ঈদযাত্রা স্বস্তি ও আরামদায়ক করতে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটে প্রথমবারের মতো ঈদ স্পেশাল ট্রেন চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। ২টি বিশেষ ট্রেনই আসা-যাওয়ার পথে দক্ষিণ চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের ৭টি স্টেশনে থামবে।
ঈদুল ফিতরের আগে ও পরে ৫ দিন এই রুটে অন্তত ২টি স্পেশাল ট্রেন চলবে। এই প্রথম এই অঞ্চলের মানুষ ট্রেনে চড়ে ঈদে বাড়ি যাওয়ার সুযোগ পাবেন। সড়ক পথের উপর বাড়ি ফেরা মানুষের চাপ কিছুটা কমবে। স্বস্তিতে বাড়ি ফেরার আশা এ অঞ্চলের মানুষের।
তারা জানিয়েূছেন, দক্ষিণ চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের মানুষজনের পরিবার-পরিজন নিয়ে ঈদে বাড়ি যেতে কি পরিমাণ দুর্ভোগ পোহাতে হয় সেটা বুঝানো মুশকিল। এবার সে ঝামেলা ও দুর্ভোগ অনেকটাই কমবে। ট্রেনে করে স্বাচ্ছন্দ্যে বাড়ি যাওয়া যাবে।
যে সকল স্টেশনে ট্রেন থামবে:
চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটের ট্রেনটি চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশন থেকে সকাল ৭টায় কক্সবাজারের উদ্দোশ্যে রওনা হয়ে পৌঁছাবে সকাল ১০টা ২০ মিনিটে। আবার কক্সবাজার থেকে সন্ধ্যা সাতটায় ছেড়ে চট্টগ্রাম পৌঁছাবে রাত ১০টা ৫ মিনিটে।
পথে ট্রেনটি ষোলোশহর, জানালীহাট, পটিয়া, দোহাজারী, সাতকানিয়া, চকরিয়া, ডুলাহাজারা ও রামু স্টেশনে থামবে।
কক্সবাজার রুটে বাণিজ্যিক ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে গত ১ ডিসেম্বর থেকে। বিপুল যাত্রী চাহিদা থাকলেও গত ৩ মাস ধরে এই রুটে চলাচল করছে মাত্র দুটি ট্রেন। তাও চলছে কেবল ঢাকা-চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটে।
ঢাকা-চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটে চলাচল করা কক্সবাজার এক্সপ্রেস ও পর্যটক এক্সপ্রেস বিরতিহীন হওয়ায় দক্ষিণ চট্টগ্রামের লোকজন দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইনের সুফল পাচ্ছেন না। এনিয়ে ক্ষোভ রয়েছে স্থানীয়দের মধ্যে। চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটে নতুন ট্রেন চালুর বিষয়ে দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানিয়ে আসছেন তারা।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইন এটি আমাদের কাছে স্বপ্নের মতো ছিল। সে স্বপ্ন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাস্তবতায় রূপ দিয়েছেন। কিন্তু এখনো ট্রেনে চড়ে কক্সবাজার যাওয়ার স্বপ্ন অধরাই থেকে গেছে। চট্টগ্রাম অল্পকিছু যাত্রী পরিবহনের সুযোগ রয়েছে। সেখানের টিকিট পাওয়াও দুর্লভ।
বিপুল চাহিদা থাকা সত্ত্বেও কক্সবাজার এক্সপ্রেস ও পর্যটক এক্সপ্রেসে চড়ে প্রতিদিন চট্টগ্রাম থেকে সরাসরি কক্সবাজার যাওয়ার সুযোগ পান মাত্র ১১৫ জন করে যাত্রী। ঈদ যাত্রায় সেটি আরও কয়েকগুণ বেড়ে যাবে।
ঈদে বিপুল এ যাত্রী চাহিদার কথা মাথায় রেখেই এবারের ঈদযাত্রায় চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটে বিশেষ ট্রেন চালাবে রেলওয়ে। এতে ঈদযাত্রায় দক্ষিণ চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের মানুষের দুর্ভোগ লাঘব হবে।
রেলওয়ের বিভাগীয় বাণিজ্যিক কর্মকর্তা তারেক মুহাম্মদ ইমরান বাংলানিউজকে বলেন, এবার প্রথমবারের মতো চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটে ঈদযাত্রায় বিশেষ ট্রেন পরিচালনা করা হবে। ট্রেনটি চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশন থেকে সকাল সাতটায় কক্সবাজারের উদ্দোশ্যে রওনা হয়ে পৌঁছাবে সকাল ১০টা ২০ মিনিটে। আবার কক্সবাজার থেকে সন্ধ্যা সাতটায় ছেড়ে চট্টগ্রাম পৌঁছাবে রাত ১০টা ৫ মিনিটে। ট্রেনটি থামবে ৭ টি স্টেশনে ।
ট্রেনে ঈদযাত্রা শুরু হবে আগামী ৩ এপ্রিল। অগ্রিম টিকিট মিলবে ২৪ মার্চ থেকে। গতবারের মতো এবারও ঈদযাত্রার কোনো টিকেট কাউন্টারে বিক্রি করা হবে না। অনলাইনেই টিকিট মিলবে শতভাগ ।
মন্তব্য করুন
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী জানিয়েছেন, আগামী জানুয়ারি মাসে বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হবে।
মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) দুপুরে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির তৃতীয় সভায় তিনি এ কথা জানান।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আগামী জানুয়ারি মাসে বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হবে। তবে তারিখ এখনো নিশ্চিত করা হয়নি। বিশ্ব ইজতেমা কীভাবে ভালোভাবে হতে পারে, সে বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। আপনারা জানেন, বিশ্ব ইজতেমায় এখন দুটি গ্রুপ হয়ে গেছে। তাদের মধ্যে মতেরও পার্থক্য আছে। আমরা তাদের সঙ্গে বসব, যাতে তারা সবাই ঐকমত্যে এসে ভালোভাবে (ইজতেমা) করতে পারে। এটি খুবই ভালো একটা আয়োজন, আমাদের ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের জন্য বিরাট অনুষ্ঠান। এখানে বহু হুজুর যান এবং বহু দিকনির্দেশনা আসে। আমরা তাদের অনুরোধ করব। আমরা তাদের বলব, আপনাদের নিজেদের মধ্যে যে সমস্যাটা রয়েছে, তা নিজেরা সমাধান করতে পারলে আমাদের জন্য ভালো। আর যদি নিজেরা সমাধান করতে না পারেন, তাহলে আমরা বসতে পারি, কীভাবে সমাধান করে আয়োজনটি ভালোভাবে করা যায়, সে বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
সভায় সারাদেশে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়নে করণীয়; বিশ্ব ইজতেমা উপলক্ষে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা, সার্বিক নিরাপত্তা ও অন্যান্য প্রাসঙ্গিক বিষয়; সন্ত্রাসী কার্যক্রম ও জঙ্গিবাদ প্রতিরোধ, নির্মূল ও নিয়ন্ত্রণে উদ্যোগ; অস্ত্র জমা ও অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার অভিযান পরিচালনাসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়।
সভায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়নে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে আরও সচেষ্ট হওয়া এবং আইনশৃঙ্খলা ভঙ্গকারী ও অপরাধীদের গ্রেপ্তার কার্যক্রম জোরদার করা, বিভিন্ন অপরাধী ও আন্দোলন-সমাবেশে উসকানিদাতাদের রাজনৈতিক পরিচয় প্রকাশ করার সিদ্ধান্ত হয়।
এ ছাড়াও রাস্তায় সমাবেশ না করে দাবি-দাওয়া সংশ্লিষ্ট সরকারি কমিটি বা কমিশনে পেশ করা, জনভোগান্তি দূর করতে শাহবাগের পরিবর্তে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জনসভা ও সমাবেশ আয়োজন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রধানদের এ বিষয়ে নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রম নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে জনসাধারণকে জানানো, জামিনে মুক্তি পাওয়া শীর্ষ সন্ত্রাসীরা অপরাধে লিপ্ত হলে দ্রুত গ্রেপ্তারের ব্যবস্থা নেওয়া ইত্যাদি সিদ্ধান্ত হয়।
স্বরাষ্ট্র ও কৃষি উপদেষ্টা এবং কমিটির আহ্বায়ক লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী সভায় সভাপতিত্ব করেন । আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির সদস্যরা এতে অংশ নেন।
মন্তব্য করুন
আজ শনিবার তৃতীয় ভয়েস
অব গ্লোবাল সাউথ সামিটে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা
ড. মুহাম্মদ ইউনূস জানান, অন্তর্ভুক্তিমূলক, বহুবচনবাদী গণতন্ত্র রূপান্তর নিশ্চিত
করতে অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন করতে সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ।
ভারতের নয়াদিল্লিতে এই সামিট অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
শনিবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত ঢাকা থেকে এই সামিটে যুক্ত দিলেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে শপথ নেওয়ার পর এটিই ড. ইউনূসের প্রথম কোনো আন্তর্জাতিক কর্মকাণ্ড, যেখানে একাধিক দেশ যুক্ত ছিল। এই সামিটের উদ্বোধনী অধিবেশন রাষ্ট্রপ্রধান বা সরকারপ্রধান পর্যায়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
সামিটে প্রধান উপদেষ্টা
বলেন, নির্বাচন ব্যবস্থা, বিচার ব্যবস্থা, স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা, গণমাধ্যম,
অর্থনীতি ও শিক্ষা ব্যবস্থা সংস্কার করা অন্তর্বর্তী সরকারের অন্যতম কাজ।
এ সময় ভারতের
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
এর আগে গতকাল শুক্রবার
ফোনালাপে সামিটে যোগ দেওয়ার জন্য ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে আমন্ত্রণ জানান নরেন্দ্র
মোদি। তখন আমন্ত্রণে সাড়া দিয়ে ঢাকা থেকে ভার্চুয়ালি সম্মেলনে যোগ দিতে রাজি হন
প্রধান উপদেষ্টা।
মন্তব্য করুন
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস মাগুরায় ধর্ষণের শিকার শিশুটির মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।
তিনি আসামিদের দ্রুত বিচারের আওতায় নিয়ে আসার নির্দেশ দিয়েছেন।
উল্লেখ্য, আজ দুপুর ১টায় শিশুটি সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করে।
মন্তব্য করুন
ভোক্তা পর্যায়ে তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাসের (এলপিজি) দাম কমেছে। মে মাসের জন্য ভোক্তা পর্যায়ে ১২ কেজি সিলিন্ডারের দাম ৪৯ টাকা কমিয়ে ১ হাজার ৩৯৩ টাকা নির্ধারণ করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)।
বৃহস্পতিবার (২ মে) বিইআরসি হলরুমে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন দাম ঘোষণা করেন সংস্থাটির চেয়ারম্যান মো: নূরুল আমিন। সন্ধ্যা ৬টা থেকে এ নতুন দাম কার্যকর হবে। এপ্রিল মাসে ১২ কেজি সিলিন্ডারের দাম ছিল ১ হাজার ৪৪২ টাকা।
প্রাকৃতিক গ্যাসের নতুন সংযোগ বন্ধ থাকায় গৃহস্থালি রান্নার পাশাপাশি রেস্তোরাঁ, পরিবহন, ছোট-বড় শিল্পকারখানায়ও এলপিজি ব্যবহার ব্যাপকভাবে বেড়েছে। বিইআরসি প্রতি কেজি এলপিজির খুচরা দাম ১৬ টাকা ৮ পয়সা নির্ধারণ করেছে। সে অনুযায়ী সাড়ে পাঁচ থেকে ৪৫ কেজি ওজনের সিলিন্ডারগুলোর দাম কমেছে।
মন্তব্য করুন
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবসে সকলের
মানবাধিকার নিশ্চিত করতে গোটা বিশ্বের সম্মিলিত অঙ্গীকারের সঙ্গে বাংলাদেশের একাত্মতা
জানিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস এমন একটি বিশ্ব
গড়ার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন যেখানে ন্যায়বিচার, সমতা এবং মানবিক মর্যাদা সবার
জন্য সমুন্নত থাকবে।
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষ্যে
আজ বুধবার (১১ ডিসেম্বর) দেওয়া এক বাণীতে প্রধান উপদেষ্টা এ অঙ্গীকার করেন।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমাদের অধিকার,
আমাদের ভবিষ্যৎ, এখনই’
এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে এ বছর মানবাধিকার দিবস পালিত হচ্ছে। বর্তমান বিশ্বে মৌলিক
স্বাধীনতার অবক্ষয়, ক্রমাগত বাড়তে থাকা অসমতা, অসহিষ্ণুতা, জলবায়ু সংকট, কর্তৃত্ববাদ
এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার দ্রুত উত্থানের চ্যালেঞ্জের মুখে এই প্রতিপাদ্য অত্যন্ত সময়োপযোগী
এবং প্রাসঙ্গিক।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, মানবাধিকারের সার্বজনীন ঘোষণাপত্র মর্যাদা,
সমতা এবং ন্যায়বিচার নিশ্চিতে একটি মৌলিক দলিল, যা আমাদের মনে করিয়ে দেয় মানবাধিকার
সার্বজনীন, অবিচ্ছেদ্য এবং সকল মানুষের জন্য প্রযোজ্য।
৭৬ বছর আগে মানবাধিকারের সার্বজনীন
ঘোষণাপত্র গৃহীত হওয়ার পর থেকে বিশ্বে নাগরিক মর্যাদার অগ্রগতি ঘটেছে উল্লেখ করে তিনি
বলেন, ‘তবে, বিশ্বের বিভিন্ন অংশের দীর্ঘস্থায়ী সংকট নির্দেশ করে যে বিশ্বমানবতা সৃষ্টির
জন্য আমাদের এখনো দীর্ঘ পথ পাড়ি দেওয়া বাকি।’
ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, এটি অত্যন্ত
দুঃখজনক যে, রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর দুর্দশার দিকে খুব কমই দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে। একইসঙ্গে
ফিলিস্তিনের জনগণের বিরুদ্ধে চলমান বর্বর নিপীড়নের অর্থ হলো আমরা আমাদের দায়িত্ব পালনে
ব্যর্থ। ফিলিস্তিনের জনগণের জন্য একটি ন্যায্য, দীর্ঘস্থায়ী এবং শান্তিপূর্ণ সমাধানের
জন্য সম্মিলিত উদ্যোগ নেওয়ার তাগিদ বর্তমান সময়ে সবচেয়ে বেশি।
তিনি বলেন, আমরা গর্বিত যে, নয়টি মূল
মানবাধিকার চুক্তিতে সই করা দক্ষিণ এশিয়ার একমাত্র দেশ হিসেবে বাংলাদেশ মানবাধিকারের
সার্বজনীন ঘোষণাপত্রে নিহিত মূল্যবোধকে সমুন্নত রাখতে অদম্য প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
বাংলাদেশে জুলাই গণঅভ্যুত্থান স্বাধীনতা
ও মর্যাদার জন্য আমাদের জনগণের আকাঙ্ক্ষা কতটা দৃঢ় তা প্রমাণ করে উল্লেখ করে ড. ইউনূস
বলেন, ন্যায্য অধিকারের জন্য আমাদের জনগণ তাদের দৃঢ় প্রত্যয়কে পুনর্ব্যক্ত করেছে। আমাদের
তরুণ সমাজ যে সাহস নিয়ে মানুষের অধিকার রক্ষায় ব্রত হয়েছে তা থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে আমরা
আমাদের সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে সংস্কার করার যাত্রা শুরু করেছি।
তিনি বলেন, জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলের
সদস্য হিসেবে বাংলাদেশ সর্বত্র মানবাধিকার রক্ষা ও প্রচারে অবদান রাখবে। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক
মানবাধিকার ব্যবস্থার সঙ্গে আমাদের গঠনমূলক সম্পৃক্ততা ভবিষ্যতে আরও বাড়তে থাকবে।
জনগণের মানবাধিকার সুরক্ষা এবং সুশাসন
সুনিশ্চিত করতে বাংলাদেশের বর্তমান অন্তবর্তীকালীন সরকার অঙ্গীকারাবদ্ধ উল্লেখ করে
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, সরকারের সেই ঐকান্তিক প্রত্যাশার ভিত্তিতে সার্বিক কার্যক্রমে
সহায়তা করতে ২৯-৩০ অক্টোবর ঢাকা সফরকালে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাই কমিশনার বাংলাদেশে
মানবাধিকার সংক্রান্ত একটি মিশন প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব করেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষের সাংস্কৃতিক
ও ধর্মীয় মূল্যবোধ, আর্থ-সামাজিক কাঠামো এবং বিদ্যমান বাস্তবতা বিবেচনায় রেখে সরকার
প্রস্তাবিত ধারণাটিকে ইতিবাচকভাবে নিয়েছে। বাংলাদেশ জাতীয় মানবাধিকার কমিশনসহ সরকারের
সংশ্লিষ্ট দপ্তরসমূহকে কারিগরি সহায়তা এবং প্রশিক্ষণ প্রদানের জন্য প্রস্তাবিত এই মিশনের
লক্ষ্য, উদ্দেশ্য, কর্ম-পরিধি, গঠন কাঠামো ও পরিচালনা পদ্ধতি নির্ধারণের লক্ষ্যে পররাষ্ট্র
মন্ত্রণালয় সরকারের সংশ্লিষ্ট সকল অংশীজনের অংশগ্রহণে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণ করেছে।
প্রস্তাবিত মিশনটি স্থাপনপূর্বক এটিকে কার্যকরী করার প্রক্রিয়া দ্রুততম সময়ে সম্পন্ন করার বিষয়ে সরকার আশাবাদী বলে উল্লেখ করেন তিনি।
মন্তব্য করুন
বেসামরিক বিমান পর্যটন ও ভূমি উপদেষ্টা
এ এফ হাসান আরিফের মৃত্যুতে আনুষ্ঠানিকভাবে শোক প্রস্তাব গ্রহণ করেছে উপদেষ্টা পরিষদ।
আজ রবিবার (২২ ডিসেম্বর) প্রধান উপদেষ্টার
কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত পরিষদের এক বিশেষ সভায় এই শোক প্রস্তাব গৃহীত হয়।
বন, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেষ্টা
সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান সভায় শোক প্রস্তাব উত্থাপন করলে তা সর্বসম্মতভাবে গৃহিত হয়।
সভায় রিজওয়ানা হাসান জানান, আগামীকাল
সকাল সাড়ে দশটায় মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে বীরশ্রেষ্ঠ সিপাহি হামিদুর রহমানের
কবরের পাশে হাসান আরিফকে সমাহিত করা হবে।
সভার শুরুতে উপদেষ্টা হাসান আরিফের
মৃত্যুতে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ
অন্য উপদেষ্টারা হাসান আরিফের স্মৃতিচারণ করেন।
প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ
ইউনূস বলেন, আজ ছোট ছোট অনেক কথাই মনে পড়ছে, তিনি সবসময় আমাকে মনে করিয়ে দিতেন- আমরা
কিন্তু সমবয়সী। শিশুর মতো সরল ব্যবহার ছিল তার। যতরকম সমস্যা দেখা দিয়েছে, যেখানে কোনো
কোন্দল দেখেছেন, তিনি হাজির হয়েছেন তার সমাধানে। এ এক অপূর্ব লোক, আমাদের মাঝ থেকে
চলে গেলেন।
অর্থ ও পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন
আহমেদ বলেন, হাসান আরিফ ছিলেন একজন বিরল ব্যক্তিত্ব এবং সদা হাস্যময়।
অতীতের কর্মময় জীবনের স্মৃতিচারণ করে
পাট বস্ত্র ও নৌপরিবহণ উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ব্যক্তিগতভাবে হাসান আরিফের
মৃত্যুতে আমি গভীরভাবে শোকাহত।
সমাজকল্যাণ এবং নারী ও শিশু মন্ত্রণালয়ের
উপদেষ্টা শারমীন মুরশিদ বলেন, এখানে কাজ করতে এসে উনার সঙ্গে একটা সুন্দর সম্পর্ক গড়ে
উঠেছিলো। উনি আমাদের জন্য ছিলেন এক ইতিবাচক প্রেরণা।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা
আখতার বলেন, আজকে আমাদের উপদেষ্টা পরিষদের সভায় আমরা হাসান আরিফকে মিস করছি। উনাকে
ছাড়া আমাদের অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে যাবে।
গৃহায়ণ ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান
খান আইনজীবী হিসেবে হাসান আরিফের সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে বলেন, উনি ছিলেন
মানবাধিকার রক্ষায় সব সময় সোচ্চার।
সভায় আদিলুর রহমান জানান, মানবাধিকার
সংগঠন অধিকারের প্রতিষ্ঠাতা সহ-সভাপতি হিসেবেও কাজ করেছেন হাসান আরিফ।
আইন ও বিচার এবং প্রবাসী কল্যাণ উপদেষ্টা
আসিফ নজরুল বলেন, হাসান আরিফ ছিলেন একজন কর্মনিষ্ঠ ও পরিশ্রমী মানুষ। সবগুলো নথি তিনি
খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখতেন।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন বলেন,
হাসান আরিফ কখনো কোনো কাজকে কম গুরুত্বের সঙ্গে নিতেন না।
স্বরাষ্ট্র ও কৃষি উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর
আলম চৌধুরী বলেন, হাসান আরিফ ছিলেন অমায়িক এক মানুষ, যেকোনো সমস্যা উনার সঙ্গে আলোচনা
করে সমাধান করা যেত।
জ্বালানি ও সড়ক পরিবহন উপদেষ্টা মুহাম্মদ
ফাওজুল কবির খান বলেন, আমাদের সমাজে বিভেদ অনেক বেশি। এই বিভেদ জোড়া লাগানোর মানুষ
আস্তে আস্তে কমে যাচ্ছে। সর্ব মহলে উনার গ্রহণযোগ্যতা ছিল।
১৯৯৭ সালে পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি
চুক্তি স্বাক্ষরের সময় হাসান আরিফের ভূমিকা স্মরণ করে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক উপদেষ্টা
সুপ্রদীপ চাকমা বলেন, উনি পার্বত্য চট্টগ্রামের মানুষদের নিয়ে অনেক ভাবতেন। তাঁর মৃত্যুতে
সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হলো পার্বত্য অঞ্চলের মানুষদের।
স্থানীয় সরকার ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ
মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেন, উপদেষ্টা পরিষদে এসে হাসান আরিফকে চিনেছি, উনাকে সব সময় শিক্ষকের
মতো পাশে পেয়েছি।
তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বলেন, উনার
সঙ্গে কাজ করতে গিয়ে একবারও আমাদের বয়সের পার্থক্য বুঝতে পারিনি। তিনি সবার সঙ্গে আন্তরিকভাবে
মিশতেন।
খাদ্য উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার বলেন,
২০০৮ সালে অংশগ্রহণমূলক একটি নির্বাচন আয়োজনে আন্তরিকভাবে কাজ করতে দেখেছি উনাকে। এবারও
উনি অত্যন্ত নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করেছেন।
সভায় আরো বক্তব্য রাখেন মন্ত্রী পরিষদ
সচিব শেখ আব্দুর রশীদ, বেসামরিক বিমান সচিব নাসরীন জাহান, ভূমি সচিব এ এস এম সালেহ
আহমেদ।
মন্তব্য করুন
সারাদেশে ট্রেনের টিকিট কালোবাজারি চক্র উত্তম ও সেলিম সিন্ডিকেটের মূলহোতাসহ ১৪ জন সক্রিয় সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র্যাব ।
কয়েকটি চক্র রেলস্টেশনে কর্মরত অসাধু কর্মচারী, সহজ ডটকমের অসাধু কর্মকর্তা, সার্ভার রুম ও আইটি সদস্যদের সহযোগিতায় ট্রেনের টিকিট কালোবাজারি করতো । এছাড়া সংরক্ষণ করা জনসাধারণের এনআইডির তথ্য ব্যবহার করে এমনকি সার্ভার ডাউন করে অনলাইনে টিকিট সংগ্রহ করতো এসব চক্র।
বৃহস্পতিবার (২৫ জানুয়ারি) রাতে রাজধানীর কমলাপুর ও বিমানবন্দর এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করে র্যাব -৩।
গ্রেফতাররা হলেন- ট্রেনের টিকেট কালোবাজারির সেলিম সিন্ডিকেটের মূলহোতা মো. সেলিম (৫০), তার প্রধান সহযোগী মো. আনোয়ার হোসেন ওরফে কাশেম (৬২), অবনী সরকার সুমন (৩৫), মো. হারুন মিয়া (৬০), মো. মান্নান (৫০), মো. আনোয়ার হোসেন ওরফে ডাবলু (৫০), মো. ফারুক (৬২), মো. শহীদুল ইসলাম বাবু (২২), মো. জুয়েল (২৩) ও মো. আব্দুর রহিম (৩২)।তাদের তথ্যের ভিত্তিতে বিমানবন্দর রেলস্টেশন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে উত্তম সিন্ডিকেটের মূলহোতা উত্তম চন্দ্র দাস (৩০), তার প্রধান সহযোগী মো. মোর্শিদ মিয়া ওরফে জাকির (৪৫), আব্দুল আলী (২২) ও মো. জোবায়েরকে (২৫) গ্রেফতার করা হয়।
এসময় তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় এক হাজার ২৪৪টি আসনের টিকিট, ১৪টি মোবাইল ফোন এবং টিকিট বিক্রির নগদ ২০ হাজার টাকা।
শুক্রবার (২৬ জানুয়ারি) দুপুরে কারওয়ান বাজার র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।তিনি বলেন, অনলাইনে বা রেল স্টেশনের টিকিট কাউন্টারে টিকিট পাওয়া না গেলেও কালোবাজারে বেশি দামে টিকিট বিক্রি হতে দেখা যায়। টিকিট কালোবাজারিরা বিভিন্ন কৌশলে ট্রেনের টিকিট অগ্রিম সংগ্রহ করে অবৈধভাবে নিজেদের কাছে মজুত করে রেখে সাধারণ যাত্রীদের কাছ দেড় থেকে দুই গুণ বেশি দামে টিকিট বিক্রি করছে।
সাম্প্রতিক সময়ে ঢাকা-কক্সবাজার রুটে সরাসরি ট্রেন চলাচল শুরু হয় এবং এই রুটে কক্সবাজার এক্সপ্রেস ও পর্যটক এক্সপ্রেস নামের দুটি ট্রেন যাত্রা শুরু করে। দীর্ঘ এই ভ্রমণে নিরাপদ ও আরামদায়ক যাত্রার জন্য এ রুটে ট্রেনের টিকিটের ব্যাপক চাহিদা দেখা দেয়। টিকেটের চাহিদা বেশি থাকায় টিকিট কালোবাজারিদের দৌরাত্ম্যও বেড়ে যায়; অনলাইনে বা কাউন্টারে টিকিট বিক্রি শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই শেষ হয়ে যায় এই রুটের ট্রেনের টিকিট। কিন্তু কালোবাজারিদের কাছে ২-৩ গুণ দামে টিকিট বিক্রি হতে দেখা যায়।চাহিদা অনুযায়ী টিকিট না পাওয়ার এবং টিকিট কালোবাজারিরা বেশি দামে টিকিট বিক্রির বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় ব্যাপক সমালোচিত হয়। ট্রেনের টিকিট কালোবাজারি প্রতিরোধ ও কালোবাজারিদের আইনের আওতায় নিয়ে আসতে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে ১৪ জনকে গ্রেফতার করে র্যাব ।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতাররা ট্রেনের টিকিট কালোবাজারির সঙ্গে তাদের সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে কিছু তথ্য প্রদান করেছে ।
স্টেশনে কুলি, টোকাই, রিকশাওয়ালা ও দিনমজুরদের লাইনে দাঁড় করিয়ে টিকিট সংগ্রহ:
কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, কমলাপুর রেলস্টেশনে সেলিম সিন্ডিকেটের মূলহোতা সেলিম এবং বিমানবন্দর রেলস্টেশনে উত্তম সিন্ডিকেটের মূলহোতা উত্তমের নেতৃত্বে এ চক্রটি সংঘবদ্ধভাবে দীর্ঘদিন ধরে মহানগর প্রভাতী, তূর্ণা নিশিথা, চট্টলা এক্সপ্রেস, উপবন এক্সপ্রেস, মহানগর এক্সপ্রেস, পারাবত এক্সপ্রেস, উপকূল এক্সপ্রেস, জয়ন্তিকা এক্সপ্রেস, কালনী এক্সপ্রেসসহ বিভিন্ন ট্রেনের টিকিট কালোবাজারি করে আসছিল। গ্রেফতার সেলিম এবং উত্তমের নেতৃত্বে তার সহযোগীরা প্রথমত ট্রেনের কাউন্টারে বিভিন্ন ভ্রাম্যমাণ যাত্রী, রেলস্টেশনের কুলি, স্টেশনের আশেপাশের এলাকার টোকাই, রিকশাওয়ালা ও দিনমজুরদের টাকার প্রলোভন দেখিয়ে লাইনে দাঁড় করিয়ে টিকিট সংগ্রহ করত।
যাত্রীদের এনআইডি সংগ্রহ করে পরবর্তীতে সেগুলো ব্যবহার করে কাটা হতো টিকিট:
এক্ষেত্রে তাদের প্রত্যেককে চারটি করে টিকিট সংগ্রহ করার বিনিময়ে ১০০ টাকা করে দেওয়া হতো। এছাড়াও কাউন্টারে থাকা কিছু অসাধু টিকিট বুকিং কর্মচারীদের দিয়ে বিভিন্ন সাধারণ যাত্রীদের টিকিট কাটার সময় এনআইডি সংগ্রহ করে রাখে এবং পরবর্তীতে সেগুলো ব্যবহার করে সংরক্ষণকৃত প্রতিটি এনআইডি দিয়ে চারটি করে ট্রেনের টিকিট সংগ্রহ করে থাকে।
প্রতিদিন ৫০০ টিকিট সংগ্রহ করতো তারা:
এভাবে তারা প্রতিদিন প্রায় পাঁচ শতাধিক টিকিট সংগ্রহ করতো। অনেক ক্ষেত্রে টিকিট কাউন্টারে নিজেরা লাইনে দাড়িয়ে এবং কৌশলে লাইনে অপেক্ষমান টিকিটপ্রত্যাশী সাধারণ যাত্রীদের এনআইডি ব্যবহার করে চারটি টিকিট কিনে তিনটি টিকিট নিজেরা তার কাছ থেকে টাকা দিয়ে টিকিটগুলো কিনে নিতো।
সার্ভার ডাউন করে তারা অনলাইনে টিকিট সংগ্রহ:
র্যাবের মুখপাত্র বলেন, ঈদ, পুজা, সাপ্তাহিক ছুটিসহ বিশেষ ছুটির দিনকে উপলক্ষ করে গ্রেফতাররা রেলস্টেশনে কর্মরত কিছু অসাধু কর্মচারী এবং অনলাইনে টিকিট ক্রয়ের জন্য ব্যবহৃত ভেন্ডর প্রতিষ্ঠান সহজ ডটকমের কিছু অসাধু কর্মকর্তা ও সার্ভার রুম ও আইটি সদস্যদের সহযোগিতায় তাদের কাছে সংরক্ষিত জনসাধারণের এনআইডির তথ্য ব্যবহার করে এমনকি সার্ভার ডাউন করে তারা অনলাইনে টিকিট সংগ্রহ করতো।
শিক্ষার্থীদের দিয়ে অনলাইনে টিকিট কাটানো হতো:
কমান্ডার মঈন বলেন, পাশাপাশি গ্রেফতাররা বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের দিয়ে অনলাইনে টিকিট কেটে সেগুলো তাদের কাছ থেকে সংগ্রহ করতো। গ্রেফতাররা স্টেশনে থাকা তাদের সিন্ডিকেটের সদস্যদের দিয়ে কাউন্টার থেকে স্ট্যান্ডিং টিকেট সংগ্রহ করতো। এসব টিকিটের মূল্য কাউন্টারের বুকিং কর্মচারীদের সঙ্গে তারা ভাগ করে নিতো। ফলে রেলওয়ে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এভাবে গ্রেফতাররা অবৈধভাবে বিভিন্ন পন্থায় বিপুল সংখ্যক ট্রেনের টিকিট সংগ্রহ করতো।
গ্রেফতারকৃত সেলিম ও উত্তমের নেতৃত্বে তার সহযোগীরা উপযুক্ত সময় বুঝে সংগ্রহকৃত টিকিট নিয়ে রেলস্টেশনের ভেতরে অবস্থান করে। রেলস্টেশনে এসে টিকিট না পাওয়া সাধারণ যাত্রীদের কাছে গ্রেফতাররা টিকিট বিক্রির জন্য ঘুরাঘুরি করে এবং বেশি দামে টিকিট বিক্রি করে। এছাড়াও ট্রেন ছাড়ার সময় যত সন্নিকটে আসতে থাকে তাদের মজুত করা কালোবাজারি টিকিটের দাম তত বাড়তে থাকে এবং সুযোগ বুঝে অনেক ক্ষেত্রে টিকিটের দাম দিগুণেরও বেশি বাড়িয়ে দেয়।
ঈদের সময় ৪ গুণ দামে টিকিট বিক্রি:
র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক বলেন, ঈদের ছুটিসহ বিভিন্ন ছুটিকে কেন্দ্র করে গ্রেফতাররা প্রতিটি টিকেট ৩-৪ গুণ বেশি মূল্যে বিক্রি করে। প্রতিটি টিকিট তারা দেড় গুণ থেকে দুই গুণে বিক্রি করে এই লভ্যাংশের ৫০ শতাংশ পায় গ্রেফতাররা নিতো এবং বাকি ৫০ শতাংশ কাউন্টারে থাকা বুকিং কর্মচারী ও তাদের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, সহজ ডটকমের কর্মচারী-কর্মকর্তা ও আইটি বিশেষজ্ঞদের দেওয়া হতো।
৩৫ বছর ধরে টিকিট কালোবাজারি করেছে সেলিম:
কমান্ডার মঈন জানান, গ্রেফতার সেলিম দীর্ঘ প্রায় ৩৫ বছর ধরে টিকিট কালোবাজারির সঙ্গে জড়িত। তিনি কমলাপুর রেলস্টেশনে ট্রেনের টিকিট কালোবাজারি সেলিম সিন্ডিকেটের মূলহোতা। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় টিকিট কালোবাজারির দায়ে সাতটি মামলা রয়েছে এবং এসব মামলায় বিভিন্ন মেয়াদে কারাভোগও করেছেন তিনি। সে জামিনে মুক্তি পেয়ে পুনরায় আবার টিকিট কালোবাজারির কার্যক্রমে লিপ্ত হয়।
১৫ বছর ধরে টিকিট কালোবাজারিতে জড়িত কাশেম:
তিনি বলেন, গ্রেফতার আনোয়ার হোসেন ওরফে কাশেম প্রায় ১৫ বছর ধরে ট্রেনের টিকিট কালোবাজারির সঙ্গে জড়িত। তিনি গ্রেফতার সেলিমের অন্যতম প্রধান সহযোগী। মূলত তার দায়িত্ব ছিল কাউন্টার থেকে ট্রেনের টিকিট সংগ্রহ করা। এর আগে তিনি মাদক মামলাসহ একাধিক মামলায় বিভিন্ন মেয়াদে কারাভোগ করেছেন।
এছাড়াও গ্রেফতার অবনী সরকার ও হারুন মিয়ার দায়িত্ব ছিল চট্টগ্রাম এলাকার কাস্টমার সংগ্রহ করা। একইভাবে মান্নান এবং আনোয়ার ওরুফে ডাবলুর দায়িত্ব ছিল সিলেট এলাকার কাস্টমার সংগ্রহ করা। ফারুক এবং শহীদুল ইসলাম বাবুর দায়িত্ব ছিল ভৈরব ও কিশোরগঞ্জের কাস্টমার দেখাশোনা করা। জুয়েল এবং আব্দুর রহিমের দায়িত্ব ছিল ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও আখাউড়ার যাত্রী সংগ্রহ করা। এছাড়াও গ্রেফতারদের সবার বিরুদ্ধে টিকিট কালোবাজারির মামলা রয়েছে।
১৫ বছর ধরে টিকিট কালোবাজারি করেছে উত্তম:
কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, গ্রেফতার উত্তম প্রায় ১৫ বছর ধরে ট্রেনের টিকেট কালোবাজারির সঙ্গে জড়িত। তিনি বিমানবন্দর রেলস্টেশনের টিকিট কালোবাজারি চক্র উত্তম সিন্ডিকেটের মূলহোতা। তার সহযোগী গ্রেফতার আলী ও ফারুকসহ রাজধানীর আশকোনা এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় অবস্থান করে এসব কার্যক্রম পরিচালনা করত। তিনি শারীরিক প্রতিবন্ধী এবং এই সহানুভূতিকে কাজে লাগিয়ে রেলস্টেশন এলাকায় সবসময় অবস্থান করে টিকিট কালোবাজারি চক্র গড়ে তোলে।
উত্তমের বিরুদ্ধে টিকিট কালোবাজারির দায়ে চারটি মামলা রয়েছে। এসব মামলায় তিনি বিভিন্ন মেয়াদে কারাভোগ করেছেন।পরে জামিনে মুক্তি পেয়ে আবারও টিকিট কালোবাজারির কাজে লিপ্ত হন।
মন্তব্য করুন
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম
আলমগীরের সাথে বাংলাদেশে নিযুক্ত নেপালের রাষ্টদূত ঘনশ্যাম ভান্ডারি আজ সোমবার (২৮
অক্টোবর) রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপার্সনের কার্যালয়ে সাক্ষাত করেছেন।
বৈঠককালে উভয় নেতা দু’দেশের বিদ্যমান
পারস্পরিক সম্পর্ক সুদৃঢ় করার পাশাপাশি মানবাধিকার, সুশাসন, দ্বি-পাক্ষিক ও আঞ্চলিক
স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।
বৈঠক শেষে, বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে জানান, দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা
সংস্থা-‘সার্ক’কে সত্যিকারার্থে কার্যকর আঞ্চলিক সংস্থা হিসেবে গড়ে তোলার ওপর গুরুত্ব
দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, নেপালের সাথে আমাদের সম্পর্ক
দীর্ঘদিনের। দ্বি-পাক্ষিক ও আঞ্চলিক সহযোগিতা ও সম্ভাবনার নানা বিষয় নিয়ে আমরা আলোচনা
করেছি। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে নেপালের সাথে আমাদের সম্পর্ক আরো সুদৃঢ় করতে মানবাধিকার,
সুশাসন, দ্বি-পাক্ষিক ও আঞ্চলিক সম্পর্কের
প্রতিফলন আগামী দিনগুলোতেও আমরা দেখতে চাই।
মন্তব্য করুন
শনিবার
(১০ আগস্ট) বিকেলে সেনাবাহিনীর ৩৩ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি মেজর জেনারেল মোহাম্মদ
জাহাঙ্গীর আলম কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানা পরিদর্শন করেন।
এ
সময় কুমিল্লা সেনানিবাসের সিনিয়র কর্মকর্তারা ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক
খন্দকার মু: মুশফিকুর রহমান, কুমিল্লা পুলিশ সুপার মো: সাইদুল ইসলাম ।
থানা পরিদর্শন শেষে সেনাবাহিনীর ৩৩ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও থানার ভারপ্রাপ্ত
কর্মকর্তা ফিরোজ হোসেনের সাথে কথা বলেন।
উল্লেখ্য যে, সরকার পতনের পর সারাদেশে হামলা-সহিংসতায় থানাগুলোতে
লুটপাট-ভাংচুর হয়। এর ফলে স্বাভাবিক কার্যক্রমে ব্যাঘাত ঘটে। সম্প্রতি সেনাবাহিনীর
পাহারা ও সহযোগিতায় থানায় আবার স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরে আসতে শুরু করেছে।
মন্তব্য করুন
সরকারি চাকুরী শেষে
ফেয়ারওয়েল আছে, আছে এককালীন আর্থিক সুবিধা ও পেনশন সহ নানা ধরনের সুযোগ-সুবিধা।
কিন্তু যারা আল্লাহর ঘর মসজিদে খেদমতের কাজ করেন, দীর্ঘ দিন কাজ করার পরও তাদের
ভাগ্য জুটে না কোনো বিদায় সংবর্ধনা। তবে এবার স্থানীয় একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের
ব্যতিক্রমী উদ্যোগ একই মসজিদে ৩৬ বছর খেদমত শেষে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে একজন
মুয়াজ্জিন পেলেন রাজকীয় বিদায় সংবর্ধনা।
শুক্রবার (২ ফেব্রুয়ারি) জুমার নামাজ শেষে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জের নরোত্তমপুর
গ্রামের গুড়াগাজী বেপারী বাড়ি মসজিদে তাকে এ সংবর্ধনা দেয়া হয়।
জানা যায়, গুড়াগাজী জামে মসজিদের মুয়াজ্জিন মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন হুজুর। তিনি একই
মসজিদে একটানা ৩৬ বছর, ৩ যুগেরও অধিক সময় মুয়াজ্জিন হিসেবে খেদমত করে গেছেন। বয়স
এবং কর্মক্ষমতা কমে যাওয়ায় দীঘ কর্মজীবন শেষে তিনি অবসর নেন। তার এই দীর্ঘ খেদমত
জীবনকে স্মরণীয় করতে রাখতে মসজিদ কমিটির পরিচালনা পরিষদ ও স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী
সংগঠন মানবতা এক্সপ্রেসের পক্ষ থেকে বিদায়ী সংবর্ধনা দেওয়া হয়।
এ উপলক্ষে এলাকার হাজারো মুসল্লির উপস্থিতিতে তাদের পক্ষ থেকে নগদ এক লাখ
পঞ্চাশ হাজার টাকা সহ পরিবারের সদস্যদের জন্য উপহার সামগ্রী প্রদান করা হয়েছে মুয়াজ্জিনকে।
এই সময় হাজারো মুসল্লি কয়েকটি পিকআপভ্যান এবং ফুলসজ্জিত একটি মাইক্রোবাসে করে
মুয়াজ্জিন মোহাম্মদ হেলাল হুজুরকে ফুলেল শুভেচ্ছায় পুরো গ্রাম ঘুরিয়ে নিজ বাড়ীতে
পৌঁছে দেন। এইদিকে একজন দীর্ঘদিন মসজিদে খেদমত জীবন শেষে এমন শুভেচ্ছার উদ্যোগকে
স্বাগত জানান এলাকার অনেক উচ্চপর্যায়ের ব্যক্তিবর্গ।
একজন সাধারণ মুয়াজ্জিন হিসেবে এমন বিরল সম্মান পেয়ে সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে
আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন মুয়াজ্জিন মোহাম্মদ হেলাল হুজুর।
অনুষ্ঠিত সংবর্ধনায় বক্তব্য রাখেন, মসজিদের উপদেষ্টা ও দৈনিক নয়াদিগন্তের নোয়াখালী
অফিস প্রধান মুহাম্মদ হানিফ ভুঁইয়া, সাংবাদিক তাজুল ইসলাম মানিক, স্থানীয় ইউপি
সদস্য জিল্লুর রহমান, সমাজ সেবক শরীফ উল্লাহ, সাংবাদিক মোঃ সুমন ভূঁইয়া,
মানবতা এক্সপেসের মনির হোসেন, মনসাদ আলম প্রমূখ।
এ সময় বক্তারা বলেন, সরকারি এবং বেসরকারি অনেক প্রতিষ্ঠানে চাকুরী জীবন শেষে
এককালীন আর্থিক সুবিধা ও পেনশন সহ নানা সুযোগ-সুবিধা আছে। কিন্তু আল্লাহর ঘর
মসজিদের খতিব, মুয়াজ্জিনদের জন্য এ সুবিধা না থাকলেও গুড়াগাজী জামে মসজিদের
মুয়াজ্জিন মোহাম্মদ হেলাল হুজুরের সম্মানজনক রাজকীয় বিদায় সংবর্ধনার এই উদ্যোগ
আগামীতে অন্যান্য মসজিদের খতিব, মুয়াজ্জিনদের সম্মানে নতুন দিগন্ত উন্মেচিত হবে।
মন্তব্য করুন