বিয়ের অনুষ্ঠানে বর জনসম্মুখে কনেকে চুমু দেন। তা দেখে ক্ষিপ্ত হয়ে বরের পরিবারের সদস্যদের বেদম মারধর করেছে কনে পক্ষ। বরের বাবাসহ ৬ জন আহত হন। আর এ ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের উত্তর প্রদেশে।
এনডিটিভির খবরে বলা হয়েছে, বিয়ের মঞ্চে জনসম্মুখে বর কনেকে চুমু দেন। এটা কেন্দ্র করে বর পক্ষ ও কনে পক্ষের সদস্যদের মধ্যে সংঘর্ষ লেগে যায়।
খবর অনুসারে, বিয়ে বাড়ি যুদ্ধের ময়দানে পরিণত হয়। খবরে বলা হয়েছে, বরের চুমু কাণ্ডে দুই পক্ষের মধ্যে প্রথমে তর্কাতর্কি শুরু হয়। হঠাৎ কনের পরিবারের সদস্যরা লাঠি নিয়ে মঞ্চে ওঠেন। বরের পরিবারের সদস্যদের তারা বেদম প্রহার করেন। বরের বাবাসহ ৬ জন আহত হন।
মারামারির একপর্যায়ে পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। ঘটনাস্থলে এসে পুলিশ সাতজনকে আটক করে নিয়ে যায়। আহতদের স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
পুলিশ জানিয়েছে, সোমবার রাতে কনের বাবা তার দুই কন্যার বিয়ের আয়োজন করেন। কোনো সমস্যা ছাড়াই প্রথম বিয়ে অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু দ্বিতীয় বিয়েতে বাধে বিপত্তি। কনের পরিবারের অভিযোগ, বর মঞ্চে কনেকে জোরপূর্বক চুমু দিয়েছে। অন্যদিকে বর বলেন, মালা বদলের পর কনে তাকে চুমু দিতে পীড়াপীড়ি করেন।
স্থানীয় থানার জ্যেষ্ঠ পুলিশ কর্মকর্তা রাজকুমার আগরওয়াল জানান, এখন পর্যন্ত কোনো পক্ষ লিখিত অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে সে অনুসারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। জনশৃঙ্খলা ও শান্তি বিনষ্টের জন্য ৬ জনকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
মন্তব্য করুন
থাইল্যান্ড,কুয়েত, সুইজারল্যান্ড, ও পোল্যান্ডে রাষ্ট্রদূত নিয়োগ দিয়েছে বাংলাদেশ সরকার।
মঙ্গলবার রাতে এসব নিয়োগ দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
আদেশে বলা হয়েছে, মেজর জেনারেল মো. আশিকুজ্জামানের অবসর উত্তর ছুটি এবং এ সংক্রান্ত সুবিধা স্থগিত করে অন্যান্য প্রতিষ্ঠান ও সংগঠনের সঙ্গে কর্মসম্পর্ক পরিত্যাগের শর্তে ১৭ নভেম্বর থেকে পরবর্তী ছয় মাসের জন্য তাকে কুয়েতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত পদে চুক্তিতে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
বিসিএস পররাষ্ট্র ক্যাডারের কর্মকর্তা মো. আব্দুল হাইকে তার অবসর উত্তর ছুটি ও সংশ্লিষ্ট সুবিধা স্থগিত এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠান ও সংগঠনের সঙ্গে কর্মসম্পর্ক পরিত্যাগের শর্তে ২৯ ডিসেম্বর অথবা যোগদানের তারিখ থেকে পরবর্তী ছয় মাস মেয়াদে থাইল্যান্ডের ব্যাংককে বাংলাদেশ দূতাবাসের রাষ্ট্রদূত পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
পররাষ্ট্র ক্যাডারের কর্মকর্তা মোহাম্মদ সুফিউর রহমানকে ১ ডিসেম্বর থেকে ছয় মাসের জন্য জেনেভায় জাতিসংঘের বাংলাদেশের স্থায়ী মিশনে স্থায়ী প্রতিনিধি ও সুইজারল্যান্ডের জেনেভা দূতাবাসের রাষ্ট্রদূত পদে চুক্তিতে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে পররাষ্ট্র ক্যাডারের কর্মকর্তা সুলতানা লায়লা হোসেনের অবসর উত্তর ছুটি এবং এ সংক্রান্ত সুবিধা স্থগিতের পাশাপাশি অন্যান্য প্রতিষ্ঠান ও সংগঠনের সঙ্গে কর্মসম্পর্ক পরিত্যাগের শর্তে ২৫ ডিসেম্বর বা যোগদানের তারিখ থেকে ছয় মাসের জন্য পোল্যান্ডে রাষ্ট্রদূত পদে চুক্তিতে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
মন্তব্য করুন
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস ছাত্রদের আকাঙ্ক্ষার নতুন বাংলাদেশ গড়ে তুলতে সরকারের সাথে একজোট হয়ে কাজ করার জন্য ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, “ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান
নতুন বাংলাদেশ গড়ার যে সুযোগ এনে দিয়েছে, তা ব্যবহার করে আমরা অতীতের পচা বাংলাদেশ থেকে একটা নতুন তরতাজা বাংলাদেশের সৃষ্টি করতে চাই। আসুন, এ লক্ষ্যে আমরা একসঙ্গে কাজ করি।”
বৃহস্পতিবার রাজধানীর ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে আয়োজিত ন্যাশনাল বিজনেস সংলাপে তিনি আরো বলেন, “এটা কোনও কল্পকাহিনী না। আমার দৃঢ় বিশ্বাস- আপনার মনস্থির করে এগিয়ে এলে খুব দ্রুত গতিতে আমরা নতুন বাংলাদেশ গড়ে তুলতে পারবো।”
ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্স, বাংলাদেশ (আইসিসিবি) এবং জাতীয় পর্যায়ের ১৫টি বাণিজ্যিক সংগঠন এ সংলাপের আয়োজন করে।
সবাই মিলে একজোট হয়ে কাজ করলে তরুণদের স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়ে তোলা অবশ্যম্ভাবী- এমন আশাবাদ ব্যক্ত করে ব্যবসায়ীদের
উদ্দেশে নোবেলবিজয়ী ড. ইউনূস বলেন, “আমরা যে বড় কিছু করতে পারি তার প্রমাণ হলো ব্যবসায়ীরা। বিরাট দুঃসাহস নিয়ে আপনারা উদ্যোক্তা হয়েছেন। বাংলাদেশিদের
কাছে শিল্পপতি হওয়া দুঃস্বপ্ন ছিল, কিন্তু আপনারা সেটা করতে পেরেছেন। আপনারা বিশ্বমানের উদ্যোক্তা। যুবকরা যে সুযোগ এনে দিয়েছে তা কাজে লাগিয়ে আপনারা স্বপ্নের নতুন বাংলাদেশ গড়ে তুলতে পারবেন।”
তিনি বলেন, “বাংলাদেশের ১৭ কোটি মানুষ পারস্পারিকভাবে পরিচিত এবং একজনের সঙ্গে আরেকজনের যোগসূত্র রয়েছে। দুনিয়ায় এমন কোনও দেশ পাওয়া যাবে না যেখানে পরস্পর পরস্পরের সঙ্গে এমন ঘনিষ্ঠ। এখানে হয়তো কেউ সরকারে আছেন, কেউবা সরকারের বাইরে আছেন বা ব্যবসা করছেন। অথবা কেউ আছেন বিদেশে। কিন্তু আমাদের সবার সঙ্গে একটা যোগসূত্র আাছে। পারস্পারিক এই যোগসূত্রই আমাদের বড় শক্তি যা আমাদের স্বপ্ন পূরণে ভূমিকা রাখতে পারে।”
তরুণদের স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করে নোবেলবিজয়ী ড. ইউনূস বলেন, “যে কয়টা দিন সরকারে থাকি- আমরা একসঙ্গে কাজ করতে চাই। আমাদের অঙ্গীকার হলো- নতুন বাংলাদেশের জন্য যা আছে তা করবো। যেন বলে যেতে পারি- এই দেশ আমাদেরকে একটা সুযোগ দিয়েছিল, আমরা সেই সুযোগের সদ্ব্যবহার করেছি।”
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “নতুন বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে তরুণরা প্রাণ দিয়েছে। যে বাংলাদেশে তাদের জন্ম ও বেড়ে ওঠা তা অসহ্য হয়ে উঠেছিল। এ কারণে যখন ছাত্রদের প্রাণ ঝরছিল- তখন সারাদেশের মানুষ তাদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশে এমন কোনও মানুষ ছিল না তাদের সমর্থন করেনি। তাদের প্রাণের ফলে আমরা একটা নতুন সুযোগ পেয়েছি।”
ছাত্র-জনতার আকাঙ্ক্ষার বাংলাদেশ বিনির্মাণে সংস্কার বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্বারোপ করে ড. ইউনসূ বলেন, “সংস্কার কেবল সরকারের ওপর ছেড়ে দেবেন না। আসুন সবাই মিলে সংস্কার করি। যেখানে ভুল দেখবেন, আত্ম-জিজ্ঞাসা করবেন-সেখান থেকে বেরিয়ে আসার। ছেলেদের আত্মাহুতির দিকে তাকিয়ে ভুলপথ পরিহার করুন।”
শ্রমিক-মালিকের মধ্যে সরকার সুসম্পর্ক গড়ে তুলতে চায় উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “আমাদের মেয়াদকালে আমরা শ্রমিক-মালিকের সম্পর্ক সুন্দরভাবে গড়ে তুলতে চাই। আমরা এখনও জেনেভা কনভেনশনে যোগ দিতে পারিনি। আমাদেরকে সাহস দিন, এগিয়ে আসুন, আমরা সবাই মিলে আইএলও কনভেনশনে স্বাক্ষর করি।”
তিনি শ্রমিকদের যা প্রাপ্য, মালিকদের তাতে শরিক হওয়ার আহ্বান জানান।
বাংলাদেশে ব্যবসা পরিচালনায় অনেক বাধা রয়ে গেছে উল্লেখ করে অধ্যাপক ড. ইউনূস বলেন, “ব্যবসায় বাধার কোনও সীমা নেই। ব্যবসা করা এক মহা সংগ্রাম। তবে আমরা এসব বাধা পেরিয়ে যেতে আজ একযোগে সরকার, সরকারের বাইরে সবাই এক পরিবারের সদস্য হিসেবে কাজ করে যাবো।”
তিনি ব্যবসায়ীদের
উদ্দেশে বলেন, “বাংলাদেশ নিম্ন মধ্য-আয়ের দেশ থেকে উচ্চ মধ্য-আয়ের দেশে উন্নীত হলে রফতানির ক্ষেত্রে কিছু সুবিধা হারাবে। কিন্তু আমাদের প্রতিযোগিতায় শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী হওয়ার সক্ষমতা অর্জন করতে হবে।”
দেশের প্রান্তিক মানুষের পাশে দাঁড়াতে ব্যবসায়ীদের সামাজিক ব্যবসা চালুর আহ্বান জানিয়ে ড. ইউনূস বলেন, “আপনার গ্রাম, উপজেলা কিংবা আপনার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের এলাকায় সামাজিক ব্যবসা গড়ে তুলুন। বিশুদ্ধ পানি, স্বাস্থ্য সেবা, শিক্ষা ও পরিবেশ উন্নয়নমূলক সামাজিক ব্যবসা করা যেতে পারে। এক্ষেত্রে আপনি বিনিয়োগ করবেন মুনাফার জন্য নয়, অন্যের সহায়তা বা সুবিধার জন্য।”
সংলাপে অর্থ উপদেষ্টা ড, সালেহউদ্দিন
আহমেদ, পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন
মাহমুদ এবং ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশন (এফবিসিসিআই)’র সাবেক সভাপতি মীর নাসির হোসেন বক্তব্য রাখেন। সূত্র: বাসস
মন্তব্য করুন
মিয়ানমারে যুদ্ধের জেরে দেশের সীমান্তবর্তী এলাকায় নিরাপত্তা ঝুঁকি থাকায় বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তের ঘুমধুম উচ্চবিদ্যালয় পরীক্ষাকেন্দ্রটি এবার বাতিল করা হয়েছে।
ওই কেন্দ্রে যাদের এসএসসি পরীক্ষায় বসার কথা ছিল তাদের পরীক্ষা নেওয়া হবে ১ নম্বর উত্তর ঘুমধুম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ২ নম্বর উত্তর ঘুমধুম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কেন্দ্রে।
সোমবার (১২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার মো. তোফাইল ইসলাম ঘুমধুম ও তুমব্রু সীমান্ত পরির্দশন শেষে সাংবাদিকদের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক এ এম এম মুজিবুর রহমান সোমবার এ সিদ্ধান্তের বিষয়টি নিয়ে বলেন, আমাদের একটি দল ঘুমধুম উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্র পরিদর্শন করেছে। মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা মোতাবেক আমরা পরীক্ষার ভেন্যু পরিবর্তন করেছি। নতুন দুটি ভেন্যু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, তাই প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন প্রয়োজন ছিল। সেই অনুমোদন পাওয়ার পর বিকল্প ভেন্যু ঘোষণা করা হল।
চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সম্প্রতি মিয়নামারের অভ্যন্তরে চলমান সংঘর্ষের কারণে নিরাপত্তাজনিত ঝুঁকি থাকায় বিকল্প ভেন্যু করা হল।স্থানীয় শিক্ষা কর্মকর্তা বিদ্যালয় দুটিতে আসন বিন্যাস করবেন বলে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক এ এম এম মুজিবুর রহমান জানান।
চলতি বছরের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হচ্ছে বৃহস্পতিবার। দেশের ২৯ হাজার ৭৩৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ৩৭০০টি কেন্দ্রে ২০ লাখ ২৪ হাজার ১৯২ শিক্ষার্থী এবারের পরীক্ষায় অংশ নেবে।
ঘুমধুম উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে এবার পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ৪৬১ জন। নতুন পরীক্ষা কেন্দ্র ১ নম্বর উত্তর ঘুমধুম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ধারণ ক্ষমতা ৪২৫ জন এবং ২ নম্বর উত্তর ঘুমধুম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ধারণ ক্ষমতা ২০০ জন।
গত দুই সপ্তাহ ধরে নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারে দেশটির সরকারি বাহিনীর সঙ্গে বিদ্রোহীদের লড়াই চলছে । এই যুদ্ধের মধ্যে গুলি ও মর্টার শেল এপাড়ে এসে পড়ছে। এরকম ঘটনায় অন্তত দুজনের মৃত্যু হয়েছে, আহত হয়েছেন কয়েকজন। এদিকে বিদ্রোহীরা সীমান্ত চৌকি দখল করে নেওয়ায় মিয়ানমারের বর্ডার গার্ড পুলিশের সোয়া তিনশ সদস্য গত সপ্তাহে পালিয়ে বাংলাদেশে এসে ঢোকে। তাদের একটি অংশকে নিরস্ত্র করে বিজিবি হেফাজতে ঘুমধুম উচ্চবিদ্যালয়ের একটি ভবনে রাখা হয়।
এসব কারণে ওই বিদ্যালয় কেন্দ্রে এসএসসি পরীক্ষা নেওয়ার বিষয়টি অনিশ্চয়তায় পড়ে যায় আর এ পরিস্থিতির প্রেক্ষিতেই শিক্ষা বোর্ডের প্রতিনিধিদল কেন্দ্রটি পরিদর্শন করে বিকল্প কেন্দ্রে পরীক্ষা নেওয়ার সুপারিশ করেন।
মন্তব্য করুন
প্রায় দেড় যুগ ধরে কুড়িগ্রামের প্রত্যন্ত গ্রামের নারীদের হাতে তৈরি টুপি মধ্য প্রাচ্যে বেশ সুনাম কুড়িয়েছে। বাহারি রঙের সুতা আর রেশমার উপরে আঁকা বিভিন্ন নকশাকৃত বানানো টুপির চাহিদা বেড়েই চলছে। এই টুপি তৈরি করে এখানকার হাজারো নারীদের হয়েছে কর্মসংস্থান, সংসারে ফিরেছে স্বচ্ছলতা। তবে এমন আয় আর সুনামের গল্পের পিছনে মুল নারী উদ্যোক্তা মোর্শেদা বেগমকে পাড়ি দিতে হয়েছে অনেকটা পথ। বেকার নারীদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করায় নারীদের আইকন হিসেবে পরিচিত তিনি। মোর্শেদা বেগম কুড়িগ্রাম জেলার উলিপুর উপজেলার পাতিলাপুর গ্রামের বাসিন্দা। নিপুণ হস্ত শিল্প সম্ভার নামে টুপি তৈরির প্রতিষ্ঠানের পরিচালক তিনি।
জানা গেছে মোর্শেদা বেগম যখন দশম শ্রেণির ছাত্রী, তখন তার বিয়ে হয়। সংসারে অভাব থাকায় ১৯৯৫ সালে বিয়ের পর স্বামী জাবেদ আলীর সঙ্গে চলে যান টাঙ্গাইলে।সেখানে একটি টাওয়াল ফ্যাক্টরিতে কাজ নেন। ভাড়া বাসার পাশে পরিচয় হয় প্রতিবেশি কমলা বেগমের সাথে। কমলা বেগমের টুপি তৈরির কাজ দেখে দেখে রপ্ত করেন কলা-কৌশল। দিনে ফ্যাক্টরির কাজ আর রাতে টুপি বানানো শুরু করে প্রথম টুপি তৈরি করে মজুরি পান ৩৫০ টাকা। পরে তার নিখুঁত কাজ দেখে মুগ্ধ হন এক বেসরকারি সংস্থার কর্মকর্তা। প্রথম অর্ডারে ৫০টি টুপি তৈরি করে পেয়েছিলেন ১৭ হাজার টাকা। এরপর ২০০৪সালে মোর্শেদা বেগম নিজ গ্রামে ফিরে আসেন।প্রথমে এলাকার ৭ জন নারীকে নিয়ে শুরু করেন দারিদ্র্য জয়ের সংগ্রাম।তার হাতে বানানো টুপি ২০০৮সাল থেকে মধ্যপ্রাচ্যে রপ্তানি হচ্ছে। হাতে বানানো টুপি তৈরি করে এখন স্বাবলম্বী মোর্শেদা। তার সফলতার গল্প শুনে দলে দলে অনান্য নারীরা টুপি বানানো কাজে ছুটে আসেন। বর্তমানে তার সাথে প্রায় ৫ হাজার নারী কাজ করছেন।মোর্শেদা বেগম নিজ গ্রাম পাতিলাপুরের নারীদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেন নাই আশপাশে প্রায় ৪০-৫০ টি গ্রামের নারীদের কর্মসংস্থান তৈরি হয়েছে।বিভিন্ন বয়সী নারী পাশাপাশি পুরুষরাও এ কাজ করে সংসারের আয় যোগাচ্ছেন ।
মোর্শেদা জানান, ফেনীর দুজন ব্যবসায়ীর কাছে তিনি তৈরি করা টুপি বিক্রি করেন। আর এই টুপি মধ্যপ্রাচ্যের বাহারাইন, সৌদি আরব,দুবাইয়ে বিক্রি হয়। ওই ব্যবসায়ীরা তার কাছে রেশমা সরবরাহ করেন। এরপর তিনি নারীদের সঙ্গে নিয়ে স্রেফ সুঁই সুতা দিয়ে তৈরি করেন নানা ধরনের নকশাখচিত টুপি।টুপি তৈরির দেখভাল করতে বিভিন্ন গ্রামে বেতনভুক্ত প্রায় ১৫ জন সুপার ভাইজার রেখেছেন। হাতে বানানো প্রকার ভেদে প্রতিটি টুপি তৈরির জন্য নারীরা পারিশ্রমিক পান ৮০০/১৬০০ টাকা। এতে সুই সুতার খরচ দেড়শ টাকা। প্রতি টুপিতে তিনি কমিশন পান ৭০/৯০ টাকা। প্রতি মাসে ৮/১০ হাজার টুপি বিক্রি করেন তিনি। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে নিপুণ হস্ত সম্ভারের টুপি তৈরির পরিধি আরো বাড়াতে পারবেন বলে জানান তিনি।পাতিলাপুর গ্রামের হাওয়া বেগম জানান,চার বছর আগে মোর্শেদা বেগমের কাছ থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে টুপি তৈরির কাজ শুরু করেন।এখন তার আর অভাব নেই। সংসারের স্বাভাবিক কাজের পাশাপাশি টুপি তৈরি করে ভালো আয় করছেন তিনি।অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী মুক্তা খাতুন বলেন, পড়াশোনার পাশাপাশি আমি মোর্শেদা আন্টির টুপি তৈরির কাজ করি।এখান থেকে যা উপার্জন করি।লেখাপড়ার খরচ মিটিয়ে বাবাকে সহযোগিতা করতে পারি। শুধু আমি না আমার মত বিভিন্ন বয়সের নারীরা এখানে কাজ করে ভালো টাকা পাচ্ছেন।
সাত দরগাহ গ্রামের মৌসুমি বলেন, সারা বছর আমরা টুপি তৈরির কাজ করি।বিশেষ করে রমজান মাস ও কোরবানি ঈদের সময় টুপির চাহিদা বেশি থাকে।এসময় টুপি বানিয়ে জন প্রতি ৮/১০হাজার টাকা পাই। কয়েক বছর ধরে পরিবার নিয়ে খুব সুন্দর ঈদ কাটাতে পারছি।
কুড়িগ্রাম বিসিক এর উপ ব্যবস্থাপক শাহ মোহাম্মদ জোনায়েদ বলেন,পাতিলাপুর গ্রামের নারী উদ্যোক্তা মোর্শেদা বেগমের টুপি মধ্য প্রাচ যাচ্ছে এটি কুড়িগ্রাম জেলার জন্য ভালো খবর।হাজার হাজার নারীদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছেন তিনি। সরকারি কোন প্রশিক্ষণ, আর্থিক ঋন অথবা তৈরি টুপির বাজারজাত করণে কোন সহযোগিতার প্রয়োজন হলে কুড়িগ্রাম বিসিক শিল্প মোর্শেদা বেগমকে সহযোগিতা করবে বলে জানান তিনি ।
মন্তব্য করুন
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের (ইউএনজিএ) ৮০তম অধিবেশনে
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের অংশগ্রহণ বাংলাদেশের দায়িত্বশীল বৈশ্বিক
ভূমিকাকে আরও সুদৃঢ় করেছে। এতে গণতান্ত্রিক শাসন, মানবিক সংহতি ও গঠনমূলক আন্তর্জাতিক
সহযোগিতার প্রতি বাংলাদেশের প্রতিশ্রুতি নতুনভাবে প্রতিফলিত হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধান
উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
আজ শুক্রবার নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে
পোস্ট করা এক বার্তায় তিনি প্রধান উপদেষ্টার ইউএনজিএ সফরের সাফল্যগুলো তুলে ধরেন।
প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানান, অধ্যাপক ড. ইউনূস গত
সপ্তাহে নিউইয়র্কে ইউএনজিএ-র উচ্চপর্যায়ের অধিবেশনে বাংলাদেশের প্রতিনিধিদলকে নেতৃত্ব
দেন। সেখানে তিনি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে উদ্দেশ করে বক্তব্য রাখেন, বিশ্বনেতাদের
সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন এবং গণতন্ত্র, মানবিক নেতৃত্ব ও ভবিষ্যৎ অর্থনৈতিক সহযোগিতা
নিয়ে বাংলাদেশের দৃষ্টিভঙ্গি উপস্থাপন করেন। ইউএনজিএ-র ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা বাংলাদেশে
গণতন্ত্র, স্বচ্ছতা ও অন্তর্ভুক্তিমূলক শাসনব্যবস্থার প্রতি অটল অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত
করেন। তিনি স্বাধীন, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের প্রস্তুতির কথা উল্লেখ করে বৈশ্বিক
মহলকে আশ্বস্ত করেন যে বাংলাদেশ জনগণ ও আন্তর্জাতিক অংশীদারদের লালিত গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ
রক্ষায় প্রস্তুত।
শফিকুল আলম আরও বলেন, প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সফরে
তিন রাজনৈতিক দলের ৬ প্রতিনিধি ছিলেন। তিনি উল্লেখ করেন, ‘এটাই প্রথমবার এমন একটি মর্যাদাপূর্ণ
প্রতিনিধিদল একসঙ্গে সফরে যোগ দিল। তারা কূটনীতিক, প্রবাসী নেতৃবৃন্দ ও ব্যবসায়ীদের
সঙ্গে বৈঠক করেন। এসব যোগাযোগ বিশ্বের কাছে শক্তিশালী বার্তা পৌঁছে দিয়েছে যে গোটা
বাংলাদেশই গণতান্ত্রিক, স্বাধীন ও সুষ্ঠু নির্বাচনের পথে একসঙ্গে এগোচ্ছে।’
বিশ্বনেতাদের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার কৌশলগত বৈঠক
প্রসঙ্গে আলম বলেন, অধ্যাপক ড. ইউনূস উচ্চপর্যায়ের একাধিক দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন, যা
বাংলাদেশের বৈশ্বিক অংশীদারিত্ব জোরদার ও যৌথ অগ্রাধিকারের প্রসারে ভূমিকা রাখে।
তিনি জানান, ইতালি, ফিনল্যান্ড, নেদারল্যান্ডস, পাকিস্তান,
অস্ট্রেলিয়া, আলবেনিয়া, কসোভো ও ভুটানের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে গণতান্ত্রিক শাসন, বাণিজ্য,
জলবায়ু সহনশীলতা ও মানব উন্নয়নের বিষয় গুরুত্ব পায়।
আলম আরও বলেন, প্রধান উপদেষ্টা জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও
গুতেরেস, ইউএনএইচসিআর প্রধান ফিলিপো গ্রান্ডি, ইউনিসেফ নির্বাহী পরিচালক ক্যাথরিন রাসেল,
জাতিসংঘের আন্ডার-সেক্রেটারি জেনারেল রাবাব ফাতিমা, বিশ্বব্যাংক প্রেসিডেন্ট অজয় বাঙ্গা,
নেদারল্যান্ডসের রানি ম্যাক্সিমা এবং আইএমএফ ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভার
সঙ্গে বৈঠক করেন।
এছাড়া অধ্যাপক ড. ইউনূস মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড
ট্রাম্প আয়োজিত নৈশভোজে অংশ নিয়ে শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। যুক্তরাষ্ট্রের
বিশেষ দূতের সঙ্গেও তাৎপর্যপূর্ণ আলোচনা হয়, যেখানে আঞ্চলিক সহযোগিতা ও বহুপাক্ষিক
কূটনীতিতে বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ভূমিকা উঠে আসে।
রোহিঙ্গা সংকটে মানবিক নেতৃত্ব প্রসঙ্গে আলম বলেন,
প্রধান উপদেষ্টার সফরের মূল বিষয় ছিল রোহিঙ্গা ইস্যু। সেখানে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া
এক মিলিয়নের বেশি বাস্তুচ্যুত মানুষের প্রতি অব্যাহত মানবিক সহায়তার প্রতিশ্রুতি পাওয়া
যায়। জাতিসংঘ সংস্থা ও দাতা দেশগুলোর সঙ্গে বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা নিরাপদ, স্বেচ্ছায়
ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসনের ওপর গুরুত্বারোপ করেন এবং সংকট যেন বৈশ্বিক মনোযোগ থেকে
হারিয়ে না যায় সে আহ্বান জানান। প্রেস সচিব জানান, এ সময় তিনি যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য
থেকে রোহিঙ্গাদের সহায়তায় ৯৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের প্রতিশ্রুতি আনতে সক্ষম হন।
শফিকুল আলম বলেন, জবাবদিহি ও উন্নয়নে সরকারের প্রতিশ্রুতি
তুলে ধরতে অধ্যাপক ইউনূস জাতিসংঘকে অনুরোধ জানান বাংলাদেশের স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি)
থেকে উত্তরণের অগ্রগতির একটি স্বাধীন মূল্যায়ন পরিচালনা করতে। এ অনুরোধ ঢাকার অর্থনৈতিক
যাত্রাপথে আস্থা ও গঠনমূলক আন্তর্জাতিক মূল্যায়নের প্রতি উন্মুক্ততা প্রকাশ করে।
প্রেস সচিব জানান, ইউএনজিএ সফরে বিদেশে কর্মসংস্থান
ও শ্রমশক্তি রপ্তানির নতুন সুযোগও উন্মোচিত হয়। কসোভো, আলবেনিয়া ও ইউরোপের আরও কয়েকটি
দেশের কর্মকর্তাদের সঙ্গে ফলপ্রসূ আলোচনায় বাংলাদেশের শ্রমিকদের জন্য শ্রমবাজার সম্প্রসারণের
বিষয়ে সম্ভাবনা খোঁজা হয়েছে। তিনি বলেন, এসব সুযোগ প্রবাসী আয় বাড়াতে ও নতুন অংশীদার
দেশের সঙ্গে জনগণের পারস্পরিক সম্পর্ক জোরদার করতে সহায়ক হবে।
মন্তব্য করুন
প্রায় ২,০০০ বছর আগের একটি রোমান মূর্তি আবিষ্কার করেছে যুক্তরাজ্যের একটি পার্কিং লট নির্মাণকারী শ্রমিকরা । খননকারী গ্রেগ ক্রালি গত বছর সংস্কারের কাজ করার সময় ইংল্যান্ডের পিটারবারোতে ষোড়শ শতকের কান্ট্রি এস্টেট বার্গলে হাউসে একজন রোমান নারীর মার্বেল মূর্তির মাথা খুঁজে পান। ২ সপ্তাহ পরে একটি আবক্ষ মূর্তিও ওই স্থানের কাছে পাওয়া গিয়েছিল। ধ্বংসাবশেষগুলিকে একজন সংরক্ষক পরিষ্কার করে পরীক্ষা করার উদ্দেশে নিয়ে যান। তিনি জানান ভাস্কর্যটির তারিখ প্রথম বা দ্বিতীয় শতাব্দীর।
বিশেষজ্ঞরা উল্লেখ করেছেন, একটি লোহার কীলক আবক্ষ মূর্তিটিকে পাদদেশের সাথে সংযুক্ত করেছিলো। ঐতিহাসিকভাবে ১৮ শতকের শেষের দিকে ইতালিতে ভ্রমণকারী অভিজাতদের কাছে বিভিন্ন পুরনো আইটেম বিক্রি করার সময় ইতালীয় ব্যবসায়ীরা এই কিলোকটি যুক্ত করেছিলেন ।
অনুমান করা হয়, ১৭৬০-এর দশকে নবম আর্লের ইতালিতে ২টি সফরের একটির সময় যখন তিনি অনেক পুরাকীর্তি কিনেছিলেন, তখন তিনি ভাস্কর্যটি বারঘলিতে ফিরিয়ে এনেছিলেন। ব্রাউনলো সেসিল ১৭৫৪ সালে উত্তরাধিকারসূত্রে 'এক্সেটারের নবম আর্ল' শিরোনামটি পেয়েছিলেন।
এস্টেট অনুসারে তিনি একজন ভ্রমণকারী এবং চারুকলার সংগ্রাহক ছিলেন।এস্টেট অনিশ্চিত যে কীভাবে মাথা এবং আবক্ষ মূর্তিটি গাড়ি পার্কে মাটি দ্বারা সমাহিত হয়েছিল। বার্গলে হাউস মনে করে কেউ মূর্তিটি চুরি করে মাটিতে পুঁতে দিয়েছিলো। খননকারী ক্রাওলির মতে, এই মূর্তিটি অনেক পুরানো। এই ধরণের প্রাচীন মূর্তি খুঁজে পাওয়ার অনুভূতি সত্যিই অবিশ্বাস্য।
এই মূর্তিটি তার ‘এখনও পর্যন্ত সেরা আবিষ্কার’ বলে অভিহিত করেছেন ক্রাওলি।
এখন মূর্তিটি বার্গলে হাউসে নবম আর্ল দ্বারা সংগৃহীত অন্যান্য মূর্তির পাশাপাশি প্রদর্শিত হবে। সূত্র : সিএনএন
মন্তব্য করুন
মজিবুর রহমান পাবেল:
কুমিল্লার ময়নামতি ওয়ার সিমেট্রি (যুদ্ধসমাধি)
থেকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নিহত ২৪ জাপানি সৈনিকের দেহাবশেষ সরিয়ে নেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে।
তাদের দেহাবশেষ জাপানে নেওয়া হবে। এরই মধ্যে জাপানের পক্ষ থেকে ৭ সদস্যদের একটি ফরেনসিক
বিশেষজ্ঞ দল ওই ২৪ জাপানি সৈনিকের দেহাবশেষ সরিয়ে নেওয়ার কার্যক্রম শুরু করেছেন। যেটি
শেষ হবে আগামী ২৪ নভেম্বর।
কুমিল্লা-সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়কের পশ্চিম
পাশে কুমিল্লা সেনানিবাস এলাকায় অবস্থিত ময়নামতি ওয়ার সিমেট্রি ঐতিহাসিক দর্শনীয় স্থান
হিসেবে পরিচিত। সেখানে রোববার বিকেল পর্যন্ত খনন করা হয়েছে ১০টি সমাধি। জাপানের বিশেষজ্ঞ
ফরেনসিক টিমকে সহায়তা করছেন বাংলাদেশ সরকার। পুলিশি নিরাপত্তায় খনন কাজ চলছে বলে জানিয়েছেন
কুমিল্লা জেলা প্রশাসক মো. আমিরুল কায়ছার।
সংশ্লিষ্টরা জানান, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে
নিহত বিশ্বের ১৩টি দেশের ৭৩৭জন বীর সৈনিককে ময়নামতি ওয়ার সিমেট্রিতে সমাহিত করা হয়েছিল।
এর মধ্যে ১৯৬২ সালে একজন সৈনিকের দেহাবশেষসহ সমাধির মাটি তার স্বজনরা যুক্তরাষ্ট্রে
নিয়ে গিয়েছিলেন। সেখানে ২৪ জন জাপানি সৈনিকের মরদেহ রয়েছে। গত বুধবার থেকে খনন কাজ
শুরু হয়।
সমাধিস্থলের মাটি খুঁড়তেই মিলছে দ্বিতীয়
বিশ্বযুদ্ধে নিহত জাপানি সৈনিকদের মাথার খুলিসহ শরীরের বিভিন্ন অংশের হাড়। সেগুলো অত্যন্ত
যত্নসহকারে সংরক্ষণ করা হচ্ছে। কমনওয়েলথ ওয়ার গ্রেভস কমিশন এই যুদ্ধ সমাধি ক্ষেত্র
তৈরি ও রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পালন করে আসছে।
সমাধিস্থলের খননকাজে জাপানের প্রতিনিধিদের
সহায়তা করছেন মুক্তিযুদ্ধ গবেষক ও স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.)
কাজী সাজ্জাদ আলী জহির (বীর প্রতীক)। তিনি দীর্ঘদিন ধরে কবর (সমাধি) শনাক্তকরণ, দেহাবশেষ
সরিয়ে নেওয়ার কাজ করছেন। বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমানের দেহাবশেষ সরিয়ে আনার কাজটিও করেছেন
তিনি। জাপানের প্রতিনিধিদলের পক্ষে পুরো কর্মযজ্ঞের বর্ণনা দিয়েছেন তিনি।
কাজী সাজ্জাদ আলী জহির বলেন, ‘জাপান
সরকার ২০১৩ সালে আমাকে তাদের দূতাবাসে ডেকেছিল এই ২৪ জাপানি সৈনিকের দেহাবশেষ সরিয়ে
নেওয়ার বিষয়ে। কিন্তু বিভিন্ন কারণে ওই সময়ে সেটি সম্ভব হয়নি। গত বছর থেকে তারা বিষয়টি
নিয়ে আবারও যোগাযোগ করে। এবার আনুষ্ঠানিকভাবে জাপান সরকার আমাদের সরকারের কাছে চিঠি
লেখে এবং কমনওয়েলথের কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে এই কাজ শুরু করেছে। এখানে জাপানের পক্ষ থেকে
সাতজন ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ কাজ করছেন, যারা এ কাজে অত্যন্ত দক্ষ। তাদের ছয়জন জাপানি ও
একজন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক। এই সমাধিগুলো ৮১ বছরের পুরোনো। এরই মধ্যে খনন করে আমরা
১০ জনের দেহাবশেষ সমাধি থেকে উত্তোলন করতে পেরেছি।’
দেহাবশেষে কী কী পাওয়া যাচ্ছে, জানতে
চাইলে এই বীর মুক্তিযোদ্ধা বলেন, ‘৮১ বছর পর খুব বেশি কিছু পাওয়ার সুযোগ নেই। আমরা
প্রতিটি সমাধির দুই ফুটের মতো খননযন্ত্র (এক্সকাভেটর) দিয়ে খুঁড়ছি। বাকিটা ম্যানুয়ালি
অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে খনন করা হচ্ছে। কোনোটিতে তিন ফুট, আবার কোনোটিতে ছয় ফুট খননের
পর দেহাবশেষ পাওয়া যাচ্ছে। এখন পর্যন্ত যেগুলো খনন করা হয়েছে, সেসব সমাধিতে মাথার খুলি,
শরীরের বিভিন্ন অংশের হাড় পাওয়া যাচ্ছে। তবে যা-ই পাচ্ছি, সবকিছুই জাপানের বিশেষজ্ঞ
দল যত্নসহকারে সংরক্ষণ করছে।’
তিনি বলেন, আমরা এক তরুণ সৈনিকের দেহাবশেষ
তুলতে গিয়ে মাথার খুলির মধ্যে বুলেটের চিহ্ন পেয়েছি। রেকর্ড অনুযায়ী ওই সৈনিকের বয়স
২৮ বছর ছিল। আমার তখন বুকে জড়িয়ে ধরতে ইচ্ছে করেছে। এত তরুণ বয়সে পৃথিবী থেকে চলে গেছে
সে। এখানে জাপানের সৈনিকদের ২৪ সমাধির মধ্যে ২০টির নাম-পরিচয় আছে। বাকি চারটির পরিচয়
শনাক্ত করা এখনো সম্ভব হয়নি। নিশ্চয়ই তারা (জাপানের প্রতিনিধিদল) দেহাবশেষ নিয়ে গেলে
ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে তাদের পরিচয় শনাক্তের চেষ্টা করা হবে।’
কমনওয়েলথ ওয়ার গ্রেভস কমিশনের পক্ষে
দায়িত্ব পালন করা কান্ট্রি অ্যাডমিনিস্ট্রেটর আবদুর রহিম সবুজ বলেন, গত বুধবার সকাল
থেকে জাপানের প্রতিনিধি দল কার্যক্রম শুরু করে। এখানে সমাহিত দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের
সময় নিহত বিশ্বের ১৩টি দেশের।
মন্তব্য করুন
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা
ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে ফোনালাপ হয়েছে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির।
শুক্রবার (১৬ আগস্ট) বিকেলে সামাজিক
যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) এক পোস্ট দিয়ে নরেন্দ্র মোদি বিষয়টি জানিয়েছেন।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি
জানান, অধ্যাপক মুহম্মদ ইউনূসের টেলিফোন কল পেয়েছি। বিরাজমান পরিস্থিতি নিয়ে আমাদের
মধ্যে মতবিনিময় হয়েছে। একটি গণতান্ত্রিক, স্থিতিশীল, শান্তিপূর্ণ ও প্রগতিশীল বাংলাদেশের
প্রতি ভারতের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছি।
এছাড়াও নরেন্দ্র মোদি, বাংলাদেশের হিন্দু
সম্প্রদায়সহ সব সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা ও নিরাপত্তা নিশ্চিতের ওপর জোর দিয়েছেন।
ফোনে ড. ইউনূস নরেন্দ্র মোদিকে জানান,
অন্তর্বর্তী সরকার হিন্দু সম্প্রদায়সহ সব সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর নিরাপত্তার বিষয়টিকে
অগ্রাধিকার দিচ্ছে।
কথোপকথনে ড. ইউনূস ও মোদি অগ্রাধিকার
ভিত্তিতে দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার বিষয়ে আলোচনা করেছেন।
এর আগে ১৫ আগস্ট ভারতের স্বাধীনতা দিবসের
অনুষ্ঠানে মোদি বলেন, ১৪০ কোটি ভারতীয় বাংলাদেশের সংখ্যালঘু হিন্দুদের নিরাপত্তা নিয়ে
চিন্তিত। ভারত সর্বদা বাংলাদেশের অগ্রগতির শুভাকাঙ্ক্ষী। আমরা আশা করি, বাংলাদেশে পরিস্থিতি
শিগগিরই স্বাভাবিক হবে। আমরা চাই হিন্দু ও সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত হোক।
মন্তব্য করুন
মাত্র ৪২ ঘণ্টার মধ্যে এটি প্রবল আকার ধারণ করেছে। ক্যাটাগরি ৪-এ পৌঁছানো ঘূর্ণিঝড়টিকে ‘অত্যন্ত বিপজ্জনক’ বলে অভিহিত করেছেন বিশেষজ্ঞরা। এদিকে, ঘূর্ণিঝড় বেরিল দক্ষিণ-পূর্ব ক্যারিবীয় অঞ্চলের কাছে পৌঁছে গেছে এবং স্থানীয়দের নিরাপদে আশ্রয় নেয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে বলে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন বলছে, ‘বেরিল’ এখন পর্যন্ত আটলান্টিক মহাসাগরে রেকর্ড করা প্রথম এবং জুন মাসে রেকর্ড করা একমাত্র ক্যাটাগরি ৪ হারিকেন।
হারিকেন এবং ঝড়-জলোচ্ছ্বাস বিশেষজ্ঞ মাইকেল লোরির মতে, ‘বেরিল এই অঞ্চলে বছরের এই সময়ের জন্য একটি অত্যন্ত বিপজ্জনক এবং বিরল হারিকেন। আঘাত হানার আগেই এটি ঐতিহাসিক হয়ে উঠেছে।’
ঘূর্ণিঝড় বেরিল রোববার রাত কিংবা সোমবার (১ জুলাই) ভোরে ক্যারিবীয় উইন্ডওয়ার্ড উইন্ডওয়ার্ড দ্বীপপুঞ্জে ভয়াবহ তাণ্ডব চালাতে পারে বলে সতর্ক করেছে ইউএস ন্যাশনাল হারিকেন সেন্টার (এনএইচসি)।
ঘূর্ণিঝড়টি উপকূলের কাছাকাছি বড় এবং ধ্বংসাত্মক ঢেউ নিয়ে আসতে পারে উল্লেখ করে এনএইচসি বলছে, ঘূর্ণিঝড় সতর্কীকরণ এলাকায় যেখানে মূল অংশটি আছড়ে পড়তে পারে, সেখানে এবং তার কাছাকাছি উপকূলীয় অঞ্চলে ৬ থেকে ৯ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসের আশঙ্কা করা হচ্ছে।
মন্তব্য করুন
পেরুতে একটি যাত্রীবাহী বাস পাহাড়ি
খাদে পড়ে কমপক্ষে ১৬ জন নিহত হয়েছেন।
মঙ্গলবার (১৪ মে) দেশটির পাহাড়ি আয়াকুচো
অঞ্চলে ভ্রমণের সময় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
বার্তাসংস্থা এএফপির বরাত দিয়ে বুধবার
(১৫ মে) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম মলদোভা নিউজ।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাসটি ৪০ জনেরও
বেশি যাত্রী নিয়ে দুর্গম পাহাড়ি অঞ্চল আন্দিজের রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিল। এক পর্যায়ে ছিটকে
১০০ মিটার গভীর খাদে পড়ে যায়।
তবে দুর্ঘটনায় ১৬ জন নিহত হয়েছেন বলে দাবি করেছেন আয়াকুচোর কর্মকর্তা
ওয়াইবার ভেগা।
সাংবাদিকদের তিনি বলেছেন, ১৩ জনের মৃতদেহ
ইতোমধ্যেই উদ্ধার করা হয়েছে এবং আরও তিন মরদেহ বাসের নিচ থেকে উদ্ধার করা বাকি রয়েছে।
শিলাবৃষ্টি-সহ খারাপ আবহাওয়ার কারণে উদ্ধারকাজ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
পেরুর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতির
বরাতে এএফপি বলছে, বাসটি লিবার্তাদোরস হাইওয়ের আঁকাবাঁকা রাস্তা দিয়ে লিমা থেকে আয়াকুচো
শহরে যাচ্ছিল। একপর্যায়ে বাসটি উল্টে একটি ঢালে গড়িয়ে পড়ে।
মন্তব্য করুন