

বাংলাদেশ
জামায়াতে ইসলামী আগামী ৩ জানুয়ারি ঢাকায় মহাসমাবেশের ডাক দিয়েছে। ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র
ও জুলাই বিপ্লবের অন্যতম নেতা শহীদ শরীফ ওসমান হাদির হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার ও বিচার
এবং দেশব্যাপী অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের দাবিতে এ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।
দলটি
জানায়, আগামী শুক্রবার দুপুর ১২টায় রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে মহাসমাবেশ শুরু
হবে। জামায়াতের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সাম্প্রতিক বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
মহাসমাবেশ
সফল করতে সোমবার (২২ ডিসেম্বর) রাতে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ শাখার নেতাদের নিয়ে
সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। দলীয় সূত্রে জানা গেছে, সমাবেশে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে
এক মিলিয়নেরও বেশি নেতাকর্মীর অংশগ্রহণের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। তৃণমূল পর্যায়েও
প্রস্তুতি কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
কর্মসূচির
উদ্দেশ্য সম্পর্কে জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ড. হামিদুর রহমান আযাদ বলেন,
জুলাই বিপ্লবের অগ্রসৈনিক শহীদ ওসমান হাদির হত্যাকারীদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক
বিচার নিশ্চিত করতে হবে। একই সঙ্গে দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়া সব অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার এবং সন্ত্রাসীদের
আটক করার দাবি জানান তিনি। তিনি আরও বলেন, এসব মৌলিক দাবি পূরণ না হলে আসন্ন নির্বাচনের
জন্য প্রয়োজনীয় ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ বা সমান সুযোগ নিশ্চিত করা সম্ভব হবে
না।
মন্তব্য করুন


বিএনপির
ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেশে ফেরা নিয়ে সরকারের তরফ থেকে কোনো আপত্তি
বা বিধি-নিষেধ নেই বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেসসচিব শফিকুল আলম।
আজ
শনিবার (২৯ নভেম্বর) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এ কথা
বলেন।
পোস্টে
তিনি উল্লেখ করেন, ‘তারেক রহমানের আজকের বক্তব্য যে, এখনই দেশে ফেরার বিষয় সিদ্ধান্ত
নেওয়ার সুযোগ তার জন্য অবারিত ও একক নিয়ন্ত্রণাধীন নয়’,
এটা উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টার প্রেসসচিব শফিকুল আলমের কাছে জানতে চাওয়া হয় যে
তার বাংলাদেশ প্রত্যাবর্তনের বিষয়ে সরকারের তরফ থেকে কোনো ধরনের বিধি-নিষেধ রয়েছে
কি না?
তিনি
লিখেছেন, ‘প্রেসসচিব জানান যে এ ব্যাপারে সরকারের তরফ থেকে কোনো বিধি-নিষেধ অথবা কোনো
ধরনের আপত্তি নেই।’ তিনি আরো উল্লেখ করেন, ‘খালেদা জিয়ার
শারীরিক অবস্থা নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস ইতোমধ্যে গভীর উদ্বেগ
প্রকাশ করেছেন এবং তার জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন।
এর
আগে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে মায়ের অসুস্থতা ও দেশে ফেরা প্রসঙ্গে পোস্ট করেন তারেক
রহমান। সেখানে তিনি উল্লেখ করেন, এমন সংকটকালে মায়ের স্নেহ স্পর্শ পাওয়ার তীব্র আকাঙ্ক্ষা
যেকোনো সন্তানের মতো আমারও রয়েছে। কিন্তু অন্য আর সবার মতো এটা বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে
আমার একক সিদ্ধান্ত গ্রহণের সুযোগ অবারিত ও একক নিয়ন্ত্রণাধীন নয়। স্পর্শকাতর এই
বিষয়টি বিস্তারিত বর্ণনার অবকাশও সীমিত।
মন্তব্য করুন


অন্তর্বর্তী
সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস আগামী সোমবার দুই দিনব্যাপী সিভিল
সার্জন সম্মেলন উদ্বোধন করবেন।
আজ
বৃহস্পতিবার (৮ মে) এক তথ্য বিবরণীতে এ কথা জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে
বলা হয়েছে, প্রধান উপদেষ্টা আগামী ১২ মে (সোমবার) সকাল ১০টা ৩০ মিনিটে তাঁর তেজগাঁওস্থ
কার্যালয়ে সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন।
মন্তব্য করুন


আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও চলমান
রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার জন্য প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস আজ
বিকেল ৫টায় সাতটি রাজনৈতিক দল ও একটি সংগঠনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং মঙ্গলবার
জানিয়েছে, রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। এতে সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক
দলের শীর্ষ নেতারা অংশ নেবেন।
বৈঠকে অংশ নেবে এবি পার্টি, নাগরিক
ঐক্য, গণসংহতি আন্দোলন, গণঅধিকার পরিষদ, এলডিপি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, জাতীয় গণফ্রন্ট
এবং হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ।
মন্তব্য করুন


নতুন দল গঠন করে নেতৃত্বে আসা ও সরকার থেকে
পদত্যাগের বিষয়ে এ সপ্তাহের শেষে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি এবং তথ্য ও
সম্প্রচার উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাবেন বলে জানিয়েছেন ।
ডিসি সম্মেলনের দ্বিতীয় দিন সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে কার্য অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়।
এরপর রাত ১০টার দিকে ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে সাংবাদিকদের প্রশ্নে জানান, আমি এ বিষয়ে আমার অবস্থান ব্যক্ত করেছি মিডিয়ার বিভিন্ন জায়গায়। তবে বিভিন্ন সংবাদপত্র বা মিডিয়ায় যেভাবে তথ্য আসছে আমি মনে করি যে এভাবে আসা উচিত না। কারণ আনুষ্ঠানিক কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে সেটা প্রকাশের আগেই, কোনো ধরনের অনুমানের ওপর ভিত্তি করে এ ধরনের তথ্যগুলো ছড়ানো উচিত হচ্ছে না।
নাহিদ ইসলামের কাছে প্রশ্ন ছিল- ছাত্র জনতার
নেতৃত্বে একটি নতুন দল আসছে, আমরা যতটুকু জানতে পেরেছি নতুন দল আপনার নেতৃত্বকে
বেছে নিয়েছে, তারা চায় আপনি সেই দলের নেতৃত্ব দেন। সে ক্ষেত্রে আপনার অবস্থান
কী? সেই দলে যদি আপনি যেতে চান তাহলে উপদেষ্টার পর থেকে সরে আসতে হবে- সে বিষয়ে
আপনি কী ভাবছেন?
প্রশ্নের জবাবে নাহিদ ইসলাম বলেন, বাইরে যারা আছে, বৈষম্যবিরোধী নাগরিক কমিটি তারা একটা রাজনৈতিক দলের উদ্যোগের কথা বলেছে অনেক আগেই, ফেব্রুয়ারির মধ্যে। আমি আমার জায়গাতে বলেছি যে, সেই দলে যুক্ত হওয়ার সম্ভাবনা হয়তো আমার থাকতে পারে। তো সেটা হলে আমি সরকার থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে পদত্যাগ করেই সেটি করবো। সে বিষয়ে আমি এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেইনি। কিন্তু সেটা সম্ভাবনা আছে। হয়তো এ সপ্তাহের শেষে আমি এ বিষয়ে একটা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আপনাদের সবাইকে জানাতে পারব।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সরকারের
পতনের পর ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের
উপদেষ্টার দায়িত্ব নেন মো. নাহিদ ইসলাম।
মন্তব্য করুন


ত্রয়োদশ
জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট আগামী ফেব্রুয়ারি মাসের ৮ থেকে ১২ তারিখের মধ্যে অনুষ্ঠিত
হবে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার। তিনি জানান, এই সময়ের
মধ্যেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে, তবে ৮ তারিখের এক–দুদিন পরে বা ১২ তারিখের এক–দুদিন
আগে—মাঝামাঝি কোনো এক সময় নির্বাচন হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। ৮
ফেব্রুয়ারি রোববার এবং ১২ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার হওয়ায় মঙ্গলবারের দিকেই ভোটগ্রহণ
হতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি।
এদিকে
ভোটের তফসিল চূড়ান্ত করতে আগামী সপ্তাহের রোববার (৭ ডিসেম্বর) নির্বাচন কমিশনের বৈঠক
অনুষ্ঠিত হবে। ওই বৈঠকেই নির্বাচনের সব তারিখ নির্ধারণ করা হবে। বৈঠকের পর দু-তিন দিন
সময় রেখে বৃহস্পতিবারের (১১ ডিসেম্বর) দিকে তফসিল ঘোষণা করা হতে পারে বলে জানা গেছে।
গণভোট
ও সংসদ নির্বাচন একসঙ্গে অনুষ্ঠিত হওয়ায় ভোটগ্রহণের সময় বাড়ানোর বিষয়টিও বিবেচনা করছে
নির্বাচন কমিশন। বর্তমানে সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোট চলে। এ সময় আরও এক ঘণ্টা
বাড়িয়ে নয় ঘণ্টা করার চিন্তা করা হচ্ছে। সে ক্ষেত্রে সকাল সাড়ে ৭টা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু
হয়ে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত চলতে পারে। একই কারণে ভোটকেন্দ্রে গোপন কক্ষ বা বুথের সংখ্যাও
বাড়ানো হতে পারে। নির্বাচন কমিশনার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, গণভোট ও জাতীয় নির্বাচন একই
দিনে হওয়ায় বাড়তি প্রস্তুতি প্রয়োজন হবে। এজন্য সময় ও বুথ বাড়ানোর প্রস্তাব রাখা হয়েছে।
মন্তব্য করুন


লক্ষ্মীপুরে
বেলাল হোসেন নামে এক বিএনপি নেতার ঘরে দরজায় তালা লাগিয়ে ও পেট্রল ঢেলে আগুন দেওয়ার
অভিযোগ উঠেছে। এ সময় ঘরের ভেতর আগুনে পুড়ে ওই বিএনপি নেতার সাত বছর বয়সী এক মেয়ের মৃত্যু
হয়েছে এবং তিনিসহ আরও দুই মেয়ে দগ্ধ হয়েছেন।
গতকাল
শুক্রবার গভীর রাতে সদর উপজেলার ভবানীগঞ্জ ইউনিয়নের চরমনসা গ্রামের সূতারগোপ্তা এলাকায়
এ ঘটনা ঘটে।
বেলাল
হোসেন লক্ষ্মীপুরের ভবানীগঞ্জ ইউনিয়ন বিএনপির সহসাংগঠনিক সম্পাদক এবং সূতারগোপ্তা বাজারের
সার ও কীটনাশক ব্যবসায়ী।
আগুনে
পুড়ে মারা যাওয়া শিশুর নাম আয়েশা আক্তার। দগ্ধ তিনজন হলেন, বেলাল হোসেন (৫০) ও তার
দুই মেয়ে বীথি আক্তার (১৭) ও স্মৃতি আক্তার (১৪)। এর মধ্যে বীথি আক্তার ও স্মৃতি আক্তারকে
চিকিৎসার জন্য জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে পাঠানো হয়েছে। বেলালকে
সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। আগুনে বেলাল হোসেনের ঘরটিও পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।
পরিবার
ও স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, রাতের খাবার খেয়ে বেলালের পরিবারের সদস্যরা সবাই ঘুমিয়ে
পড়েছিলেন। পরে রাত দুইটার দিকে দরজায় তালা লাগিয়ে ঘরে আগুন দিয়ে পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা।
পেট্রল ঢেলে আগুন দেওয়ায় দ্রুত তা চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে।
জেলা
বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক হাছিবুর রহমান বলেন, ‘সন্ত্রাসীরা পেট্রল ঢেলে আগুন ধরিয়ে
দেয়। এর আগে দরজায়ও তালা লাগিয়ে দেওয়া হয়। পরিকল্পিতভাবে এ কাজটি করেছে সন্ত্রাসীরা।
ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানাচ্ছি।’
লক্ষ্মীপুর
ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার রণজিৎ কুমার দাস বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে নিহত
অবস্থায় এক শিশুকে উদ্ধার করা হয়। এছাড়া দগ্ধ অবস্থায় তিনজনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে
পাঠানো হয়েছে। এর মধ্যে দুজনের অবস্থা শঙ্কাজনক। আগুন কীভাবে লেগেছে তা খতিয়ে দেখা
হচ্ছে।
লক্ষ্মীপুর
সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ওয়াহিদ পারভেজ বলেন, আগুনে পুড়ে ঘুমন্ত
এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। পরিকল্পিতভাবে ওই ঘরে কেউ আগুন লাগিয়ে দিয়েছে কি না, সেটি খতিয়ে
দেখা হচ্ছে।
মন্তব্য করুন


আগামী
জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটকে সামনে রেখে পুলিশের পক্ষ থেকে সব রাজনৈতিক দলের জন্য
নিরাপত্তা প্রটোকল সরবরাহ করা হবে।
আজ
রোববার (১৪ ডিসেম্বর) প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায়।
প্রেস
উইং জানায়, এই প্রটোকলে রাজনৈতিক নেতা এবং আসন্ন নির্বাচনের সম্ভাব্য প্রার্থীরা তাদের
বাসস্থান, কার্যালয়, চলাচল, জনসভা ও সাইবার স্পেসে কীভাবে নিরাপত্তা নিশ্চিত করবেন—সে
বিষয়ে সুস্পষ্ট নির্দেশনা দেওয়া হবে।
এছাড়া,
গণঅভ্যুত্থানের সম্মুখসারির নেতৃত্বদানকারী ও গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক নেতাদের বাড়তি
নিরাপত্তা দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
তফসিল
ঘোষণার পর দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি
ঠেকাতে এবং জণগনের জান-মালের নিরাপত্তায় নানা উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
মন্তব্য করুন


ইনকিলাব
মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদির ওপর
হামলাকে জুলাই অভ্যুত্থান নস্যাৎ করার ষড়যন্ত্রের অংশ উল্লেখ করে রাজনৈতিক দলের নেতারা
বলেছেন, এই অভ্যুত্থানকে নস্যাৎ করার সকল প্রচেষ্টা রুখে দিতে রাজনৈতিক দলগুলো ঐক্যবদ্ধ
অবস্থানে রয়েছে।
আজ
শনিবার ( ১৩ ডিসেম্বর )রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ
ইউনূসের নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে এই প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী
দল বিএনপি, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)’র নেতৃবৃন্দ।
বৈঠকে
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ ও মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বীর
বিক্রম, জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার ও সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল
অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম ও দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য
সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ, ইনকিলাব মঞ্চের সদস্য সচিব আবদুল্লাহ আল জাবের এবং আইন উপদেষ্টা
আসিফ নজরুল অংশগ্রহণ করেন। বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ওসমান হাদির ওপর হামলা পূর্ব-পরিকল্পিত
ও গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ। এর পেছনে বিরাট শক্তি কাজ করছে।
তিনি
বলেন, ষড়যন্ত্রকারীদের উদ্দেশ্য হচ্ছে নির্বাচনটি না হতে দেওয়া। এই আক্রমণটি খুবই সিম্বলিক।
তারা তাদের শক্তি প্রদর্শন করতে চায়, নির্বাচনের সব আয়োজন ভেস্তে দিতে চায়। এগুলোকে
ঐক্যবদ্ধভাবে মোকাবিলা করতে হবে। তিনি বলেন, ‘এখন পর্যন্ত যে তথ্য পাওয়া গেছে, তাতে
মনে হচ্ছে ষড়যন্ত্রকারীরা তাদের নেটওয়ার্ক বিস্তৃত করেছে। তারা প্রশিক্ষিত শুটার নিয়ে
মাঠে নেমেছে।’
বিএনপি
নেতা সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, এই পরিস্থিতিতে আমাদের অবশ্যই ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। পরস্পরের
দোষারোপ থেকে বিরত থাকতে হবে। তিনি বলেন, ‘ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে
আওয়াজ তুলতে হবে। কোনো ধরনের অপশক্তিকে আমরা বরদাস্ত করব না।’তিনি
আরও বলেন, আমাদের মধ্যে যতই রাজনৈতিক বক্তব্যের বিরোধিতা থাকুক না কেন, জাতির স্বার্থে
এবং জুলাইয়ের স্বার্থে আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতেই হবে। এ সময়ে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার এবং
ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান জোরদার করার পরামর্শ দেন তিনি।
জামায়াত
নেতা গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘সাম্প্রতিক সময়ে আমাদের নানা বক্তব্য একে অন্যকে দোষারোপ
করার প্রবণতা বাড়িয়েছে, যার ফলে আমাদের বিরোধীরা সুযোগ পেয়েছে। আমাদের পূর্বের ন্যায়
ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।’তিনি বলেন, ‘ক্ষুদ্র দলীয় স্বার্থে
আমরা একে অন্যকে প্রতিপক্ষ বানিয়ে ফেলেছি। জাতিকে বিভক্ত করে এমন কথা আমরা কেন বলব?
সব দলকে তাদের কমিটমেন্ট ঠিক করতে হবে।’
এনসিপি
প্রধান নাহিদ ইসলাম বলেন, জুলাই অভ্যুত্থানের পর থেকেই কিছু লোক এই অভ্যুত্থানকে খাটো
করার জন্য নানা অপতৎপরতা চালিয়ে আসছে। তিনি বলেন, ‘সুসংগঠিতভাবে জুলাইয়ের বিরুদ্ধে
ক্যাম্পেইন চলছে। মিডিয়া ও প্রশাসনের নানা স্তরে এই কাজ হচ্ছে। নির্বাচনের পর যারা
ক্ষমতায় আসবে, তারাও এর ভুক্তভোগী হবে। কেউই একা সরকার চালাতে পারবে না। তিনি বলেন, ‘জুলাই অভ্যুত্থান নিয়ে মিডিয়া ও সামাজিক
যোগাযোগ মাধ্যমে এমন ন্যারেটিভ তৈরি করা হচ্ছে যাতে মনে হয় যারা অভ্যুত্থান করেছে তারা
অপরাধ করেছে। আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টিকে নরমালাইজ করতে নানা চেষ্টা চলছে। টিভি টকশোতে
তারা নিয়মিত অংশ নিচ্ছে। প্রশাসনের বিভিন্ন জায়গায় বৈঠক করছে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে
মিলিত হচ্ছে এবং আদালত প্রাঙ্গণে স্লোগান দিচ্ছে। আমাদের বিশেষ কোনো নিরাপত্তার প্রয়োজন
নেই। আমরা এটা নেব না। জুলাইকে সবাই মিলে ওউন করতে হবে। জুলাইকে কে কী বলবে—এই
টানাপোড়েনে আমরা জুলাইকে শেষ করে দিচ্ছি। ষড়যন্ত্রকারীরা আমাদের অনৈক্যকে আমাদের পরাজয়
হিসেবে দেখছে। তারা ভারতে বসে যা ইচ্ছা তা-ই করছে, আর আমরা কিছুই করতে পারছি না,’ বলেন
তিনি। নাহিদ ইসলাম আরও বলেন, ‘বুদ্ধিজীবী বেশে, সাংস্কৃতিক কর্মী বেশে আওয়ামী লীগের
উদ্দেশ্য বাস্তবায়নকারীদের থামাতে হবে। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে হবে।’
হাসনাত
আবদুল্লাহ বলেন, ‘আমরা নিজেরা ঐক্যবদ্ধ থাকতে না পারলে কোনো নিরাপত্তাই আমাদের কাজে
আসবে না। রাজনৈতিক স্বার্থে দলগুলো আওয়ামী লীগকে নানা রকম সুযোগ তৈরি করে দিচ্ছে।’
প্রধান
উপদেষ্টা বলেন, আমাদের চিন্তা করতে হবে—ভবিষ্যতের জন্য আমরা কী করতে পারি।
তিনি
বলেন, শুধু সরকার নয়, সবাইকে শক্ত থাকতে হবে। নিজেদের মধ্যে যেন দ্বন্দ্ব ছড়িয়ে না
পড়ে, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। রাজনৈতিক বক্তব্য থাকবে, কিন্তু কাউকে শত্রু ভাবা বা
আক্রমণ করার সংস্কৃতি থেকে সরে আসতে হবে। নির্বাচনের সময় উত্তেজনা সৃষ্টি হয়, তবে মাথায়
রাখতে হবে—এটি যেন একটি নির্দিষ্ট মাত্রার মধ্যে নিয়ন্ত্রণে থাকে,’
বলেন তিনি।
আসিফ
নজরুল বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে হানাহানি শুরু হওয়ার পর থেকেই আওয়ামী লীগ শক্তিশালী
হয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলোকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আপনাদের শুধু দলীয়
স্বার্থ নয়, জাতীয় স্বার্থের বিষয়েও সজাগ থাকতে হবে।’
মন্তব্য করুন


ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সাম্য হত্যাকান্ডের ঘটনাটি গুরুত্বসহকারে তদন্ত করে দোষীদের বিচারের আওতায় আনা হবে বলে জানান স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।
তিনি তার ভেরিফাইড ফেসবুকে এক পোস্টে বলেন, ইতিমধ্যে সাম্য হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ঘটনাটি গুরুত্বসহকারে তদন্ত করে দোষীদের বিচারের আওতায় আনা হবে।
উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ বলেন, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানকে এক আতঙ্কের স্থান থেকে ধীরে ধীরে একটি নিরাপদ ও স্বস্তিদায়ক স্থানে রূপান্তরের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ প্রক্রিয়ায় সরকার বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও শিক্ষার্থীদের সহযোগিতা প্রত্যাশা করে।
দুর্বৃত্তের ছুরিকাঘাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শাহরিয়ার আলম সাম্য নিহত হওয়ার ঘটনায় রাত আটটার পর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জনসাধারণের প্রবেশ নিষিদ্ধসহ সাতটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া নিজের ফেসবুক পেজে দেওয়া অপর এক পোস্টে জানান।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের মধ্যে এক সভায় এসব সিদ্ধান্ত হয় বলে জানান উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ।
বৈঠকে নেওয়া অন্য সিদ্ধান্তগুলো হলো বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) সংলগ্ন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের গেট স্থায়ীভাবে বন্ধ করা, উদ্যানে অবৈধ দোকান উচ্ছেদ, মাদক ব্যবসা বন্ধ এবং পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করতে গণপূর্ত মন্ত্রণালয়, সিটি কর্পোরেশন, ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সমন্বয়ে যৌথ অভিযান পরিচালনা। নিয়মিত মনিটরিং ও অভিযানের জন্য সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের নিয়ে গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে একটি কমিটি গঠন, উদ্যানে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা ও ক্লোজড সার্কিট (সিসিটিভি) ক্যামেরা স্থাপন এবং সেগুলোর নিয়মিত মনিটরিং করা; উদ্যানে একটি ডেডিকেটেড পুলিশ বক্স স্থাপন এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যানেও রমনা পার্কের মতো সুশৃঙ্খল ব্যবস্থাপনা চালু করা।
মঙ্গলবার দিবাগত রাতে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মুক্তমঞ্চের পাশে দুর্বৃত্তের ছুরিকাঘাতে নিহত হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী শাহরিয়ার। তিনি স্যার এ এফ রহমান হল শাখা ছাত্রদলের সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক ছিলেন। এ ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে বিক্ষোভ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল খুনীদের অবিলম্বে গ্রেফতারসহ বিভিন্ন দাবিতে কর্মসূচি ঘোষণা করেছে।
মন্তব্য করুন


পিলখানা হত্যাকাণ্ড, গুম-খুন-আয়নাঘর, শাপলা ম্যাসাকার এবং ভোট ডাকাতিসহ শেখ হাসিনার ১৬ বছরের দুঃশাসনের সব গল্প ঐতিহাসিক তথ্য আকারে উপস্থাপন করা হবে জুলাই স্মৃতি জাদুঘরে।
আজ শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) বিকেলে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় এক বৈঠকে জাদুঘর নির্মাণ কর্তৃপক্ষ প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে এ তথ্য জানান।
সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী প্রধান উপদেষ্টাকে জানান, ৩১ অক্টোবর ২০২৫ এর মধ্যে এ জাদুঘরের নির্মাণকাজ শেষ হবে এবং নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে উদ্বোধন সম্ভব হবে বলে তারা আশা করছেন।
তিনি বলেন, আমরা হাসিনার দুঃশাসনের চিত্রগুলো এই জাদুঘরে প্রদর্শনের জন্য কিউরেট করছি যাতে ১৬ বছরের ফ্যাসিজমের ইতিহাস জীবন্ত থাকে। জীবন্ত থাকে সরাসরি গণভবন থেকে আসা নির্দেশনা অনুযায়ী পরিচালিত সব অত্যাচারের এবং নৃশংসতার ইতিহাস।
প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস জাদুঘর নির্মাণ সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানান এবং আশা প্রকাশ করেন এ জাদুঘরে যারা আসবেন তারা ৫ আগস্ট গণভবনে জনতার ঢলকে অনুভব করবেন।
‘মানুষের মধ্যে দুঃশাসনের বিরুদ্ধে প্রবল প্রতিরোধ গড়ে তোলার এই অনুভব নিয়ে আসাটাই এই জাদুঘরের একটা বড় কাজ,’ বলেন তিনি।
জাদুঘর নির্মাণে আইসিটি প্রসিকিউশন টিম ও গুম বিষয়ক তদন্ত কমিশনের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ চলছে বলে জানান জাদুঘরের চিফ কিউরেটর তানজীম ওয়াহাব।
তিনি বলেন, ‘আমরা মনে করছি এটি একটি ইউনিক জাদুঘর হবে। ১৬ বছরের দুঃশাসনের গল্পগুলো এই জাদুঘরে সিকোয়েন্স আকারে থাকবে। দর্শনার্থীরা জানতে পারবেন শেখ হাসিনা কীভাবে দেশ চালাতেন। ’
সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বলেন, ‘গুম-খুনের নির্দেশ দেওয়া অনেক অডিও ইতোমধ্যেই জাদুঘর কর্তৃপক্ষের হাতে এসেছে। এই অডিওগুলো জাদুঘরে রাখা হচ্ছে। শেখ হাসিনা কীভাবে গুমের শিকার পরিবারগুলোকে ডেকে এনে মিথ্যা সান্ত্বনা দিতো সে চিত্রও উঠে আসবে। ’
এ ছাড়াও জাদুঘরে একটা স্ক্রিনিং সেন্টার থাকবে যেখানে জুলাই ও ১৬ বছরের দুঃশাসন নিয়ে ডকুমেন্টারি প্রদর্শনের ব্যবস্থা থাকবে।
বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন গৃহায়ন ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, গুম সংক্রান্ত কমিশন অব ইনকোয়ারির সদস্য ড. নাবিলা ইদ্রিস, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. নজরুল ইসলাম, সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মফিদুর রহমান, বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের গভর্নিং বডির চেয়ারপারসন মেরিনা তাবাসসুম। জুলাই স্মৃতি জাদুঘরের গবেষকদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ড্যানিয়েল আফজালুর রহমান, কবি হাসান রোবায়েত, মালিহা নামলাহা, জাদুঘরের শিল্পী তেজশ হালদার জশ, মোসফিকুর রহমান জোহান, জাদুঘরের স্থপতি সালাউদ্দিন আহমেদ এবং সমন্বয়কারী হাসান এনাম।
মন্তব্য করুন