প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ
ইউনূস বাংলাদেশে আরো মার্কিন বিনিয়োগকে আমন্ত্রণ জানিয়ে বলেছেন, তার সরকার বিদেশি বিনিয়োগ
আকর্ষণ এবং দেশের ব্যবসায় পরিবেশ উন্নয়নে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।
আজ মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) ঢাকায় তিনি
একটি মার্কিন ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদলকে বলেন, ‘আপনারা সঠিক সময়ে এদেশে এসেছেন।’
এক্সিলারেট এনার্জির প্রধান নির্বাহী
কর্মকর্তা (সিইও) এবং ইউএস-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যান স্টিভেন কোবোসের
নেতৃত্বে মার্কিন ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদল আজ রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা
অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
অন্তর্বর্তী সরকারের নেতৃত্ব গ্রহণ
করায় প্রধান উপদেষ্টার প্রশংসা করে স্টিভেন কোবোস বলেন, এটি বাংলাদেশে ব্যবসায় আস্থা
বাড়াবে।
তিনি বলেন, ‘আপনার দায়িত্ব গ্রহণের
পর থেকে আমেরিকান কোম্পানিগুলোর বাংলাদেশে আগ্রহ অনেক বেড়েছে।’
কোবোস আরো জানান, ইউএস-বাংলাদেশ বিজনেস
কাউন্সিলের সদস্যসহ শীর্ষস্থানীয় মার্কিন কোম্পানিগুলো দক্ষিণ এশিয়ার এই দেশে ব্যবসার
সম্ভাবনা নিয়ে অনেক আগ্রহী।
এক্সিলারেট এনার্জির সিইও কোবোস বলেন,
তার কোম্পানি বাংলাদেশের জ্বালানি খাতে এবং কার্বন নিঃসরণ হ্রাসে আরো বিনিয়োগের পরিকল্পনা
করছে।
তিনি বলেন, কোম্পানিটি দেশে তরলীকৃত
প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) সরবরাহ বৃদ্ধি করতে চায়। বর্তমানে এক্সিলারেট বাংলাদেশের
দুটি অফশোর ফ্লোটিং স্টোরেজ এবং রিগ্যাসিফিকেশন ইউনিটে (এফএসআরইউ) বিনিয়োগ করেছে, যা
প্রতিদিন ১.১ বিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করে। দেশের দৈনিক গ্যাস সরবরাহের প্রায় ৩৪
শতাংশ এখান থেকে আসে।
সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সফরের
সময় প্রধান উপদেষ্টা ইউএস-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিলের একটি অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।
সেখানে এ সংগঠনের ৫০ জন সদস্য উপস্থিত ছিলেন, যার মধ্যে কিছু শীর্ষস্থানীয় আমেরিকান
বহুজাতিক কোম্পানিও ছিল। ড. ইউনূস উপস্থিত মার্কিন ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের
আমন্ত্রণ জানান।
সাক্ষাৎকালে স্টিভেন কোবোসের সঙ্গে
প্রতিনিধিদলে ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক রাষ্ট্রদূত পিটার হাসসহ এক্সিলারেট এনার্জির
উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা ছিলেন। পিটার সম্প্রতি এক্সিলারেট এনার্জিতে স্ট্র্যাটেজিক অ্যাডভাইজার
হিসেবে যোগদান করেছেন। এছাড়া প্রতিনিধিদলে কোম্পানিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট ডেরেক ওয়ং
ও র্যামন ওয়াংডি এবং বাংলাদেশের আবাসিক ব্যবস্থাপক হাবিব ভূঁইয়া উপস্থিত ছিলেন।
সাক্ষাৎকালে প্রধান উপদেষ্টার এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ, বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী ও জ্বালানি সচিব সাইফুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য করুন
মানিকগঞ্জ সদরে ফ্ল্যাট বাসা থেকে মা ও দুই শিশু সন্তানের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সদর পৌরসভার পশ্চিম বান্দুটিয়া এলাকার ভাড়া বাসা থেকে তাদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
সদর থানার ওসি এস এম আমান উল্লাহ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
নিহতরা হলেন- মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলার আন্ধারমানিক গ্রামের শাহিন আহমেদের স্ত্রী শিখা আক্তার ও তাদের মেয়ে সাইফা আক্তার (২) এবং আরাফাত ইসলাম আলভি (৮)। প্রবাসী শাহিনের দ্বিতীয় স্ত্রী ছিলেন শিখা। তার প্রথম ঘরের ছেলে ছিল আলভি।
শাহিনের মামা আমান আনসারী জানান , শাহিনের প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে ডিভোর্সের পরে দ্বিতীয় বিয়ে করেন শিখা আক্তারকে। তাদের সংসার জীবন প্রায় ৫ বছর। এ সংসারে তাদের কন্যা সন্তান সাইফা আক্তার। দেশে থাকা অবস্থায় শাহিন ইজিবাইক চালাত। মালয়েশিয়া যাওয়ার আগে তার স্ত্রী-সন্তানকে ভাড়া বাসায় রেখে যান। এ বাসায় শিখার আগের ঘরের ছেলে আলভিও থাকত।
বাসার পাশের ইউনিটের ভাড়াটিয়া আলমগীর হোসেন জানান , মাস দেড়েক হয় ফ্ল্যাটটি তারা ভাড়া নিয়েছেন। একবারই তার স্বামীকে দেখেছিলাম। আজ বিদ্যুৎ বিলের টাকা চাওয়ার জন্য সকালে তাদের দরজায় নক করি। তাতে কোনো সারা শব্দ পাওয়া যায়নি। পরে কয়েক দফায় দরজায় নক করলেও সাড়া না পেয়ে বাড়িওয়ালাকে বিষয়টি অবগত করি। তিনি এসেও সাড়াশব্দ না পেয়ে ৯৯৯ ফোন করেন।
সদর থানার ওসি এস এম আমান উল্লাহ বলেন, ফ্ল্যাটের ভেতরে ঢুকার জন্য কোনো উপায় না পেয়ে দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করি। রুমের মধ্যে দেখতে পাই শিশু দুজনের নিথর দেহ ফ্লোরে পড়ে রয়েছে। আর তাদের মায়ের মরদেহ খাটের উপরে রয়েছে।
মানিকগঞ্জ পুলিশ সুপার ইয়াসমিন খাতুন বলেন, বন্ধ ফ্ল্যাট থেকে মাসহ তার দুই শিশু সন্তানের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ঘটনাস্থলে বিষের বোতল পাওয়া গেছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, দাম্পত্য কলহের জেরে মা তার দুই শিশু সন্তানকে বিষ খাইয়ে হত্যা করে নিজেও আত্মহত্যা করেছেন।
তিনি আরও বলেন, আমরা ময়নাতদন্তের জন্য তাদের মরদেহ ৩টি উদ্ধার করে মানিকগঞ্জ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে।
মন্তব্য করুন
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ
ইউনূস ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি ভিপি নুরুল
হক নুরের চিকিৎসার খোঁজখবর নিয়েছেন।
তিনি ফোনে চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলে
নুরের শারীরিক অবস্থার খোঁজ নেন এবং প্রয়োজনীয় সব ধরনের চিকিৎসা সহায়তা নিশ্চিত করার
আশ্বাস দেন।
প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের একজন জ্যেষ্ঠ
কর্মকর্তা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
প্রধান উপদেষ্টা নুরুল হক নুরুর দ্রুত
আরোগ্য কামনা করেন এবং তার পরিবারকে সাহস রাখার পরামর্শ দেন।
মন্তব্য করুন
উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে যোগ দিতে প্রথমবার সচিবালয়ে এসেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
বুধবার (২০ নভেম্বর) বেলা ১১টায় সচিবালয়ে আসেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
ড. ইউনূসকে স্বাগত জানান আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল এবং শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান।
গত ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর থেকে এখন অনুষ্ঠিত পর্যন্ত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকগুলো রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনা এবং তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে হয়েছে। এই প্রথম সচিবালয়ে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
মন্তব্য করুন
রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন এর সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন কুয়েতে বাংলাদেশের
নবনিযুক্ত রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল সৈয়দ তারেক হোসেন ।
বুধবার বঙ্গভবনে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে রাষ্ট্রপতি নবনিযুক্ত রাষ্ট্রদূতকে গুরত্বপূর্ণ কিছু বিষয় নিয়ে
নির্দেশনা প্রদান করেছেন।
রাষ্ট্রপতি কুয়েতে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশীদের সার্বিক কল্যাণের পাশাপাশি নতুন
করে জনশক্তি রপ্তানির বিষয়ে বাংলাদেশের নবনিযুক্ত রাষ্ট্রদূতকে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন।
আজকের এ সৌজন্য সাক্ষাৎ নিয়ে রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব মো. জয়নাল আবেদীন জানান, সাক্ষাৎকালে
কুয়েতে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশীদের সার্বিক কল্যাণের পাশাপাশি নতুন করে জনশক্তি রপ্তানির
বিষয়ে রাষ্ট্রদূতকে কাজ করার নির্দেশ দেন রাষ্ট্রপ্রধান।
রাষ্ট্রপতি আরো বলেন, কুয়েতের সাথে বাংলাদেশের বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির লক্ষ্যে
বিদ্যমান সম্ভাবনাগুলোকেও কাজে লাগাতে হবে।
সাক্ষাৎকালে রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের সচিবগণ উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য করুন
পার্বত্য জেলা পরিষদ প্রশিক্ষণার্থীদের
সঙ্গে ভার্চুয়ালি মতবিনিময় করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
শিক্ষা, প্রযুক্তি ও অর্থনৈতিকভাবে
পার্বত্য অঞ্চলকে এগিয়ে নেয়ার বিষয়ে জোর দিয়ে তিনি বলেন, ‘প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, সম্পদে
পরিপূর্ণ পার্বত্য জেলাগুলো বাংলাদেশের সবচাইতে উন্নত অঞ্চল হতে পারতো, কিন্তু সবচেয়ে
পেছনে পড়ে আছে। এটা হওয়ার কথা না। আপনাদের ফসল, ফল-ফলাদি, ঐতিহ্যবাহী পণ্য দিয়ে অর্থনীতিতে
আপনাদের এগিয়ে যাওয়ার কথা। পার্বত্য এলাকাগুলো দুর্গম, সেজন্য যোগাযোগ করা কঠিন হয়।
আর এ কারণেই সেখানে প্রযুক্তির প্রসার দরকার। প্রযুক্তি দিয়ে এই দূরত্ব জয় করা যাবে।
পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও
সদস্যবৃন্দের জন্য আয়োজিত 'পার্বত্য জেলা পরিষদ ব্যবস্থাপনা' শীর্ষক প্রশিক্ষণ কর্মসূচি
রাজধানীর পার্বত্য চট্টগ্রাম কমপ্লেক্সে অনুষ্ঠিত হয়েছে। অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যোগ
দিয়ে বক্তব্য রাখেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
নারী ফুটবল টিমে পার্বত্য জেলা থেকে
আসা খেলোয়াড়দের সঙ্গে বৈঠকের স্মৃতিচারণ করে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, বাংলাদেশের মেয়েরা ফুটবলে বিশ্বের
অন্যান্য দেশের টিমকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ান হয়েছে। আপনাদের এলাকার মেয়েরা কী দুর্দান্ত
খেলল! কীভাবে বলবেন পিছিয়ে আছে? যারা আপনাদের এলাকা থেকে এসেছে তাদের সাথে আমি কথা
বলেছি। কী কঠিন পরিস্থিতি! কত কষ্ট করে পাহাড় ভেঙে বাড়িতে পৌঁছাতে হয়! বাবা মা ঢাকায়
আসলে কত কষ্ট করে তাদের আসতে হয়। এই প্রতিকূলতার মধ্যেই কিন্তু তারা বিশ্বজয় করে এসেছে।’
পার্বত্য এলাকার তরুণরা যেন বিশ্ব নাগরিক
হয়ে গড়ে ওঠে এ আশাবাদ ব্যক্ত করে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘আপনাদের মেয়েরা ফুটবলে বিশ্বজয়
এনে দিয়েছে। তরুণরা শুধু বাংলাদেশের নাগরিক না, বিশ্ব নাগরিক হতে হবে। দুর্গম এলাকা
বলে পিছিয়ে থাকলে হবে না। সীমাবদ্ধতা থাকবে, কিন্তু মনের সীমারেখাকে বাড়িয়ে দিতে হবে।
সারা দুনিয়ার মানুষের কাছে নিজ কৃতিত্ব দিয়ে পৌঁছে যেতে হবে।’ জানুয়ারিতে তারুণ্যের উৎসবে পার্বত্য
অঞ্চলের তরুণদের অংশ নেওয়ার ব্যাপারে উৎসাহ দেন প্রধান উপদেষ্টা।
তিনি বলেন, আপনাদের শিশুদের, তরুণদের
এ উৎসবে যোগ দিতে উৎসাহ দিন। স্থানীয় খেলা হোক, রচনা প্রতিযোগিতা, গান-নাচ তারা যা
পারে, যা চায় তা নিয়ে যেন অংশ নেয়। এটা সবার উৎসব। উৎসবটি বৈচিত্রময় হোক। সরকারি নির্দেশ
তাই অংশ নেবে এরকম না। তাদেরকে আপনারা উৎসাহ দিন, যেন নিজ থেকেই তারা উদ্যমী হয়ে এ
উৎসবে অংশ নেয়।
পার্বত্য অঞ্চলের শিক্ষা ব্যবস্থার
সংস্কার ও সঠিক পদ্ধতি, প্রশিক্ষণের গুরুত্ব নিয়েও কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। তিনি
আরও বলেন, দেশের শিক্ষাব্যবস্থা এক কঠিন সংকটে আছে। আপনাদের অঞ্চলে এটা আরও বেশি কঠিন।
শিক্ষকদের কষ্ট হয়, ছাত্র-ছাত্রীদের কষ্ট হয়। আপনাদের পড়াশোনার দিকে মনোযোগী হতে হবে।
আমরাও চেষ্টা করব রাষ্ট্রীয় দিক থেকে কীভাবে কী করা যায়। পার্বত্য জেলার তরুণরা দুর্গম
অঞ্চলে আছে বলে বড় শহর থেকে লেখাপড়ায় পিছিয়ে থাকবে সেটা হতে দেওয়া যাবে না। লেখাপড়ায়
তাদেরকে এগিয়ে যেতে হবে।
মন্তব্য করুন
অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার কর্মসূচি বাস্তবায়নে সহায়তা প্রদানের লক্ষ্যে বিশ্বব্যাংক চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশের জন্য ঋণ সহায়তা বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছেন।
মঙ্গলবার (১৮ সেপ্টেম্বর) ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর আবদৌলায়ে সেক। এসময় বিশ্বব্যাংকের আবাসিক প্রধান বলেন, চলতি অর্থবছরে তার সংস্থা বাংলাদেশের জন্য দুইশ’ কোটি মার্কিন ডলারের নতুন অর্থায়ন করতে পারবে। এই অর্থ অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার কর্মসূচি বাস্তবায়ন, বন্যা মোকাবিলা, দূষণ নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে বায়ুর মান বৃদ্ধি এবং স্বাস্থ্যসেবার উন্নয়নে সহায়তা করা হবে।
জরুরিভাবে আর্থিক সহায়তার প্রয়োজন রয়েছে এমন ক্ষেত্রে সহায়তা করা হবে উল্লেখ করে আবদৌলায়ে সেক বলেন, আমরা যত দ্রুত সম্ভব এবং যতটা সম্ভব আপনাদের সহায়তা করতে চাই।
বৈঠকে নতুন ঋণ সহায়তার প্রতিশ্রুতির পাশাপাশি প্রধান উপদেষ্টার অনুরোধের প্রেক্ষিতে সংস্থাটি সরকারের চলমান বিদ্যমান প্রকল্পে প্রায় একশ’ কোটি ডলারের অতিরিক্ত একশ’ কোটি ডলারের তহবিল পুনর্বিন্যাসের কথা উল্লেখ করা হয়।
বিশ্বব্যাংকের আবাসিক প্রধান জানান, অতিরিক্ত ঋণ প্রদানের মাধ্যমে বিশ্বব্যাংক এবারের অর্থবছরে বাংলাদেশকে সহজশর্তে ঋণ এবং মঞ্জুরি মিলিয়ে প্রায় তিনশ’কোটি মার্কিন ডলার প্রদান করবে, যার মাধ্যমে বিদ্যমান প্রকল্পসমূহের তহবিল পুনর্বিন্যাসও করা হবে।
সংস্কার কর্মসূচি বাস্তবায়ন বাংলাদেশের তরুণ সম্প্রদায় এবং দেশটির জন্য ‘মহৎ কাজ’হবে উল্লেখ করে বিশ্বব্যাংকের আবাসিক প্রধান বলেন, প্রতিবছর যে ২০ লাখ মানুষ শ্রমবাজারে প্রবেশ করছে, তারাও এর সুফল পাবে।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরক্টেরকে উদ্দেশে করে বলেন, ১৫ বছরের অপশাসন থেকে ঘুরে দাঁড়াতে আমরা যে নতুন যাত্রার সূচনা করেছি তাকে এগিয়ে নিতে এবং সংস্কার কর্মসূচি বাস্তবায়নকে কেন্দ্র করে বিশ্বব্যাংকের ঋণ তহবিলসমূহের শর্তাবলী নমনীয় হতে হবে। আমাদের ধ্বংসাবশেষ থেকে নতুন কাঠামো তৈরি করতে হচ্ছে। আমাদের এখন বড় ধাক্কা দেওয়ার প্রয়োজন এবং ছাত্রদের যে স্বপ্ন রয়েছে তা পূরণে মনোযোগ দিতে হবে।
প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস বলেন,
আমি আপনাদের বলবো- আমাদের সাহায্য করুন। আমাদের টিমের অংশীদার হোন। গত ১৫ বছরে শেখ
হাসিনার শাসন আমলে দুর্নীতিবাজরা অর্থ আত্মসাৎ করে বিদেশে কয়েক বিলিয়ন ডলার পাচার করেছে। পাচার হওয়া এসব অর্থ ফিরিয়ে আনতে তিনি বিশ্বব্যাংককে কারিগরি সহায়তা প্রদানের আহ্বান জানান।
বিশ্বব্যাংকের আবাসিক প্রধান বিদেশে পাচার হওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে সহায়তা করতে সম্মত হন। তিনি বলেন, আমরা আপনাদের সাহায্য করতে পেরে খুশি হবো। বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশকে পরিসংখ্যানগত তথ্যের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা তৈরি, কর আহরণে অটোমেশন চালু এবং আর্থিক খাত সংস্কারে সহায়তা করতে চায়। বাংলাদেশ তার প্রতিষ্ঠানগুলো মেরামত এবং মোটা দাগের সংস্কার করার এই সুযোগ হাতছাড়া করতে চায় না। একবার এ সুযোগ হারালে কখনো তা আর ফিরে আসবে না।
আবদৌলায়ে সেক জুলাই-আগস্টে ছাত্র আন্দোলনের শহিদদের প্রতি সমবেদনা জানান। তিনি ঢাকার দেয়ালে তরুণদের আঁকা বর্ণিল গ্রাফিতি ও ম্যুরাল দেখে মুগ্ধ হয়েছেন উল্লেখ করে বলেছেন, ৩০ বছরের চাকরি জীবনে অন্য কোথাও এমন দেখিনি।
মন্তব্য করুন
প্রধান
উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রিটিশ
হাইকমিশনার সারাহ কুক।
আজ
বুধবার (৪ মে) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় গিয়ে তিনি সাক্ষাৎ করেছেন। সাক্ষাৎকালে
হাইকমিশনার কুক সম্মানজনক কিং চার্লস হারমনি পুরস্কার প্রাপ্তির জন্য অধ্যাপক ড. ইউনূসকে
অভিনন্দন জানান।
পুরস্কারের
কথা উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এটি একটি মহান সম্মানের বিষয়।
অধ্যাপক
ড. ইউনূস ৯ জুন ঢাকা ত্যাগ করবেন এবং ১৩ জুন ফিরে আসবেন। সফরকালে প্রধান উপদেষ্টা ঊর্ধ্বতন
ব্রিটিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
প্রধান
উপদেষ্টা ও ব্রিটিশ হাইকমিশনারের মধ্যে অনুষ্ঠিত বৈঠকে দ্বিপাক্ষিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট
বিভিন্ন বিষয়, যেমন বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, বিমান চলাচল সংক্রান্ত সহযোগিতা, অভিবাসন এবং
অন্তর্বর্তী সরকারের সম্পদ পুনরুদ্ধার প্রচেষ্টা নিয়ে আলোচনা হয়।
এছাড়াও
অন্তর্বর্তী সরকারের গৃহীত সংস্কারমূলক উদ্যোগ ও বাংলাদেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি
নিয়েও আলোচনা হয়েছে।
প্রধান
উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস হাইকমিশনারকে জানান, জাতীয় ঐকমত্য গঠনে গঠিত কমিশন এবং
রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে দ্বিতীয় দফার আলোচনা এ সপ্তাহে শুরু হয়েছে এবং শিগগির তা শেষ
হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
অধ্যাপক
ড. ইউনূস বাংলাদেশের সামুদ্রিক গবেষণা কার্যক্রম আরও উন্নত করতে যুক্তরাজ্যের কারিগরি
সহায়তা এবং ব্রিটিশ গবেষকদের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ গ্রহণে আগ্রহ প্রকাশ করেন।
সাক্ষাতে
উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী, এসডিজি সমন্বয়কারী লামিয়া
মোরশেদ এবং ব্রিটিশ উপহাইকমিশনার জেমস গোল্ডম্যান।
মন্তব্য করুন
চাকরি স্থায়ীকরণের দাবিতে সচিবালয় অবরুদ্ধ করে ভাঙচুর ও হামলার মামলায় রাজধানীর পৃথক চার থানার মামলায় গ্রেপ্তার ৩৯০ জন আনসারকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।
সোমবার (২৬ আগস্ট) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. মোশাররফ হোসেনের আদালত শুনানি শেষে এ আদেশ দেন।
৩৯০ জন এর মধ্যে রমনা, শাহবাগ, পল্টন ও বিমানবন্দর থানার পৃথক চার মামলায় তাদের কারাগারে আটক রাখার আবেদন করা হয়।
আদালতের সাধারণ নিবন্ধন শাখা সূত্রে জানা গেছে, শাহবাগ থানার মামলায় গ্রেপ্তার ১৯১ জন, রমনা থানায় ৯৮ জন, পল্টন থানায় ৯৫ জন ও বিমানবন্দর থানার মামলায় ৬ আনসার সদস্যকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে আনা হয়। এ চার থানার মামলায় অন্তত ৪২৬ জনের নাম উল্লেখ করে আসামি করা হয়। এছাড়াও অন্তত দশ হাজার অজ্ঞাতপরিচয় আনসার সদস্যকে আসামি করা হয়েছে।
এসব মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, ২৫ আগস্ট রাত ৯টার দিকে সচিবালয়ের সামনে সাধারণ আনসার ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। এসময় কিছু আনসার সদস্যরা পল্টন মডেল থানাধীন জিরো পয়েন্ট এলাকায় চাকরি জাতীয়করণসহ বিভিন্ন দাবিতে রাজপথ অবরোধ করে রাখে। এসময় পুলিশ তাদের ঘটনাস্থল থেকে চলে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করে। তারা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুরোধ অমান্য করে রাস্তা অবরোধের মাধ্যমে যান চলাচলের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে।
এদিকে
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাসহ অন্যান্য উপদেষ্টারা তাদের দাবি-দাওয়ার
প্রতি পূর্ণ সমর্থন দিয়ে দ্রুত বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সাধারণ আনসারদের পক্ষে কয়েকজন প্রতিনিধির
সঙ্গে তাৎক্ষণিক বৈঠক করেন এবং আংশিক দাবি পূরণ করেন। এছাড়াও অন্যান্য যৌক্তিক দাবিগুলো
একটি কমিটি গঠন করে দ্রুততম সময়ের মধ্যে বাস্তবায়নে আশ্বাস দেন।
মন্তব্য করুন
আজ (৫ ফেব্রুয়ারি) অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন দুই সংস্কার কমিশনের প্রধান।
কমিশনগুলো হলো: জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন ও বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন।
দুপুরে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় বিচারবিভাগ সংস্কার কমিশনের প্রধান শাহ আবু নাঈম মমিনুর রহমান ও জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধান আব্দুল মুয়ীদ চৌধুরী প্রতিবেদন হস্তান্তর করেন।
গতকাল (মঙ্গলবার) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধান আব্দুল মুয়ীদ চৌধুরী জানিয়েছিলেন, আমাদের রিপোর্ট জমা দেওয়ার কথা ছিল গত মাসে। কিন্তু আমরা আমাদের কাজের কারণে পারিনি। কারণ আমরা মাঠে গিয়েছি, লোকজনের সঙ্গে কথা বলেছি। বিভিন্ন জেলা-উপজেলায় গিয়ে আমরা কথা বলেছি, অনলাইনে আমরা মতামত নিয়েছি। প্রতিবেদনে ১০০টির বেশি সুপারিশ থাকছে।
গত ৩ অক্টোবর ৮ সদস্যের জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন গঠন করে সরকার। পরে কমিশনের সদস্য সংখ্যা আরও তিনজন বাড়ানো হয়। ৩ মাসের মধ্যে প্রস্তুত করা প্রতিবেদন হস্তান্তর করতে বলা হয়। এরপর তিন দফা বাড়িয়ে কমিশনের মেয়াদ ১৫ ফেব্রুয়ারি নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু কাজ শেষ হয়ে যাওয়ায় বেঁধে দেওয়া বর্ধিত সময়ের ১০ দিন আগেই প্রতিবেদনটি জমা দেওয়া হলো। আর বিচার বিভাগকে স্বাধীন, নিরপেক্ষ ও কার্যকর করতে প্রয়োজনীয় সংস্কার প্রস্তাব করার লক্ষ্যে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার অনুমোদনক্রমে বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন গঠন করা হয় ৩ অক্টোবর।
মন্তব্য করুন
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নিয়েছেন শান্তিতে নোবেলজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন তাকে শপথ পাঠ করান।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) বঙ্গবনের দরবার হলে প্রায় ৪০০ অতিথির উপস্থিতিতে শপথ নেন তিনি।
ড. ইউনূসের পর শপথ নেন ১৩ উপদেষ্টা। তারা হলেন- ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ, ড. আসিফ নজরুল, আদিলুর রহমান খান, হাসান আরিফ, তৌহিদ হোসেন, সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, মো. নাহিদ ইসলাম (ছাত্র প্রতিনিধি), আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া (ছাত্র প্রতিনিধি), ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন, ফরিদা আখতার, ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন, নুরজাহান বেগম এবং শারমিন মুরশিদ।
এদিকে ঢাকার বাইরে থাকায় উপদেষ্টার শপথ নেননি তিনজন। তারা হলেন- বিধান রঞ্জন রায় (চিকিৎসক), ফারুক-ই-আজম (বীর প্রতীক) ও সুপ্রদীপ চাকমা (পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান ও সাবেক রাষ্ট্রদূত)।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে ড. ইউনূসসহ উপদেষ্টা পরিষদে যারা রয়েছেন তাদের দায়িত্ব ও পরিচয় প্রতিবেদনে তুলে ধরা হলো:
১.
ড.
মুহাম্মদ
ইউনূস
ছিলেন শিক্ষকতা পেশায়। সেখান থেকে ব্যাংক প্রতিষ্ঠা। পরে ওই ব্যাংককে সাথে নিয়ে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার অর্জন করেছিলেন অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। সেই থেকে বাংলাদেশ ছাড়িয়ে বিশ্বেও সুনাম কুড়িয়েছিলেন অধ্যাপক ইউনূস।
২. সালেহউদ্দিন আহমেদ
ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ ছিলেন বাংলাদেশের একজন বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ এবং বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক বাংলাদেশ ব্যাংকের নবম গভর্নর। ড. ফখরুদ্দীন আহমদ দায়িত্ব ত্যাগের পর তিনি ২০০৫ সালের ১ মে গভর্নর হিসেবে দায়িত্ব লাভ করেন এবং ২০০৯ সালের ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত এই পদে অধিষ্ঠিত থাকেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া
জেলার নবীনগর উপজেলার শ্রীরামপুর (দরিশ্রীরামপুর) গ্রামে তার জন্ম। তিনি ঢাকা কলেজিয়েট স্কুল থেকে ১৯৬৩ সালে এবং ঢাকা কলেজ থেকে ১৯৬৫ সালে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে যথাক্রমে এসএসসি ও এইচএসসি পাস করেন। ১৯৬৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে বিএ অনার্স পাস করেন এবং ১৯৬৯ সালে একই বিষয়ে এমএ পাস করেন। ১৯৭০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতির লেকচারার হিসেবে যোগ দেন। তৎকালীন পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় প্রশাসনে সিভিল সার্ভিস অব পাকিস্তান (সিএসপি) ক্যাডারে যোগ দেন। ১৯৭৮ সালে কানাডার হ্যামিল্টন শহরে অবস্থিত ম্যাকমাস্টার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন।
৩. ড. আসিফ নজরুল
আসিফ নজরুলের জন্ম ১২ জানুয়ারি ১৯৬৬। তিনি একাধারে লেখক, ঔপন্যাসিক, রাজনীতি বিশ্লেষক, সংবিধান বিশেষজ্ঞ ও কলামিস্ট। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক।
তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগ থেকে ১৯৮৬ সালে স্নাতক ও ১৯৮৭ সালে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেছেন। ১৯৯৯ সালে সোয়াস (স্কুল অব ওরিয়েন্টাল অ্যান্ড আফ্রিকান স্টাডিজ) ইউনিভার্সিটি অব লন্ডন থেকে তাঁর পিএইচডি সম্পন্ন করেন। পরবর্তী সময় জার্মানির বন শহরের এনভায়রনমেন্টাল ল সেন্টার থেকে তিনি পোস্ট ডক্টরেট ফেলোশিপ অর্জন করেন। তিনি স্কুল অব ওরিয়েন্টাল অ্যান্ড আফ্রিকান স্টাডিজে একজন কমনওয়েলথ ফেলো হিসেবে কাজ করেছেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসেবে যোগদানের পূর্বে ১৯৯১ সালে আসিফ নজরুল একটি বহুল প্রচারিত সাপ্তাহিক পত্রিকা বিচিত্রায় কাজ করতেন। তিনি কিছু সময় বাংলাদেশ সরকারের একজন সরকারি কর্মকর্তা (ম্যাজিস্ট্রেট) হিসেবে কাজ করেছেন।
৪. আদিলুর রহমান খান
আদিলুর রহমান খানের জন্ম ২৩ ডিসেম্বর ১৯৫২। একজন মানবাধিকার কর্মী এবং মানবাধিকার সংস্থা অধিকারের প্রতিষ্ঠাতা। তিনি বাংলাদেশের একজন আইনজীবী এবং সাবেক ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিষয়ে পড়াশোনা করেছেন। আদিলুর রহমান এবং সুশীল সমাজের অন্য সদস্যরা ১০ অক্টোবর, ১৯৯৪ সালে মানবাধিকার সংস্থা অধিকার প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী সরকার কর্তৃক ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নিযুক্ত হয়েছিলেন।
২০১৩ সালে, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ ২০১৩ সালের শাপলা স্কোয়ার বিক্ষোভের সময় নেতাকর্মীদের অপসারণের অভিযানে নিহতের সংখ্যা সম্পর্কে ‘বিভ্রান্তি ছড়ানোর’ জন্য খানের বিরুদ্ধে ঢাকায় একটি মামলা দায়ের করা হয়।
৫. এ এফ হাসান আরিফ
আইনজীবী এ এফ হাসান আরিফ বাংলাদেশের সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এবং ফখরুদ্দীন আহমেদের নেতৃত্বাধীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ছিলেন। তিনি ১৯৪১ সালে কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন। আরিফ সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ কলকাতা থেকে তার মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সম্পন্ন করেন। তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক এবং এলএলবি ডিগ্রি সম্পন্ন করেন।
হাসান আরিফ অক্টোবর ২০০১ থেকে এপ্রিল ২০০৫ পর্যন্ত বাংলাদেশের অ্যাটর্নি জেনারেলের পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন। তিনি জানুয়ারি ২০০৮ থেকে জানুয়ারি ২০০৯ পর্যন্ত বাংলাদেশের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আইন উপদেষ্টা ছিলেন।
৬. তৌহিদ হোসেন
মো. তৌহিদ হোসেনের জন্ম ১ ফেব্রুয়ারি ১৯৫৫ সালে। তিনি একজন সাবেক পররাষ্ট্রসচিব। তিনি দক্ষিণ আফ্রিকায় বাংলাদেশের সাবেক হাইকমিশনার ছিলেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাসে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন। তিনি ১৯৮১ সালে বাংলাদেশ ফরেন সার্ভিসে যোগদান করেন।
৭. সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান
সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের জন্ম ১৫ জানুয়ারি, ১৯৬৮ সালে। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের ‘পরিবেশ পুরস্কার’ এবং প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে ‘গোল্ডম্যান এনভায়রনমেন্টাল প্রাইজ’ প্রাপ্ত এবং ২০০৯ সালে টাইম সাময়িকীর ‘হিরোজ অব এনভায়রনমেন্ট’ খেতাবপ্রাপ্ত বাংলাদেশি আইনজীবী ও পরিবেশকর্মী।
৮. মো. নাহিদ ইসলাম
নাহিদ ইসলাম কোটা সংস্কার আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক। তিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অসহযোগ কর্মসূচিতে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের এক দফা দাবি ঘোষণা করেন। নাহিদের জন্ম ১৯৯৮ সালে ঢাকায়। তার বাবা শিক্ষক। মা গৃহিণী। ছোট এক ভাই রয়েছে তার। তিনি সরকারি বিজ্ঞান কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাস করেন। বর্তমানে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাজবিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা করছেন।
৯. আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া
আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া কোটা সংস্কার আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক। তিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অসহযোগ কর্মসূচিতে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের এক দফা দাবি ঘোষণা করেন।
১০. ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন
এম সাখাওয়াত হোসেনের জন্ম ১ ফেব্রুয়ারি ১৯৪৮ সালে। তিনি একজন সাবেক নির্বাচন কমিশনার (২০০৭-২০১২)। তিনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত)।
১১. সুপ্রদীপ চাকমা
সুপ্রদীপ চাকমা সাবেক রাষ্ট্রদূত ও পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান। সুপ্রদীপ চাকমার জন্ম ১৯৬১ সালে খাগড়াছড়ির কমলছড়িতে। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের ছাত্র ছিলেন। তিনি সপ্তম বিসিএসে সরকারি চাকরিতে যোগ দেন। মেক্সিকো ও ভিয়েতনামে রাষ্ট্রদূত ছিলেন সুপ্রদীপ চাকমা। এ ছাড়া রাবাত, ব্রাসেলস, আঙ্কারা ও কলম্বোতে বাংলাদেশ মিশনেও তিনি বিভিন্ন পদে কাজ করেছেন।
১২. ফরিদা আখতার
ফরিদা আখতার একজন লেখক, গবেষক ও আন্দোলনকর্মী। বেসরকারি সংস্থা উবিনীগের (উন্নয়ন বিকল্পের নীতি নির্ধারণী গবেষণা) নির্বাহী পরিচালক তিনি।
১৩. বিধান রঞ্জন রায়
জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের সাবেক পরিচালক ছিলেন তিনি।
১৪. আ ফ ম খালিদ হাসান
আবুল ফয়েজ মুহাম্মদ খালিদ হোসেন (যিনি ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন নামে সর্বাধিক পরিচিত। তিনি বাংলাদেশি সুন্নি দেওবন্দি ইসলামী পণ্ডিত। তিনি হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের সাবেক নায়েবে আমির, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের শিক্ষা উপদেষ্টা, মাসিক আত তাওহীদের সম্পাদক, বালাগুশ শরকের সহকারী সম্পাদক এবং আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রামের কুরআনিক সায়েন্সেস অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের অতিথি শিক্ষক।
১৫. নুরজাহান বেগম
তিনি গ্রামীণ ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক।
১৬. শারমিন মুরশিদ
ব্রতী প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শারমিন মুরশিদ।
১৭. ফারুক-ই-আজম
তিনি মহান মুক্তিযুদ্ধের একমাত্র সমন্বিত যুদ্ধাভিযান ‘অপারেশন জ্যাকপট’। চট্টগ্রাম বন্দরে আক্রমণের জন্য গঠিত ওই অভিযানিক দলের উপ-অধিনায়ক ছিলেন তিনি। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে অনেক বাধাবিপত্তি পেরিয়ে তিনি চট্টগ্রামে পৌঁছান। ৬ মে তিনি সীমান্ত পাড়ি দিয়ে ভারতের হরিণা ইয়ুথ ক্যাম্পে আশ্রয় নেন। এই অবস্থায় তিনি একদিন শুনলেন, নৌবাহিনীর জন্য মুক্তিযোদ্ধা রিক্রুট করা হবে। তিনি লাইনে দাঁড়ালেন। টিকে গেলেন। পলাশীতে দুই মাসের প্রশিক্ষণ শেষে ১ আগস্ট অপারেশনের জন্য তাঁকে মনোনীত করা হয়।
মন্তব্য করুন