ঝিনাইদহ সদরে মাছচাষি শরিফুল ইসলাম টুলু হত্যা মামলায় পাঁচ আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। সেই সঙ্গে তাদের প্রত্যেককে পাঁচ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে।
(৩ মার্চ)রোববার দুপুর ১২টার দিকে ঝিনাইদহের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক মো. বাহাউদ্দিন আহমেদ এ রায় দেন।
মামলার রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ইসমাইল হোসেন জানান, ২০০৯ সালের ৭ সেপ্টেম্বর বিকেলে সদর উপজেলার লাউদিয়া গ্রামের একটি পুকুরে মাছের খাবার দিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন একই গ্রামের শফিকুল ইসলাম টুলু। সে সময় পূর্ব শত্রুতার জের ধরে একই গ্রামের জাহিদুল ইসলাম, জসিম, খোকনসহ আরও কয়েকজন তাকে রড ও হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর আহত করেন। সেখান থেকে তাকে উদ্ধার করে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতাল ও পরে খুলনা মেডিকেলে ভর্তি করা হয়।
পরদিন সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। এর পরদিন ৯ সেপ্টেম্বর নিহতের ভাই সরফুদ্দিন বাদী হয়ে নয়জনের নামে হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে দোষী প্রমাণ হওয়ায় জাহিদুল ইসলাম, খোকন হোসেন, ইলিয়াস আলী, জসিম উদ্দিন ও সেলিম হোসেনকে এ সাজা দেন বিচারক।
মন্তব্য করুন
চাঁদপুরে অন্তঃসত্বা স্ত্রীকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার পর আত্নগোপনে থাকা ঘাতক স্বামীকে
বেনাপোল থেকে গ্রেপ্তার করেছে যশোর র্যাব-৬।
শুক্রবার ভোরে যশোর জেলার বেনাপোল পোর্ট থানার বেনাপোল ডিগ্রী কলেজ এলাকায় বসবাসরত
তার আত্মীয়ের বাড়িতে আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় ইব্রাহিম প্রধানিয়াকে (৩৮) গ্রেপ্তার করা
হয়েছে বলে জানান যশোর র্যাব-৬ কোম্পানী অধিনায়ক মেজর মোহাম্মদ সাকিব হোসেন।
আটক ইব্রাহিম প্রধানিয়া চাঁদপুর জেলার মতলব দক্ষিণ থানার বকচর গ্রামের আব্দুল
মোতালেব প্রাধানিয়ার ছেলে।
মেজর মোহাম্মদ সাকিব হোসেন বলেন, ঈদুল ফিতরের দিন চাঁদপুর জেলার মতলব দক্ষিণ
থানা এলাকায় স্বামী ইব্রাহিম প্রধানিয়া তার স্ত্রী খাদিজা আক্তারকে (২৩) শারীরিক নির্যাতন
করে শরীরে ডিজেল ঢেলে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করে। চাঞ্চল্যকর ও স্পর্শকাতর এই হত্যাকান্ডের
বিষয়ে ভিকটিমের বাবা বাদী হয়ে মতলব দক্ষিণ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এই হত্যাকান্ডের
সাথে জড়িত ভিকটিমের শাশুড়ী মামলা রুজুর পরপরই গ্রেফতার হলেও মূল অপরাধী ঘাতক স্বামী
ঘটনার পরপরই নিজেকে আত্মেগোপন করে। ঘটনাটি স্পর্শকাতর ও হৃদয় বিদারক হওয়ায় উক্ত ঘটনায়
সারাদেশে ব্যাপক আলোড়ণ সৃষ্টি করে এবং আলোচিত হত্যাকান্ডের মূল অপরাধী ঘাতক স্বামীকে
গ্রেপ্তারের জন্য মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা র্যাব-৬ যশোর ক্যাম্পের সহযোগীতা চান।
স্পর্শকাতর এই ঘটনার মূল পলাতক আসামীকে গ্রেপ্তারে র্যাব-৬ যশোর ক্যাম্পের গোয়েন্দা
তৎপরতা বৃদ্ধি করে এবং গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তাকে আটক করা হয়েছে।
গ্রেপ্তারকৃত আসামীকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে উক্ত ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে
এবং সে আরো জানায়, গ্রেপ্তার এড়ানোর জন্য যশোর জেলার বেনাপোল পোর্ট থানাধীন বেনাপোল
ডিগ্রী কলেজ এলাকায় বসবাসরত তার আত্মীয়ের বাড়িতে নিজেকে আত্মগোপনে ছিলেন।
পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য গ্রেপ্তারকৃত আসামীকে মামলার তদন্তকারী
কর্মকর্তার নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানান এই র্যাব কর্মকর্তা।
মন্তব্য করুন
সুপ্রিম কোর্টের সাবেক রেজিস্ট্রার জেনারেল মো. গোলাম রব্বানী আইন ও বিচার বিভাগের সচিব হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন।
সুপ্রিম কোর্টের সঙ্গে পরামর্শ করে বুধবার তাকে আইন ও বিচার বিভাগের সচিব করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
এ বিভাগের চলতি দায়িত্ব পালনের ১০ দিনের মাথায় তিনি পূর্ণ দায়িত্ব পেলেন।
আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের একই বিভাগে তিনি যুগ্ম সচিব (প্রশাসন-১) পদে ছিলেন। এর আগে চট্টগ্রাম থেকে তাকে ঢাকায় বদলি করে আনা হয়। তিনি ৮ সেপ্টেম্বর থেকে চলতি দায়িত্বে ছিলেন।
সুপ্রিম কোর্টের সাবেক এই রেজিস্ট্রার জেনারেলকে দেড় মাস আগে জেলা ও দায়রা জজ করে পাঠানো হয়েছিল চট্টগ্রামে। সরকার পরিবর্তনের পর গত ১৩ অগাস্ট তাকে আবার আইন মন্ত্রণালয়ে ফিরিয়ে আনা হয়। তখন এ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়ার জন্য তাকে ঢাকায় ফিরিয়ে আনা হচ্ছে বলে আলোচনা ছিল।
এ বিভাগের আগের সচিব মো. গোলাম সারওয়ারকে গত বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) ওএসডি করা হয়েছিল।
বিভিন্ন জেলায় বিচারকের দায়িত্ব পালন করা নতুন আইন সচিব গোলাম রব্বানী ২০২২ সালে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের দায়িত্বে ছিলেন। ২০১৫ সালে তৈরি করা সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের পদটি রাষ্ট্রের পদমর্যাদাক্রম অনুযায়ী জ্যেষ্ঠ সচিবের সমপর্যায়ের। এর আগে তিনি ছিলেন হাই কোর্ট বিভাগের রেজিস্ট্রার, যে পদটি মর্যাদার দিক দিয়ে সচিব পর্যায়ের।
আগের সরকার এ বছর ১ জুলাই তাকে রেজিস্টার জেনারেল পদ থেকে সরিয়ে চট্টগ্রামের জেলা ও দায়রা জজ হিসেবে বদলি করে। ক্ষমতার পালাবদলের পর গত ১৩ অগাস্ট তাকে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব করা হয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনের ছাত্র গোলাম রব্বানী ১৯৯১ সালে ঢাকা আইনজীবী সমিতির সদস্য হন। পরে জুডিশিয়াল সার্ভিসে নিয়োগ পেয়ে টাঙ্গাইল, কিশোরগঞ্জ, গাজীপুর ও ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতে বিচারক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
জামালপুরের যুগ্ম জেলা জজ এবং দুর্নীতি দমন কমিশনের আইন শাখায় দায়িত্ব পালন করা গোলাম রব্বানী ২০১৭ সালের ৩১ অক্টোবর হাই কোর্ট বিভাগের রেজিস্ট্রারের দায়িত্ব পান।
মন্তব্য করুন
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে সোমবার (২৯ জানুয়ারি) মন্ত্রিসভার দ্বিতীয় বৈঠকে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে অপরাধীদের শাস্তি নিশ্চিতে সুফল পাওয়ায় ‘আইন-শৃঙ্খলা বিঘ্নকারী অপরাধ (দ্রুত বিচার) (সংশোধন) আইন, ২০২৪’ এর খসড়ার নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে সকালে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় আর বৈঠক শেষে সচিবালয়ে ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি আরো জানান, প্রথম যখন আইনটি প্রণয়ন করা হয়, তখন একটির মেয়াদ ছিল দুই বছর। পরবর্তীতে কয়েক ধাপে সেটার মেয়াদ বাড়ানো হয়েছিল। সেই মেয়াদ ২০২৪ সালের ৯ এপ্রিল শেষ হওয়ার জন্য নির্ধারিত ছিল। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ এ আইনটি মন্ত্রিসভায় তুলেছিল। আজকের মন্ত্রিসভার বৈঠকে ধাপে ধাপে মেয়াদ বাড়ানোর পরিবর্তে স্থায়ী আইন হিসেবে নীতিগত সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়েছে। এটিকে আর নতুন করে মেয়াদ বাড়াতে হবে না।
আইনটিতে কোনো পরিবর্তন আছে কিনা জানতে চাইলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, আইনটি পুরোনো। আগে যা ছিল, তা-ই থাকবে। কেবল মেয়াদ দুই বা তিন বছর না বাড়িয়ে স্থায়ী করা হয়েছে।
আগে ছিল দুই বছর পর পর মেয়াদ বাড়ানো হবে, তাহলে কেন স্থায়ী করা হচ্ছে এমন প্রশ্নে মাহবুব হোসেন বলেন, জননিরাপত্তা বিভাগ থেকে বলা হয়েছে, এ আইনটির অনেক সুফল আছে, এ আইনটির কারণে এই ক্ষেত্রে তাদের তরফ থেকে অপরাধ নিয়ন্ত্রণ করার জন্য খুব কাজে লেগেছে, এজন্য তারা আইনটি কন্টিনিউ করতে চাচ্ছেন।
মন্তব্য করুন
পাওনা
৩৬ হাজার টাকা না দেওয়ায় পরকীয়া প্রেমিকের হাতে খুন হয় কুমিল্লা হোমনা উপজেলার বড় ঘাগুটিয়া
ইউনিয়নের ঘাগুটিয়া গ্রামের শাহপরানের স্ত্রী মাহমুদা আক্তার (৩৫), তাদের ৯ বছরের ছেলে
সাহাত এবং প্রতিবেশী মামাতো ভাইয়ের মেয়ে তিশা (১৪)।
গত বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) সকালে কুমিল্লার হোমনার বড় ঘাগুটিয়া এলাকায় শাহপরানের ঘরে তিনজনের মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে পুলিশকে খবর দেন স্থানীয়রা।
হত্যাকাণ্ডের
পরই রহস্য উদঘাটনে এবং খুনিকে গ্রেপ্তারে অভিযানে নামে পুলিশ।
এর একদিন পর তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) মধ্যরাতে হোমনার শ্রীমদ্দি চরেরগাঁও এলাকায় অভিযান চালিয়ে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত মূলহোতা আক্তার হোসেনকে তার নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃত আক্তার হোসেন (২৭) হোমনা শ্রীমদ্দি চরের গাঁও এলাকার হক মিয়ার ছেলে।
গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন হোমনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জয়নাল আবেদীন।
পুলিশ জানায়, গ্রেপ্তারের পর হত্যাকারী আক্তার হোসেনকে জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, নিহত মাহমুদার সঙ্গে তার পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক ছিল। সম্পর্ক গড়ে ওঠার পর মাহমুদা তার পরকীয়া প্রেমিক আক্তার হোসেনের কাছ থেকে বিভিন্ন সময় টাকা ধার নিতো। সর্বশেষ আক্তার হোসেনের নিহত মাহমুদার কাছে ৩৬ হাজার টাকা পাওনা ছিল। আক্তার সেই টাকা মাহমুদার কাছে ফেরত চাইলে টাকা ফেরত দেব-দিচ্ছি করে আক্তারকে ঘোরাতে থাকেন। এ নিয়ে দুজনের মধ্যে কয়েক দফা বাগবিতণ্ডা হয়।
বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় আক্তারকে তার পাওনা টাকা ফেরত দেবেন বলে বাড়িতে ডাকেন মাহমুদা। পরে রাতে একসঙ্গে খাওয়াদাওয়া করেন মাহমুদা, হত্যাকারী আক্তার, মাহমুদার ছেলে সাহাত এবং মাহমুদার ভাতিজি তিশা।
খাওয়া শেষে তিশা ও সাহাত ঘুমিয়ে পড়ে। তখন আক্তার তার পাওনা টাকা ফেরত চাইলে মাহমুদা রাগারাগি করেন। একপর্যায়ে তাদের মধ্যে ফের বাকবিতণ্ডা হয়। পরে মাহমুদাকে মাথায় আঘাত করে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে হত্যা করেন আক্তার। আর ভাবতে থাকেন তিশা ও সাহাত তো সন্ধ্যায় তাকে দেখেছে। জিজ্ঞাসাবাদে তারা যদি আক্তারের কথা বলে দেয় সেই আশঙ্কা থেকে তাদের দুজনকেও গলায় ওড়না পেঁচিয়ে হত্যা করে মরদেহ তিনটি এক খাটের ওপর রেখে পালিয়ে যান তিনি।
হোমনা থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জয়নাল আবেদীন বলেন, তিনজনকে হত্যার ঘটনায় নিহত মাহমুদার বাবা বাদী হয়ে হত্যা মামলা দায়ের করার পর ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটনে নামে পুলিশ। তদন্তের মাধ্যমে পুলিশ হত্যাকারী আক্তারকে শনাক্ত করতে সক্ষম হয়।
তিনি আরও বলেন, শুক্রবার রাতে আক্তারকে তার নিজবাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। আজ শনিবার বিকেলে আদালতে তোলা হলে ঘটনার দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন তিনি।
প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) সকালে কুমিল্লার হোমনার বড় ঘাগুটিয়া এলাকায় শাহপরানের ঘরে তিনজনের মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে পুলিশকে খবর দেন স্থানীয়রা। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ তিনটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। এর আগে, বুধবার রাতের কোনো একসময় তিনজনকে হত্যা করে মরদেহ একটি খাটের ওপর ফেলে রাখা হয়।
নিহতরা হলেন বড় ঘাগুটিয়া এলাকার মো. শাহপরানের স্ত্রী মাহমুদা আক্তার (৩৫), তাদের ৯ বছরের ছেলে সাহাত এবং প্রতিবেশী মামাতো ভাইয়ের মেয়ে তিশা (১৪)।
এ
ঘটনায় গত বৃহস্পতিবার রাতেই নিহত মাহমুদার বাবা আবুল হোসেন বাদী হয়ে হোমনা থানায় একটি
হত্যা মামলা দায়ের করেন। ওই মামলার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই ঘাতক আক্তারকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
পরে শনিবার বিকেলে তাকে আদালতে তোলা হয়।
মন্তব্য করুন
কক্সবাজারের রামু উপজেলায়
পানিতে ডুবে দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
উপজেলার রাজারকূল ইউনিয়ন
পরিষদের চেয়ারম্যান মুফিজুর রহমান জানান, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তার ইউনিয়নের পশ্চিম
রাজারকূল মৌলভী পাড়ায় এ ঘটনা ঘটে।
দুই শিশুর ব্যাপারে জানা
যায় তারা খেলতে বেরিয়ে নিখোঁজ হয়েছিল ।
মৃত মো. রিহাব (৭) ও মারিয়া
(৫) পশ্চিম রাজারকূল মৌলভী পাড়ার বাসিন্দা সৌদি প্রবাসী মোহাম্মদ আব্দুল্লাহর সন্তান।
স্থানীয়দের বরাতে ইউপি চেয়ারম্যান
মুফিজুর বলেন, “সন্ধ্যার ঠিক আগে বাড়ির আশেপাশে প্রতিবেশী শিশুদের সঙ্গে খেলা করছিল
রিহাব ও মারিয়া। এক পর্যায়ে তারা বাড়ির পাশের রেললাইনের সেতুর দিকে চলে যায়। সন্ধ্যার
পরেও দুই ভাই-বোন বাড়ি না ফেরায় বাড়ির লোকজন বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করেও তাদের
সন্ধান পাচ্ছিল না। পরে হাসমত আলী নামের স্থানীয় এক ব্যক্তি মাছ ধরে বাড়ি ফেরার পথে
রেললাইন সংলগ্ন একটি সেতুর মুখে পানিতে ভরে থাকা গর্তে জাল ফেলেন। এ সময় দুই ভাই-বোনের
মৃতদেহ জালে উঠে আসে।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান
বলেন, রেললাইন ও সেতু নির্মাণের সময় বেশ কয়েকটি গর্ত তৈরি হয়। সম্প্রতি বৃষ্টিপাতের
সময় ওই গর্তগুলোতে পানি জমে যায়। আর ওই পানিতে ডুবে দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
রামু থানার ওসি আবু তাহের দেওয়ান বলেন, গর্ত বা কূপের পানিতে পড়ে ভাই-বোনের মৃত্যু হয়েছে এবং তাদের লাশ স্থানীয়দের সহায়তায় উদ্ধার করে বাড়িতে নেওয়া হয়েছে ।
মন্তব্য করুন
মঙ্গলবার কুমিল্লার দাউদকান্দিতে ঘটেছে এক মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। মহাসড়কে বাসের চাপায় নারী-শিশুসহ চার পথচারী নিহত হয়েছেন।
সোমবার (২২ এপ্রিল) রাত ৮ টার দিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার রায়পুর মালিখিল এলাকায়
মহাসড়ক পার হওয়ার সময় একুশে পরিবহন নামে একটি বাস তাদের চাপা দিলে এ দুর্ঘটনাটি ঘটে।
নিহতরা হলেন, কুমিল্লা জেলার তিতাস উপজেলার ভিটিকান্দি ইউনিয়নের কদমতুলী এলাকার দিলবাল নেছা (৫০), শাহিনুর আক্তার (২৪), রাইসা (১.৫), সায়মা (৩)।
দুর্ঘটনার বিষয়টি নিশ্চিত করে দাউদকান্দি হাইওয়ে থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহীনুল আলম জানিয়েছেন, প্রত্যক্ষদর্শীদের কাছ থেকে জানতে পারি, সোমবার রাত ৮ টার দিকে মহাসড়কের পার হচ্ছিলেন যাচ্ছিলেন শিশুসহ একই পরিবারের ৪ জন সদস্য। এ সময় নোয়াখালী থেকে ঢাকাগামী একুশে পরিবহনের বেপরোয়া বাস তাদের চাপা দিলে ঘটনাস্থলেই মারা যান তিন জন। পরে, শিশুটিকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেলে পাঠানো হলে পথেই তার মৃত্যু হয়।
তিনি আরও বলেন, বাসটি পালিয়ে গেলেও একই কোম্পানির অন্য একটি বাস আটক করা হয়েছে।
এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
মন্তব্য করুন
এহসান আহমেদ (৩০) নেত্রকোনার পূর্বধলা উপজেলার নারান্দিয়া এলাকার আব্দুর রবের ছেলে যিনি নিজেকে কানাডায় স্থায়ী বসবাসের গ্রিনকার্ড হোল্ডার ও পিএইচডিধারী এবং দেশের একটি শিল্পপ্রতিষ্ঠানের মালিকের সন্তান হিসেবে পরিচয় দিতেন।
এহসান টার্গেট করতেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে উচ্চবিত্ত পরিবারের তরুণীদের । বিশেষত যারা বিদেশে উচ্চশিক্ষায় যেতে ইচ্ছুক এমন তরুণীদের সঙ্গে পরিচিত হতেন। এরপর সরাসরি দেখা করতেন। দেখা করার সময় নিজের পরিচয় বিশ্বাসযোগ্য করতে ভালো বেশভূষা ও নামিদামি গাড়ি ভাড়া করে নিয়ে যেতেন।
ভিকারুননিসা নূন স্কুলের সাবেক শিক্ষার্থী এবং বর্তমানে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি সাহিত্যে অধ্যয়নরত এক তরুণীকে টার্গেট করেন এহসান। কানাডায় স্ত্রী হিসেবে নিয়ে যাওয়ার প্রলোভনে গড়ে তোলেন প্রেমের সম্পর্ক। নানা কৌশলে হাতিয়ে নেন ব্যক্তিগত ছবি ও ভিডিও। এরপরই শুরু হয় ব্ল্যাকমেইল। সেসব ছবি-ভিডিও সামাজিক মাধ্যম ও পরিচিতদের কাছে প্রকাশ করে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে দীর্ঘদিন ধরে ওই তরুণীর সঙ্গে প্রতারণা করে আসছিলেন এহসান।
এ ঘটনায় সম্প্রতি রাজধানীর মুগদা থানায় মামলা করেন ভুক্তভোগী তরুণী। এরপর বুধবার (৭ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর রমনা এলাকায় অভিযান চালিয়ে এহসানকে গ্রেফতার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম (উত্তর) ওয়েব বেইজড ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন টিম।
বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের জানান,তিনি বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিকারুননিসা নূন স্কুলের সাবেক এক ছাত্রীর সঙ্গে পরিচয় হয় প্রতারক এহসানের। তিনি নিজেকে কানাডা প্রবাসী, পিএইচডি ডিগ্রিধারী ও বড় শিল্পপতি পরিবারের সন্তান পরিচয় দেন। তাদের গুলশানে বাড়ি ও বিলাসবহুল গাড়ি রয়েছে এমন তথ্য দেন। এসব পরিচয় ব্যবহার করে প্রথমে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন। প্রেমের সুযোগে ভুক্তভোগী তরুণীর কাছ থেকে হাতিয়ে নেন ব্যক্তিগত ছবি ও ভিডিও। পরে সেগুলো সামাজিক মাধ্যম ও স্বজনদের কাছে প্রকাশ করার হুমকি দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছিলেন।
ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, এর আগেও ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ ফারদিন ও সাকিবের মতো এ ধরনের অনেক প্রতারককে গ্রেফতার করেছে। এসব প্রতারক নিজেদের মন্ত্রী, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, সচিব, বড় ব্যবসায়ীর সন্তান দাবি করে মেয়েদের প্রতারণার ফাঁদে ফেলে নামিদামি বাড়ি-গাড়ির প্রলোভন দেখিয়ে শারীরিক ও আর্থিকভাবে প্রতারণা করে আসছিলেন , গ্রেফতার এহসান পড়াশোনা না করেও নিজেকে পিএইচডিধারী পরিচয় দিতেন। এমনকি কোনোদিন বিদেশে না যাওয়া এহসান বলতেন তার কানাডায় গ্রিনকার্ড রয়েছে। বিভিন্ন তরুণীকে কানাডায় নিয়ে যাওয়ার প্রলোভন দেখাতেন। গোয়েন্দা পুলিশের হাতে গ্রেফতারের পর আমরা এখন পর্যন্ত তার শতাধিক নারীকে ফাঁদে ফেলার তথ্য পেয়েছি।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বন্ধুত্ব গড়ার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকার অনুরোধ জানিয়ে ডিবিপ্রধান বলেন, ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কেউ বড়লোক, ব্যবসায়ী বা সরকারি চাকরিজীবী পরিচয় দিলে যাচাই করা উচিত। এছাড়া অনলাইনে বন্ধুত্বের নামে ব্যক্তিগত ছবি আদান-প্রদানে সতর্ক হতে হবে। তবে কেউ যদি কারও মাধ্যমে প্রতারিত হন তাহলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে অভিযোগ দিতে হবে।
মন্তব্য করুন
যশোরের শার্শার পল্লীতে গ্রামের টয়লেটের সেফটিক ট্যাংকির ভেতরে মিললো ৩৮ কেজি গাঁজা। এ ঘটনায় আয়না মতি (৪০) নামে এক মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করা হয়েছে। সোমবার (১ এপ্রিল) ভোররাতে পুলিশ অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ এ গাঁজা উদ্ধার করে।
শার্শার গোড়পাড়া পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ এসআই সালাউদ্দিন খান জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তারা জানতে পারেন শার্শা উপজেলার লক্ষণপুর ইউনিয়নের হরিণাপোতা পূর্বপাড়া গ্রামের মুনসুর হোসেনের বসতবাড়িতে বিপুল পরিমাণ গাঁজা মজুত রয়েছে।
এরই ভিত্তিতে তারা অভিযান চালিয়ে বাড়ির পেছনে টয়লেটের সেফটিক ট্যাংকির মধ্যে গাঁজার একটি চালান দেখতে পায়। তারা টয়লেটের সেফটিক ট্যাংকির নিচে থেকে প্লাস্টিকের দুটি ড্রামে ভর্তি ৩৮ কেজি গাঁজা উদ্ধার করে। এ গাঁজার ব্যবসার সাথে জড়িত থাকায় আয়না মতি (৪০) নামে এক নারী কারবারীকে আটক করে। তিনি ওই গ্রামের মৃত আব্দুল আলীমের স্ত্রী। এ ঘটনায় শার্শা থানায় মামলা হয়েছে ।
মন্তব্য করুন
ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে রাজশাহীগামী বাসে ডাকাতি ও নারী যাত্রীদের
‘শ্লীলতাহানি’র ঘটনার আন্তঃজেলার তিন ডাকাতকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) রাতে টাঙ্গাইল জেলা গোয়েন্দা পুলিশ ঢাকার
সাভার থেকে তাদের গ্রেপ্তার করে। এ সময় তাদের কাছ থেকে লুণ্ঠিত হওয়া তিনটি মোবাইল
ফোন, একটি ছুরি ও ২৯ হাজার ৩৭০ টাকা উদ্ধার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- মানিকগঞ্জের দৌলতপুর সদর উপজেলার লাউতারা গ্রামের মো. বদর উদ্দিন শেখের ছেলে মো. শহিদুল ইসলাম ওরফে মুহিত (৩০), শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার রামকৃষ্ণপুর গ্রামের মো. ইসমাইল মোল্লার ছেলে মো. সবুজ (৩০) এবং ঢাকার সাভার উপজেলার টানগেন্ডা গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে মো. শরীফুজ্জামান (২৮)।
এ বিষয়ে শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১১টার দিকে টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার মো.
মিজানুর রহমান তার কার্যালয়ে প্রেসব্রিফিংএর মাধ্যমে তিনি জানান, এ ঘটনায় দায়িত্ব
অবহেলার কারণে মির্জাপুর থানার এএসআই আতিকুজ্জামানকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
এর আগে বাসে ডাকাতির ঘটনায় বাসের যাত্রী ওমর আলী বাদী হয়ে শুক্রবার ভোর রাতে মির্জাপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
মামলায় তিনি উল্লেখ করেন, গত ১৭ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে ১১টার দিকে ইউনিক রোড রয়েলস্
পরিবহনের ঢাকা কোচটি (ময়মনসিংহ-ব-১১-০০৬১) ঢাকার গাবতলী বাসস্ট্যান্ড থেকে
রাজশাহীর নাটোর জেলার বড়াইগ্রাম যাওয়ার উদ্দেশ্যে রওনা হয়। এসময় বাসটিতে ৩০ থেকে
৩৫ জন যাত্রী ছিল। পরে রাত ১২টার দিকে হেমায়েতপুর বাসস্ট্যান্ডে পৌঁছার সেখানে
থেকে আরও ১০ থেকে ১২জন যাত্রী নিয়ে বাসটি পুনরায় রাজশাহীর উদ্দেশ্যে রওনা করে। পরে
বাসটি গাজীপুর জেলার কালিয়াকৈর থানাধীন চন্দ্রা বাইপাসে পৌঁছালে চা-বিরতির জন্য
থামে। সেখান ১০ থেকে ১৫ মিনিট চা বিরতির সময় চন্দ্রা বাইপাস থেকে আরও তিন থেকে চার
জন নতুন যাত্রী নিয়ে রাজশাহীর উদ্দেশ্যে রওনা করে বাসটি। বাসটি ওইদিন রাত দেড়টার
দিকে গাজীপুর জেলার কালিয়াকৈর থানাধীন হাইটেক সিটি পার্ক সংলগ্ন খাড়াজোড়া
ফ্লাইওভার ব্রিজ অতিক্রম করার ৫ থেকে ৬ মিনিট পর হঠাৎ যাত্রীবেশে থাকা বাসে ৮ থেকে
৯ জন ডাকাত এক সঙ্গে দাঁড়িয়ে যায় এবং ধারালো চাকু ও চাপাতি দিয়ে প্রাণে মেরে ফেলার
ভয় দেখিয়ে সবাইকে চুপ থাকতে বলে। এসময় তাদের মধ্যে তিনজন অজ্ঞাতনামা ডাকাত
গাড়িচালকের গলায় ধারালো চাকু ধরে টানা হেঁচড়া করে কিলঘুষি মেরে তাকে উঠিয়ে নিয়ে
পেছনে উল্টা করে রাখে। ডাকাতদের মধ্যে থেকে একজন চালকের আসনে বসে বাসটি নিয়ন্ত্রণ
নেয় এবং বাসটি চালিয়ে টাঙ্গাইলের দিকে রওনা হয়। পরে মির্জাপুর উপজেলার সোহাগপাড়া
সাকিনস্থ ফুটওভার ব্রিজের প্রায় ১০০ গজ পশ্চিম পার্শ্বে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের
ওপর পৌঁছালে ডাকাতদলের ৬ থেকে ৭ জন সদস্য গাড়িতে থাকা অন্যান্য যাত্রীদের ধারালো
চাকু ও চাপাতি দিয়ে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে। এসময় যাত্রীদের বলে, ‘তোদের সঙ্গের টাকা
পয়সাসহ যার যা কিছু আছে সব দিয়ে দে’। এসময় যাত্রীদের কাছে থাকা টাকা, মোবাইল ফোন,
স্বর্ণালংকার ও রূপাসহ সব মালামাল ছিনিয়ে নেয়। পরে ডাকাতদলের সদস্যরা মির্জাপুরের
নাটিয়াপাড়া নাছির গ্লাসের সামনে থেকে ইউটার্ন নিয়ে ঢাকার দিকে রওনা করে। তারা দুই
থেকে আড়াই ঘণ্টা গাজীপুরের কালিয়াকৈর, কোনাবাড়ীসহ গাজীপুরের বিভিন্ন এলাকায় ঘুরায়
এবং এই সময়ের মধ্যে যাত্রীদের ধারালো চাকু ও চাপাতি দিয়ে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে।
একপর্যায়ে দুই নারীর ‘শ্লীলতাহানি’ করা হয়।
এজহারে আরও বলা হয়েছে- সব যাত্রীদের টাকাসহ অন্যান্য মালামাল লুট
করে রাত ৪টার দিকে ঢাকা জেলার আশুলিয়া থানাধীন বাড়ইপাড়া এলাকার নন্দন পার্কের
সামনে গাড়িটি টাঙ্গাইল অভিমুখে থামিয়ে চালককে ভয় দেখিয়ে বলে, ‘১০ কিলোমিটারের
মধ্যে গাড়িটি কোথাও থামালে তোকে জানে মেরে ফেলবো, আমরা তোদের গাড়ির পেছনে পেছনে
আছি’ এই বলে ডাকাতদলের সদস্যরা মালামাল ও টাকা পয়সাসহ গাড়ি থেকে নেমে চলে যায়।
পরে চালক গাড়ি নিয়ে চন্দ্রা মোড়ে গেলে গাড়িতে থাকা যাত্রীরা জাতীয়
জরুরি সেবা ৯৯৯ এ ফোন করে ঘটনার বিষয়ে পুলিশকে জানালে কিছুক্ষণের মধ্যে টহল পুলিশ
সেখানে উপস্থিত হয়। তখন গাড়িতে থাকা যাত্রীরা ডাকাতির বিষয়ে বিস্তারিত জানালে
কালিয়াকৈর থানাধীন চন্দ্রা এলাকার টহলরত পুলিশ মির্জাপুর থানায় যাওয়ার পরামর্শ
দিলে চালক গাড়ি নিয়ে মির্জাপুর বাসস্ট্যান্ডে যায়। তখন কয়েকজন যাত্রী ও গাড়ির
সুপারভাইজার মির্জাপুর থানায় গিয়ে ডিউটি অফিসারকে বিষয়টি মৌখিকভাবে অবগত করলে
মামলা না নেওয়ায় তারা পুনরায় রাজশাহীর উদ্দেশ্যে রওনা হয়। পরে নাটোর জেলার
বড়াইগ্রাম থানা মোড়ে গেলে গাড়ি থেকে তিন থেকে চার যাত্রী নেমে স্থানীয় লোকজনের
সহায়তায় গাড়ির চালক, হেলপার ও সুপারভাইজার ডাকাতির ঘটনার সঙ্গে জড়িত আছে সন্দেহে
গাড়িটি আটক করে।
এ বিষয়ে টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান জানান, ডাকাতির ঘটনায় মামলা হওয়ার
১৪ ঘণ্টার মধ্যেই এ ঘটনায় জড়িত আন্তঃজেলা ডাকাতদলের তিনজনকে পুলিশ গ্রেপ্তার
করেছে। বাকিদেরও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। গ্রেপ্তারকৃত তিনজনকে আদালতে হাজির করে
পাঁচ দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হবে। এছাড়া দায়িত্ব অবহেলায় মির্জাপুর থানার ডিউটি
অফিসার উপ পরিদর্শক (এএসআই) আতিকুজ্জামানকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
মন্তব্য করুন
সোমবার বিচারপতি শেখ হাসান
আরিফ ও বিচারপতি মো. বজলুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ ফাঁসির আসামিকে নিয়ে রায় দিয়েছেন
যেখানে বলা হয়েছে মৃত্যুদণ্ডাদেশ চূড়ান্ত হওয়ার আগে কোনো ফাঁসির আসামিকে কনডেম সেলে
নেয়া যাবেনা ।
রুল শুনানিতে আদালত এ বিষয়ে
জ্যেষ্ঠ আইনজীবী প্রবীর নিয়োগী ও এস এম শাহজাহান বিশেষজ্ঞ মত নেন। রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি
জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন শুনানি করেন। আবেদনকারীদের পক্ষে শুনানি করেন মোহাম্মদ শিশির
মনির। রুল শুনানি শেষে গত বছরের ১২ ডিসেম্বর রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ রাখা হয়।
মৃত্যুদণ্ডাদেশ চূড়ান্ত
হওয়ার আগে দণ্ডিত বা দণ্ডিতদের কনডেম সেলে রাখার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ২০২১ সালের ২
সেপ্টেম্বর হাইকোর্টে রিট করেন চট্টগ্রাম, সিলেট ও কুমিল্লা কারাগারের কনডেম সেলের
তিন কয়েদি। তারা হলেন- সাতকানিয়ার জিল্লুর রহমান, সুনামগঞ্জের আব্দুল বশির ও খাগড়াছড়ির
শাহ আলম। ওই রিট শুনানি করে ২০২২ সালের ৫ এপ্রিল রুল জারি করেন হাইকোর্ট।
মৃত্যুদণ্ডাদেশ চূড়ান্ত হওয়ার
আগে দণ্ডিতদের কনডেম সেলে রাখা কেন আইনত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না এবং মৃত্যুদণ্ডাদেশ
প্রাপ্তদের কনডেম সেলে বন্দি রাখা সংক্রান্ত কারাবিধির ৯৮০বিধিটি কেন অসাংবিধানিক ঘোষণা
করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয় রুলে। সেই সঙ্গে কনডেম সেলে রাখা বন্দিদের কী ধরনের
সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয়, সে বিষয়ে প্রতিবেদন চান আদালত।
ফৌজদারি কার্যবিধির ৩৭৪ ধারা
অনুসারে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করতে হাইকোর্ট বিভাগের অনুমোদন নিতে হয়। ফৌজদারি কার্যবিধির
৪১০ ধারা অনুসারে বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডাদেশ প্রাপ্ত আসামি হাইকোর্টে
আপিল করার সুযোগ পান। হাইকোর্ট বিভাগ মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখলে সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তি আপিল
বিভাগে আবেদন করতে পারেন।
আপিল বিভাগের রায়েও মৃত্যুদণ্ড
বহাল থাকলে সংবিধানের ১০৫ অনুচ্ছেদ অনুসারে আপিল বিভাগের রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ (পুনর্বিবেচনা)
আবেদন করার সুযোগ আছে। এ ছাড়া সংবিধানের ৪৯ অনুচ্ছেদ অনুসারে মৃত্যু-দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি
রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করতে পারেন। ক্ষমার এই আবেদন রাষ্ট্রপতি যদি নামঞ্জুর
করেন অথবা দণ্ডিত যদি আবেদন না করেন তাহলে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করতে পারে সরকার।
অথচ বিচারিক আদালতে মৃত্যু দণ্ডাদেশের পরপরই সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে কনডেম সেলে বন্দী
রাখা হচ্ছে।
রিটকারী আইনজীবী মোহাম্মদ
শিশির মনির বলেন, বিচারিক আদালতে মৃত্যুদণ্ড ঘোষণার পর তাৎক্ষণিক সাজা কার্যকর করার
আইনগত বিধান নেই। এজন্য ফৌজদারি কার্যবিধির ৩৭৪ ধারা অনুযায়ী হাইকোর্ট বিভাগের অনুমোদন
নিতে হয়।
তিনি আরও বলেন, সংবিধানের
১০৫ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী আপিলের রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ আবেদনের সুযোগ রয়েছে। এসব প্রক্রিয়া
শেষ করতে ১০-১২ বছর পার হয়ে যায়। কিন্তু বাংলাদেশে বিচারিক আদালতে মৃত্যুদণ্ড ঘোষণার
পরই সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে নির্জন কনডেম সেলে বন্দী রাখা হয়। অথচ অনেকের পরবর্তীতে
সাজা কমে। অনেকে খালাসও পান। রুল শুনানি শেষে রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ ছিল।
মন্তব্য করুন