার (২০ নভেম্বর) রাজধানীতে অধ্যাপক ইউনূসের সাথে তার কার্যালয়ে দেখা করেন।
অরবিস বাংলাদেশের
কান্ট্রি ডিরেক্টর ড. মুনির আহমেদ প্রধান উপদেষ্টার সাথে সাক্ষাতের সময় ডেরেকের সাথে
ছিলেন। অরবিস প্রেসিডেন্ট প্রধান উপদেষ্টাকে ফ্লাইং আই হাসপাতালের একটি মডেল সংস্করণ
উপস্থাপন করেন। অধ্যাপক ইউনূস এটির ভূয়সী প্রশংসা করেন।
ডেরেক অরবিস ইন্টারন্যাশনালের
কাজ সম্পর্কে প্রধান উপদেষ্টাকে অবিহিত করেন। অরবিস ১৯৮২ সালে বিশ্বব্যাপী দৃষ্টি-সংরক্ষণ
কর্মসূচি শুরু করেছিল। অরবিস গত ৩৯ বছর ধরে বাংলাদেশে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের
সাথে কাজ করছে।
ডেরেক বলেন, এই সময়ের
মধ্যে, অরবিস এ পর্যন্ত কমিউনিটি আউটরিচ ইভেন্টে ৭.৮ মিলিয়নেরও বেশি চোখের স্ক্রীনিং
পরিচালনা করেছে, প্রাপ্তবয়স্ক ও শিশুদের মধ্যে ৪.৫ মিলিয়নেরও বেশি ব্যক্তিকে ওষুধ ও
অপটিক্যাল চিকিৎসা প্রদান করেছে, ২৫৮,০০০টিরও বেশি চোখের সার্জারি করেছে এবং বাংলাদেশের
৪০ হাজারের বেশি লোককে চোখের যত্ন নেয়ার বিষয়ে প্রশিক্ষিত করেছে।
অধ্যাপক ইউনূস বাংলাদেশে
চক্ষু স্বাস্থ্য খাতে অরবিসের অবদানের কথা স্বীকার করেন এবং ফ্লাইং আই হাসপাতালের প্রতি
তার কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। অরবিস এখন বাংলাদেশে ১১তম প্রশিক্ষণ কার্যক্রম পরিচালনা
করছে।
ড. ইউনূস বলেন, ‘আমি
অরবিসকে ভালোবাসি। আমি ফ্লাইং আই হসপিটালকে ভালোবাসি।’ তিনি উলে¬খ করেন যে, অরবিস বাংলাদেশে
চোখের স্বাস্থ্য খাতে ভূমিকা পালনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর অন্যতম।
ডেরেক বলেন, অরবিস
ব্যক্তি, পরিবার ও জনগোষ্ঠীকে সাহায্য করার জন্য বিশ্বব্যাপী ২ শতাধিক দেশ ও ভূখণ্ডে
দৃষ্টি সংরক্ষণের কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে।
বিশ্বজুড়ে প্রায় এক
বিলিয়ন মানুষ সম্পূর্ণভাবে পরিহারযোগ্য অন্ধত্ব ও দৃষ্টিশক্তি হ্রাসের সমস্যা নিয়ে
বসবাস করছে উলে¬খ করে ডেরেক বলেন, চার দশকেরও বেশি সময় ধরে অরবিস জোরদার ও টেকসই চোখের
যত্ন ব্যবস্থা নিয়ে এ চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করছে।
অরবিস প্রেসিডেন্ট বলেন, অলাভজনক এ প্রতিষ্ঠানটি আফ্রিকা, এশিয়া ও ল্যাটিন আমেরিকায় বিশেষ কর্মসূচি পরিচালনা করছে এবং প্রশিক্ষণ প্রদান ও প্রযুক্তির প্রয়োগ করছে।
তিনি বলেন, গত চার
দশক ধরে অরবিস শিশুদের চোখের যত্ন, মাইক্রোসার্জারি, রেটিনাল সার্জারি, কর্নিয়ার রোগ,
প্রিম্যাচুরিটি রেটিনোপ্যাথি এবং ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথির ওপর গুরুত্ব দিয়ে বাংলাদেশের
স্থানীয় অংশীদারদের দক্ষতা ও জ্ঞানের উন্নতিতে সাহায্য করেছে।
ডেরেক এ সময় প্রধান
উপদেষ্টাকে আরো অবিহিত করেন যে, অরবিস সারা দেশে বিশেষ করে গ্রামীণ এলাকায় ৪২টি দৃষ্টি
সেবা কেন্দ্র স্থাপন করে চোখের যত্নের সাথে জনগোষ্ঠীকে সম্পৃক্ত করেছে; ১৭টি সেকেন্ডারি
হাসপাতাল, চারটি তৃতীয় হাসপাতাল, দুটি ওয়েট ল্যাব, একটি মানসম্পন্ন রিসোর্স সেন্টার
ও একটি ডিজিটাল ট্রেনিং হাব প্রতিষ্ঠা বা উন্নতিতে সহায়তা করেছে।
মন্তব্য করুন
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ
ইউনূস বাংলাদেশে আরো মার্কিন বিনিয়োগকে আমন্ত্রণ জানিয়ে বলেছেন, তার সরকার বিদেশি বিনিয়োগ
আকর্ষণ এবং দেশের ব্যবসায় পরিবেশ উন্নয়নে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।
আজ মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) ঢাকায় তিনি
একটি মার্কিন ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদলকে বলেন, ‘আপনারা সঠিক সময়ে এদেশে এসেছেন।’
এক্সিলারেট এনার্জির প্রধান নির্বাহী
কর্মকর্তা (সিইও) এবং ইউএস-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যান স্টিভেন কোবোসের
নেতৃত্বে মার্কিন ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদল আজ রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা
অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
অন্তর্বর্তী সরকারের নেতৃত্ব গ্রহণ
করায় প্রধান উপদেষ্টার প্রশংসা করে স্টিভেন কোবোস বলেন, এটি বাংলাদেশে ব্যবসায় আস্থা
বাড়াবে।
তিনি বলেন, ‘আপনার দায়িত্ব গ্রহণের
পর থেকে আমেরিকান কোম্পানিগুলোর বাংলাদেশে আগ্রহ অনেক বেড়েছে।’
কোবোস আরো জানান, ইউএস-বাংলাদেশ বিজনেস
কাউন্সিলের সদস্যসহ শীর্ষস্থানীয় মার্কিন কোম্পানিগুলো দক্ষিণ এশিয়ার এই দেশে ব্যবসার
সম্ভাবনা নিয়ে অনেক আগ্রহী।
এক্সিলারেট এনার্জির সিইও কোবোস বলেন,
তার কোম্পানি বাংলাদেশের জ্বালানি খাতে এবং কার্বন নিঃসরণ হ্রাসে আরো বিনিয়োগের পরিকল্পনা
করছে।
তিনি বলেন, কোম্পানিটি দেশে তরলীকৃত
প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) সরবরাহ বৃদ্ধি করতে চায়। বর্তমানে এক্সিলারেট বাংলাদেশের
দুটি অফশোর ফ্লোটিং স্টোরেজ এবং রিগ্যাসিফিকেশন ইউনিটে (এফএসআরইউ) বিনিয়োগ করেছে, যা
প্রতিদিন ১.১ বিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করে। দেশের দৈনিক গ্যাস সরবরাহের প্রায় ৩৪
শতাংশ এখান থেকে আসে।
সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সফরের
সময় প্রধান উপদেষ্টা ইউএস-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিলের একটি অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।
সেখানে এ সংগঠনের ৫০ জন সদস্য উপস্থিত ছিলেন, যার মধ্যে কিছু শীর্ষস্থানীয় আমেরিকান
বহুজাতিক কোম্পানিও ছিল। ড. ইউনূস উপস্থিত মার্কিন ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের
আমন্ত্রণ জানান।
সাক্ষাৎকালে স্টিভেন কোবোসের সঙ্গে
প্রতিনিধিদলে ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক রাষ্ট্রদূত পিটার হাসসহ এক্সিলারেট এনার্জির
উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা ছিলেন। পিটার সম্প্রতি এক্সিলারেট এনার্জিতে স্ট্র্যাটেজিক অ্যাডভাইজার
হিসেবে যোগদান করেছেন। এছাড়া প্রতিনিধিদলে কোম্পানিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট ডেরেক ওয়ং
ও র্যামন ওয়াংডি এবং বাংলাদেশের আবাসিক ব্যবস্থাপক হাবিব ভূঁইয়া উপস্থিত ছিলেন।
সাক্ষাৎকালে প্রধান উপদেষ্টার এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ, বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী ও জ্বালানি সচিব সাইফুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য করুন
পৃথিবীকে জলবায়ু বিপর্যয় থেকে রক্ষা করার জন্য ‘শূন্য বর্জ্য ও শূন্য কার্বন’-এর ওপর ভিত্তি করে একটি নতুন জীবনধারা গড়ে তোলার পরামর্শ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
আজ
বুধবার (১৩
নভেম্বর) আজারবাইজানের রাজধানী বাকুতে কপ২৯-এর ওয়ার্ল্ড লিডারস ক্লাইমেট অ্যাকশন সামিটের উদ্বোধনী অধিবেশনে তিনি আহ্বান করেন।
একটি নতুন পৃথিবী গড়ার লক্ষে তিনটি শূন্যভিত্তিক তার দীর্ঘ দিনের স্বপ্নের কথাও উপস্থাপন করেন প্রধান উপদেষ্টা।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস
বলেন, বেঁচে থাকার জন্য, আমাদের আরেকটি সংস্কৃতি গঠন করতে হবে। একটি ভিন্ন জীবনধারার ওপর ভিত্তি করে আরেকটি পাল্টা সংস্কৃতি গড়তে হবে। এটি হবে শূন্য বর্জ্যের ওপর ভিত্তি করে। এ সংস্কৃতি নিত্য পণ্যের ব্যবহারকে সীমিত করবে, কোন বর্জ্য অবশিষ্ট রাখবে না। এ জীবনযাত্রাও হবে শূন্য কার্বনের ওপর ভিত্তি করে যেখানে কোনো জীবাশ্ম জ্বালানি থাকবে না, শুধুমাত্র পুনঃনবায়নযোগ্য শক্তি থাকবে। এতে এমন একটি অর্থনীতি হবে যা প্রাথমিকভাবে সামাজিক ব্যবসার মতো ব্যক্তিগত পর্যায়ে শূন্য মুনাফার ওপর ভিত্তি করে তৈরি হবে। সামাজিক ব্যবসার একটি বিশাল অংশ পরিবেশ ও মানবজাতির সুরক্ষায় মনোযোগ দেবে। সাশ্রয়ী স্বাস্থ্যসেবা ও শিক্ষার মাধ্যমে মানুষের জীবন কেবল সুরক্ষিতই হবে না, গুণগতভাবে উন্নত হবে। এটি যুবকদের জন্য উদ্যোক্তা হওয়ার পথ সহজতর করবে। উদ্যোক্তা হওয়ার নতুন শিক্ষার মাধ্যমে তরুণরা প্রস্তুত হবে। চাকরিপ্রার্থী তৈরির শিক্ষা উদ্যোক্তা-কেন্দ্রিক শিক্ষা দ্বারা প্রতিস্থাপিত হবে।
পরিবেশের সুরক্ষার জন্য একটি নতুন জীবনধারার প্রয়োজন উল্লেখ করে ড. ইউনূস বলেন, নতুন জীবনধারা চাপিয়ে দেয়া হবে না, এটি হবে পছন্দ বেছে নেওয়া। তরুণরা সে জীবনধারাকে পছন্দ হিসেবে বেছে নেবে। প্রতিটি যুবক তিন শূন্য ভিত্তিক ব্যক্তি হিসেবে বেড়ে উঠবে। এগুলো হচ্ছে- শূন্য নেট কার্বন নির্গমন, শুধুমাত্র সামাজিক ব্যবসা গড়ে তোলার মাধ্যমে শূন্য সম্পদ কেন্দ্রীকরণ ও নিজেদের উদ্যোক্তা হিসেবে পরিণত করার মাধ্যমে শূন্য বেকারত্ব। প্রত্যেক মানুষ তিন শূন্য ভিত্তিক ব্যক্তি হিসেবে বেড়ে উঠবে এবং সারাজীবন তিন শূন্য ভিত্তিক ব্যক্তি হিসেবে থাকবে। এটি নতুন সভ্যতা গড়ে তুলবে। এটা করা যেতে পারে আমাদের যা করতে হবে তা হল এ গ্রহের নিরাপত্তার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ একটি নতুন জীবনধারা গ্রহণ করা যেখানে সবাই বসবাস করে। আজকের তরুণ প্রজন্ম বাকিটা করবে। তারা তাদের আমাদের গ্রহকে ভালোবাসে। আমি আশা করি আপনারা এ স্বপ্ন দেখায় আমার সাথে যোগ দেবেন। আমরা যদি একসাথে স্বপ্ন দেখি তবে তা সম্ভব হবে। জলবায়ু সংকট তীব্রতর হচ্ছে এবং সে কারণে মানব সভ্যতা মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। মানুষ আত্ম-বিধ্বংসী মূল্যবোধের প্রচার চালিয়ে যাচ্ছে। আত্ম-রক্ষাত্মক ও আত্ম-শক্তিবর্ধক একটি নতুন সভ্যতার ভিত্তি স্থাপনের জন্য আমাদের বুদ্ধিবৃত্তিক, আর্থিক ও যুব শক্তিকে কাজে লাগাতে হবে। আমরা, এই গ্রহের মানব বাসিন্দারা এই গ্রহের ধ্বংসের কারণ। মানুষ ইচ্ছাকৃতভাবে এটি করছে এবং তারা এমন একটি জীবনধারা বেছে নিয়েছে যা পরিবেশের বিরুদ্ধে কাজ করে। তারা এটিকে একটি অর্থনৈতিক কাঠামো দিয়ে ন্যায্যতা দেয়, যা এ গ্রহ ব্যবস্থার মতো প্রাকৃতিক হিসেবে বিবেচিত হয়। এ অর্থনৈতিক কাঠামো সীমাহীন খরচের ওপর ভিত্তি করে চলছে। আপনি যত বেশি ব্যবহার করবেন তত বেশি প্রবৃদ্ধি পাবেন। যত বেশি প্রবৃদ্ধি অর্জন করবেন, তত বেশি অর্থ উপার্জন করবেন। সর্বাধিক মুনাফা অর্জনকে সিস্টেমের সবকিছুকে আমাদের ইচ্ছা অনুযায়ী ভূমিকা পালনের শক্তি হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
মন্তব্য করুন
তিস্তা নদীর পানি বণ্টন নিয়ে ভারতের
সঙ্গে আলোচনার কথা জানিয়েছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক
ড. মুহাম্মদ ইউনূস। দীর্ঘদিন ধরে অমীমাংসিত বিষয়টি ঝুলে থাকার কারণে এতে কোনো দেশেরই
লাভ হচ্ছে না বলে জানান তিনি। (খবর এনডিটিভির)
ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম পিটিআইকে দেয়া
এক সাক্ষাতকারে এ কথা বলেন ড. ইউনূস। ঢাকায় তার সরকারি বাসভবনে এ সাক্ষাৎকার দেন তিনি।
ড. ইউনূস বলেন, আমি যদি জানি, আমি কতটুকু পানি পাব, সেটা ভালো হতো। এমনকি পানির পরিমাণ
নিয়ে যদি আমি খুশি নাও হই, তাতেও কোনো সমস্যা নেই। এই বিষয়টি সমাধান হতেই হবে। কারণ
পানি বণ্টনের বিষয়টি নিয়ে বসে থাকার ফলে এতে কোনো কাজ হচ্ছে না।
তিস্তার পানি বণ্টন নিয়ে অন্তর্বর্তী
সরকার ভারতকে চাপ দেবে কিনা- পিটিআইয়ের এমন প্রশ্নে ড. ইউনূস বলেন, চাপ শব্দটি অনেক
বড়। আমি এই কথা বলছি না। আমরা আলোচনা করব। তবে আমাদের একসঙ্গে বসে সমস্যার সমাধান করতে
হবে।
২০১১ সালে ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী
মনমোহন সিংয়ের ঢাকা সফরকালে তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তি স্বাক্ষর অনেকটা চূড়ান্ত হয়ে
গিয়েছিল। তবে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী এই চুক্তিকে অনুমোদন দিতে অস্বীকৃতি জানানোর
ফলে চুক্তি আর হয়নি। তখন মমতা দাবি করেছিলেন, তার রাজ্যেই পানির সংকট রয়েছে।
প্রধান
উপদেষ্টা আরও বলেন, তিস্তার পানি বণ্টন নতুন কোনো ইস্যু নয়, এটি অনেক পুরাতন ইস্যু।
বিষয়টি নিয়ে আমরা একাধিকবার কথা বলেছি। এমনকি পাকিস্তান পিরিয়ডেও কথা হয়েছে। আমরা সবাই
চেয়েছি এটির সমাধান করতে, এমনকি ভারত সরকারও এর জন্য প্রস্তুত ছিল। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের
সরকার এর জন্য প্রস্তুত ছিল না। আমরা চাই এর সমাধান করতে। ভাটির দেশ হিসেবে আমাদের
পানি পাওয়ার অধিকার রয়েছে।
মন্তব্য করুন
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, জুলাই-আগস্ট বিপ্লবের মাধ্যমে ছাত্র-শিক্ষক সমাজ আবার তাঁদের চিন্তার স্বাধীনতা ও মুক্তবুদ্ধির চর্চা ফিরে পেয়েছেন। এর সঙ্গে এখন যোগ করতে হবে বিশ্ব-বিজ্ঞানে অবদান রাখার সক্ষমতা। আকাক্সক্ষাকে উচ্চে রেখে দৈনন্দিন পঠন-পাঠন গবেষণার মাধ্যমেই সেটি অর্জিত হবে।
আজ বৃহস্পতিবার
(৭ নভেম্বর) ঢাকায় ‘বোস-আইনস্টাইন পরিসংখ্যানের শতবর্ষ উদযাপন : ঢাকার উত্তরাধিকার’ শীর্ষক সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য প্রদানকালে এ কথা বলেন
তিনি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিদ্যা বিভাগ এবং সেন্টার ফর অ্যাডভান্সড স্টাডি অ্যান্ড রিসার্চ ইন ন্যাচারাল সায়েন্সেস, ঢাবি যৌথভাবে দুই দিনব্যাপী এ উৎসবের আয়োজন করেছে।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, আমাদের অন্তর্বর্তী সরকার বিপ্লবের ফসল। তাই আমরা বিশ্ব-বিজ্ঞানে অবদান রাখতে প্রয়োজনীয় সব সংস্কার এবং উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টির সকল প্রয়াস নিতে প্রস্তুত রয়েছি। এই কাজে নিবেদিত সবার কাছ থেকে চাহিদা, পরামর্শ আসতে হবে। নিজের ওপর আস্থা থাকলে এটি আমরা পারবো- যেমন আস্থা সত্যেন্দ্রনাথ বসুর ছিল বলে তিনি সম্পূর্ণ অপরিচিত হয়েও আইনস্টাইনকে লিখতে পেরেছিলেন। ১৯২৪ সালে সত্যেন্দ্রনাথ বসুর আবিষ্কারের পরিবেশ যেভাবে গড়ে ওঠেছিলো, আজও সেভাবেই গড়ে উঠবে। এর কোন বিকল্প নেই। আমাদের তরুণদের মনে বিশ্বাস সৃষ্টি করতে হবে যে আমরাই বিশ্ব। আজ আমরা সেই আকাঙ্খারই শতবার্ষিকী পালন করছি। বিজ্ঞানী সত্যেন্দ্রনাথ বসুকে বাংলাদেশের ইতিহাসের উজ্জ্বলতম নক্ষত্র উল্লেখ করে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, আজ আমরা আমাদের দেশের এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসের একজন উজ্জ্বলতম তারকার মহত্তম অবদানের শতবার্ষিকী উদযাপন করতে এসেছি। যিনি ১৯২৪ সালের এমন একটি সময়ে তাঁর আবিষ্কার বোস-আইনস্টাইন কোয়ান্টাম স্ট্যাটিসটিক্সের জন্য বিজ্ঞান ইতিহাসের অংশ হয়ে গিয়েছিলেন। আর তিনি এটি করেছিলেন আমাদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন নবীন অধ্যাপক হিসেবে কার্জন হলের একটি কামরায় বসে, আজো যেটি পদার্থবিদ্যার ছাত্র-শিক্ষকদের প্রাণচাঞ্চল্যে মুখরিত। তাঁর আবিষ্কারের গুরুত্বের কারণে পৃথিবীর নানা দেশের পদার্থবিদগণ এই শতবার্ষিকী উদযাপন করছেন। কিন্তু আমাদের জন্য এই আবিষ্কারের মর্মটাই আলাদা। পদার্থবিদরা বলেন, বিংশ শতাব্দীর ওই পর্যায়ে পদার্থবিদ্যায় যে বৈপ্লবিক পরিবর্তন এসেছিলো কোয়ান্টাম থিওরির মাধ্যমে, এটি ছিল তার মধ্যে একটি বড় সংযোজন। এর মাধ্যমে বসু বিশ্ব-বিজ্ঞানের মানচিত্রে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়, আমাদের ঢাকা নগরীকে উজ্জ্বলভাবে চিহ্নিত করে দিয়েছিলেন। আজ আমরা যখন ছাত্র-জনতার একটি সর্বাত্মক বিপ্লবের মাধ্যমে দেশকে নতুন ভাবে গড়ার প্রয়াস নিয়েছি, বিশ্ববিদ্যালয়কে তার যথাযথ চর্চার জায়গায় পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করতে চাচ্ছি, তখন পরিবর্তনের দিগদর্শিকা হিসেবে উদযাপনের জন্য বসুর আবিষ্কারের এই শতবার্ষিকীর থেকে যথাযথ বিষয় আর কী হতে পারে? আমাদের বিপ্লবের নায়ক ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য প্রেরণা হিসেবেও বা এর থেকে বড় গৌরবের স্মরণও আর কী হতে পারে? ১৯২৪ সাল অনেক পেছনে রেখে এসেছি। কালের পরিক্রমায় বসুর আবিষ্কারটি কি এতটুকু ম্লান হয়েছে? পদার্থবিদরা বলছেন মোটেই না। যার প্রমাণ এই আবিষ্কারের ভবিষ্যদ্বাণীকে সত্য প্রমাণ করে সৃষ্ট বোস-আইনস্টাইন কনডেনসেট পদার্থবিদ্যায় নোবেল পুরস্কারে ভূষিত হয়েছে ২০০১ সালে। এ নিয়ে গবেষণা চলছেই।
তিনি উল্লেখ করেন, সারা দুনিয়ার পদার্থবিদ্যার ছাত্ররা জানে যাবতীয় পদার্থ-শক্তি সব কিছুর একেবারে মূলে যে মৌলিক কণিকাগুলো এদের শ্রেণী বিভাজনে একটি বড় ভূমিকা রেখেছে বসুর থিওরির দ্বারা ঠিক করে দেয়া নির্দেশিকা।
প্রধান উপদেষ্টা
আরও বলেন, সত্যেন্দ্রনাথ বসু শিক্ষার সর্বস্তরে, বিশেষ করে উচ্চতর বিজ্ঞান শিক্ষায় বাংলা ভাষা প্রচলনের জন্য তর্ক বিতর্ক করছেন, বাংলায় বই লিখছেন, পত্রিকা বের করছেন, নিজের পাঠদানে বাংলা ব্যবহার করছেন। শহরের সাহিত্যানুরাগী সংস্কৃতিসেবীদের কয়েকজনকে নিয়ে নিয়মিত বৈঠকি আড্ডা গড়ে তুলেছেন। পঞ্চাশের দশকের শেষের দিকে আমি যখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র তখনকার ঢাকার সঙ্গে বসুর ঢাকারই মিল বেশি ছিল। কাজেই পরিবেশটি বেশ কল্পনা করতে পারি, ঢাকার এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের। সেই শান্ত ছোট শহরকে, সেই সবুজ রমনাকে আর ফেরত আনা যাবে না, কিন্তু সেই গৌরবের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে আমরা অবশ্যই ফেরত আনতে পারি, আজকের স্বাধীন বাংলাদেশে। বোস- আইনস্টাইন তত্ত্বের শতবার্ষিকীতে একথা আমরা জোর দিয়ে বলতে চাই।
মন্তব্য করুন
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে ইংরেজি নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।
আজ সোমবার (২৭ জানুয়ারি) প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানান, ইংরেজি নববর্ষ ২০২৫ উপলক্ষে নরেন্দ্র মোদি প্রধান উপদেষ্টাকে শুভেচ্ছা কার্ড পাঠিয়েছেন। তিনি সেখানে লিখেছেন ‘নববর্ষের শুভেচ্ছা’।
মন্তব্য করুন
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ এর অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান
উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস আজ (৬ অক্টোবর ২০২৪) সেনাবাহিনী সদর দপ্তরে প্রধান
অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে 'সেনাসদর নির্বাচনী পর্ষদ-২০২৪' এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন
করেন।
১ম পর্বের এই পদোন্নতি পর্ষদে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কর্নেল ও
লেফটেন্যান্ট কর্নেল পদবির যোগ্য কর্মকর্তাগণ পরবর্তী পদোন্নতির জন্য বিবেচিত
হবেন।
পদোন্নতি পর্ষদের মূল্যবান বক্তব্যে প্রধান উপদেষ্টা
ছাত্র-জনতার বিপ্লবে সিক্ত নতুন বাংলাদেশে সকলকে স্বাগত জানান। এসময় তিনি গভীর
শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন জুলাই-আগস্ট মাসে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত সকলের
প্রতি।
তিনি আরও স্মরণ করেন মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী
সশস্ত্র বাহিনী তথা সেনাবাহিনীর শহিদসহ সকল বীর সেনানীদের যাঁদের আত্মত্যাগ জাতি
চিরদিন শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করবে।
প্রধান উপদেষ্টা পদোন্নতির জন্য অফিসারদের পেশাগত দক্ষতা,
নেতৃত্বের গুণাবলী, শৃঙ্খলার মান, সততা, বিশ্বস্ততা ও আনুগত্য এবং সর্বোপরি
নিযুক্তিগত উপযুক্ততার উপর গুরুত্বারোপ করতে নির্বাচনী পর্ষদের সদস্যদের নির্দেশনা
প্রদান করেন। এছাড়াও সৎ, নীতিবান এবং নেতৃত্বের অন্যান্য গুণাবলী সম্পন্ন
অফিসারগণই উচ্চতর পদোন্নতির দাবিদার বলে তিনি মন্তব্য করেন। তাছাড়া রাজনৈতিক
মতাদর্শের উর্দ্ধে থেকে যে সমস্ত অফিসার সামরিক জীবনের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে যোগ্য
নেতৃত্ব প্রদানে সফল হয়েছেন সেই সকল অফিসারদেরকে পদোন্নতির জন্য নির্বাচন করার
নির্দেশনা প্রদান করেন।
তিনি বলেন, দেশের ক্রান্তিলগ্নে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী দেশের
মানুষের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে এবং একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের প্রক্রিয়াকে
ত্বরান্বিত করে দেশকে এক অস্থিতিশীল পরিস্থিতির হাত থেকে রক্ষা করেছে। ফলশ্রুতিতে
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী আবারও দেশের মানুষের কাছে আস্থার প্রতীক হিসেবে স্বীকৃতি লাভ
করেছে বলে তিনি তাঁর মূল্যবান বক্তব্যে উল্লেখ করেন।
অনুষ্ঠানস্থলে পৌঁছালে প্রধান উপদেষ্টাকে স্বাগত জানান সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান, ওএসপি, এসজিপি, পিএসসি; প্রধান উপদেষ্টার প্রতিরক্ষা ও জাতীয় সংহতি উন্নয়ন বিষয়ক বিশেষ সহকারি, চীফ অব জেনারেল স্টাফ এবং সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার। শত কর্মব্যস্ততার মাঝেও উপস্থিত হয়ে নির্বাচনী পর্ষদ উদ্বোধন করায় সেনাবাহিনী প্রধান প্রধান উপদেষ্টার প্রতি কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। সেনাসদর নির্বাচনী পর্ষদের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের পাশাপাশি প্রতিরক্ষা সচিব উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠান শেষে প্রধান উপদেষ্টা সেনাবাহিনীর উপস্থিত কর্মকর্তাগণের সাথে ফটোসেশনে অংশগ্রহণ করেন এবং পরিদর্শন বইয়ে মন্তব্য লিপিবদ্ধ করেন।
মন্তব্য করুন