আজকের এ রাত মহিমান্বিত এক রাত। এ রাতে অসংখ্য বান্দা মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে ক্ষমা ও কল্যাণ লাভ করেন। প্রতিবছর হিজরি ক্যালেন্ডারের শাবান মাসের ১৪ তারিখ দিবাগত রাতে শবে বরাত পালন করা হয়।
ফারসি ভাষায় শব অর্থ রাত এবং বরাত অর্থ মুক্তি। শবে বরাত অর্থ মুক্তির রাত। এই রাতে মহান আল্লাহ মুক্তি ও মাগফিরাতের দুয়ার খুলে দেন। সৃষ্টিকুলের প্রতি রহমতের দৃষ্টি দেন এবং মুশরিক ও হিংসুক ছাড়া সবাইকে ক্ষমা করে দেন। এটি নিঃসন্দেহে বরকতময় রাত। রাতটি শাবান মাসের মধ্যবর্তী হিসেবে হাদিসে এই রাতকে লাইলাতুন নিসফি মিন শাবান তথা অর্ধ শাবানের রাত বলা হয়েছে। বিশ্ব মুসলিমবাসীর বিশ্বাস, এ রাতে অসংখ্য বান্দা মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে ক্ষমা ও আশীর্বাদ লাভ করে থাকে। এ কারণে এ রজনীকে ‘মুক্তির রজনী’বলা হয়।
হযরত মোহাম্মদ (সা.) এ রজনী সম্পর্কে বলেছেন, এই রাত্রিতে এবাদতকারীদের গুণাহরাশি আল্লাহ তালা ক্ষমা করে দেন। তবে কেবল আল্লাহর সঙ্গে শিরককারী, সুদখোর, গণক, যাদুকর, কৃপণ, শরাবী, যিনাকারী এবং পিতা-মাতাকে কষ্টদানকারীকে আল্লাহ মাফ করবেন না।
প্রকৃত অর্থে শবে বরাতের নামাজ বলে আলাদা কিছু নেই, যেহেতু এই রাতটি ইবাদত বন্দেগি করে কাটাতে হবে তাই হাদিসেই এই সমাধান দেয়া হয়েছে। আর বিশ্ব মুসলিম এই বিশেষ কিছু ইবাদত পালন করে থাকেন।
সন্ধ্যায়- এই রাতে মাগরিব নামাজের পর হায়াতের বরকত, ঈমানের হেফাযত এবং অন্যের মুখাপেক্ষী না হওয়ার জন্য দুই রাকাত করে মোট ৬ রাকাত নফল নামায পড়া উত্তম। এই ৬ রাকাত নফল নামাজের নিয়ম- প্রতি রাকাতে সূরা ফাতিহা এরপর যে কোন একটি সূরা পড়তে হবে। দু’রাকাত নামাজ শেষ করে সূরা ইয়াছিন বা সূরা এখলাছ ২১ বার তিলাওয়াত করতে হবে।
শবে বরাতের নফল নামাজ :
দুই রাকাত তহিয়াতুল অজুর নামাজ, নিয়ম- প্রতি রাকাতে আল হামদুলিল্লাহ (সূরা ফাতিহা) পড়ার পর, ১ বার আয়াতুল কুরসি এবং তিন বার ক্বুলহু আল্লাহ (সূরা এখলাছ)। ফজিলত: প্রতি ফোটা পানির বদলে সাতশত নেকী লিখা হবে।
দুই রাকাত নফল নামাজ, নিয়ম- ১ নম্বর নামাজের মত, প্রতি রাকাতে সূরা ফাতিহা পড়ার পর, ১ বার আয়াতুল কুরসি এবং ১৫ বার করে সূরা এখলাছ, অতঃপর সালাম ফিরানোর পর ১২ বার দুরূদ শরীফ। ফজিলত: রুজিতে বরকত, দুঃখ-কষ্ট হতে মুক্তি লাভ করবে, গুনাহ হতে মাগফিরাতের বকশিস পাওয়া যাবে।
আট রাকাত নফল নামাজ দু্রাকাত করে পড়তে হবে, নিয়ম- প্রতি রাকাতে সূরা ফাতিহার পর, সূরা এখলাছ ৫ বার করে। একই নিয়মে বাকি সব। ফজিলত: গুনাহ থেকে পাক হবে, দু’আ কবুল হবে এবং বেশি বেশি নেকী পাওয়া যাবে।
১২ রাকাত নফল নামাজ দু’রাকাত করে, নিয়ম- প্রতি রাকাতে সূরা ফাতিহার পর, ১০ বার সূরা এখলাছ এবং এই নিয়মে বাকি নামাজ শেষ করে, ১০ বার কালেমা তওহীদ, ১০ বার কলেমা তামজীদ এবং ১০ বার দুরূদ শরীফ।
১৪ রাকাত নফল নামাজ দু’রাকাত করে, নিয়ম- প্রতি রাকাত সূরা ফাতিহার পর যে কোন একটি সূরা পড়ুন। ফজিলত - যে কোনো দু’আ চাইলে তা কবুল হবে।
চার রাকাত নফল নামাজ এক সালামে পড়তে হবে, নিয়ম- প্রতি রাকাতে সূরা ফাতিহা পর ৫০ বার সূরা এখলাছ শরীফ। ফজিলত: গুনাহ থেকে এমনভাবে পাক হবে যে সদ্য মায়ের গর্ভ হতে ভূমিষ্ঠ হয়েছে।
আট রাকাত নফল নামাজ এক সালামে, নিয়ম- প্রতি রাকাতে সূরা ফাতিহার পর ১১ বার সূরা এখলাছ শরীফ। ফজিলত: এর ফজিলতে সম্পর্কে বর্ণিত আছে যে, হযরতে সৈয়্যদাতুনা ফাতেমা রাদিআল্লাহু আনহা এরশাদ করেছেন, ‘আমি ওই নামাজ আদায় কারীর সাফায়াত করা ব্যতীত জান্নাতে কদম রাখব না।
রোজার ফজিলত হুজুর সালল্লাহু তা’আলা আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেছেন, যে শাবানে ১ দিন রোজা রেখেছে, তাকে আমার সাফায়াত হবে। আরো একটি হাদিস শরীফে আছে যে, হুজুর সালল্লাহু তালা আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি শাবানের ১৫ তারিখে রোজা রাখবে, তাকে জাহান্নামের আগুন ছোঁবে না। এছাড়াও পড়তে পারেন সালাতুল তাসবীহ এর নামাজ। এই নামাজের অনেক ফজিলত রয়েছে।
রাসূলুল্লাহ সালল্লাহু তা’আলা আলাইহি ওয়া সাল্লাম স্বীয় চাচা হযরত আব্বাস রাদিআল্লাহু আনহুকে এই নামায শিক্ষা দিয়েছিলেন এবং বলেছিলেন যে, এই নামাজ পড়লে আল্লাহ আয-যাওযাল আপনার আউয়াল আখেরের সগীরা কবীরা জানা অজানা সকল গুণাহ মাফ করে দেবেন।
শবে বরাতের নামাজের নিয়ত : নাওয়াইতুআন্ উছল্লিয়া লিল্লা-হি তাআ-লা- রাকআতাই ছালা-তি লাইলাতিল বারা-তিন্ -নাফলি, মুতাওয়াজ্জিহান ইলা-জিহাতিল্ কাবাতিশ্ শারীফাতি আল্লা-হু আকবার।
বাংলায় নিয়ত করলে এই ভাবে করতে পারেন: শবে বরাতের দুই রাকাত নফল নামাজ/ সালাত কিবলামুখী হয়ে পড়ছি, আল্লাহু আকবর।
সতর্কতা
মনে রাখতে হবে ফরজ নফলের চেয়ে অনেক বড় শবে বরাতের নামাজ। যেহেতু নফল সেহেতু নফল পড়তে পড়তে ফরজ পড়া ভুলে গেলে বা ঘুমের কারণে পড়তে না পারলে হবে না । অর্থাৎ ঠিক সময় মত ফজর নামাজ যেন পড়তে পারা যায় সেই দিকে খেয়াল রাখতে হবে ।
মন্তব্য করুন
লাব্বাইক, আল্লাহুম্মা লাব্বাইক ধ্বনিতে আরাফার ময়দান মুখরিত হয়ে উঠেছে। নানা বয়সের মানুষ আল্লাহর ঘরে হাজিরা দেওয়ার জন্য পবিত্র মক্কা নগরীতে জড়ো হয়েছেন। তাদের মধ্যেই এমন এক দম্পতি আছেন, যারা বিয়ের পর নিজেদের প্রথম বিদেশ সফরে হজ করতে এসেছেন। হানিমুনের পরিবর্তে হজ করতে আসা এই দম্পতি, এই মুহূর্তকে স্মৃতি হিসেবে রেখে দিতে চাইছেন।
হেরা গুহায় জড়ো হয়েছেন একদল হজযাত্রী। কেউ কেউ তুলছেন ছবি। আবার দাঁড়িয়ে আছেন কেউ কেউ। তাদের মধ্যে দেখা মিলল এক দম্পতি। এক নারী গুহার ভেতর থেকে বের হচ্ছেন। পেছন পেছন তার স্বামী বের হচ্ছেন। এই দম্পতির নাম সুআইবা ও মোহাম্মদ আকমল রাজা। বিয়ের পর যখন সবাই হানিমুনে ছোটে, তখন এই দম্পতি এসেছেন আল্লাহর ঘরের মেহমান হয়ে।
সুআইবা জানান, আমরা একসঙ্গে এবারই প্রথম হজ করতে এসেছি। আমরা একে অপরকে উৎসাহ দিতে পেরেছি। বিবাহিত দম্পতি হিসেবে আমাদের প্রথম ভ্রমণ এটি। তাই এটা আমাদের কাছে খুবই বিশেষ। এটা আমাদের জন্য স্মৃতিময় একটি সফর হবে।
আকমল রাজা জানান, পাহাড়ের উপরে উঠতে ১ থেকে ২ ঘণ্টা লাগে। সম্প্রতিই আমাদের বিয়ে হয়েছে। এটা আমাদের ধর্মীয় এবং বৈবাহিক জীবনের আধ্যাত্মিক সংযোগ। মানুষ বিয়ের পর হাইকিংয়ে যায়। আমাদের এটাই এক ধরনের হাইকিং, তবে এটা আধ্যাত্মিক প্রকৃতির। এটা দারুণ অনুভূতি।
ভারতের গণমাধ্যম নিউজ১৮ উর্দু এক ভিডিও নিউজে জানিয়েছে, সুআইবা ও আকমল রাজা পাকিস্তানের বাসিন্দা। তারা বিয়ের পর হজ করতে এসেছেন। তবে কোনো আন্তর্জাতিক বা পাকিস্তানের স্থানীয় গণমাধ্যমে এ সংক্রান্ত কোনো সংবাদ পাওয়া যায়নি। তাদের কবে বিয়ে হয়েছে বা ভিডিওটি এ বছরের কি না তা-ও নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
মন্তব্য করুন
প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস বৈষম্য বিরোধী চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বন্ধন অটুট রেখে সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত ও সুখী-সমৃদ্ধ স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন।
দুর্গাপূজা উপলক্ষ্যে আজ গণমাধ্যমে পাঠানো এক বাণীতে তিনি এ আহ্বান জানান।
প্রধান উপদেষ্টা হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা উপলক্ষ্যে দেশের হিন্দু ধর্মাবলম্বী সকল নাগরিককে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানান।
প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, দুর্গাপূজা শুধু হিন্দু সম্প্রদায়ের উৎসবই নয়, এটি এখন সার্বজনীন উৎসবে পরিণত হয়েছে। অশুভ শক্তির বিনাশ এবং সত্য ও সুন্দরের আরাধনা শারদীয় দুর্গোৎসবের প্রধান বৈশিষ্ট্য।
বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আমাদের সংবিধানে সকল ধর্ম ও বর্ণের মানুষের সমান অধিকার সুনিশ্চিত করা হয়েছে। এই দেশ আমাদের সকলের। ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে এদেশ সকল মানুষের নিরাপদ আবাসভূমি। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-শ্রমিক-জনতার অভূতপূর্ব অভ্যুত্থানের মাধ্যমে গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকার জাতি-ধর্ম-বর্ণ-গোষ্ঠী নির্বিশেষে সকলের ভাগ্য উন্নয়ন এবং সমান অধিকার সুনিশ্চিত করতে কাজ করে যাচ্ছে।
তিনি বাংলাদেশের সকল নাগরিকের শান্তি, কল্যাণ ও সমৃদ্ধি কামনা করেছেন।
মন্তব্য করুন
১২ বছর বয়সী নুরে জারিন নুদার। বর্তমান সময়েরর ছেলে-মেয়েদের থেকে একটু আলাদা। যে বয়সে মেয়েরা মুঠোফোন নিয়ে ব্যস্ত। ওই বয়সে ক্ষুদে এ শিক্ষার্থী হাতে কোরআন লিখে পার করছে ব্যস্ত সময়। তার গল্প শুনলে অনেকেরই চোখ কপালে উঠবে। এই মাদরাসা শিক্ষার্থীর কোনো ক্লাসে পড়তে হয়নি প্রাইভেট। মাত্র ১০ মাসে নির্ভুল ভাবে সে পুরো আল-কোরআন হাতে লিখেছেন। তার দৃষ্টিনন্দন হাতের লেখা দেখলে যে কারো চোখ আটকাবে। মনে হবে এটি কম্পিউটারে ছাপা লেখা। চোখ জুড়ানো হাতের লেখায় পবিত্র কোরআন লিখে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে সে।
বর্তমানে নুদার বসুরহাট দারুল ইহসান গার্লস মাদরাসার ৬ষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী। ২০২২ সালের সেপ্টম্বর মাসের ঘটনা। তখন ১০ বছর বয়সী নুদার বাড়ির পাশের ইকরা আরাবিয়া মাদরাসার চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী। একদিন হঠাৎ মেয়ের সুন্দর আরবি হাতের লেখা চোখে পড়ে বাবার। এরপর তিনি মেয়েকে উদ্বুদ্ধ করেন পবিত্র কোরআন হাতে লিখতে। যে কথা, সেই কাজ। মেয়েকে প্রথমে এক রিম খোলা সাদা কাগজ এনে দেন তিনি। সেই থেকে শুরু। এরপর আস্তে আস্তে ১০ মাসে ২০২৩ সালের জুলাই মাসে নুদার কোরআন লিখে শেষ করেন। এরপর তার বাবা হাতে লিখা কোরআন শরীফ নিয়ে নুদারের মাদরাসার আরবী শিক্ষক মুফতি মুহা.আবদুল্লাহ আল নোমান শরনাপন্ন হন। সেই থেকে নুদারের লেখা শেষে তিনি বানান সংশোধন করে পুনঃনিরীক্ষণ করে দিতেন। তার উৎসাহে ও সহযোগিতায় নুদারের লেখা আরও গতি পায়। পরবর্তীতে পান্ডুলিপি থেকে ১০ পারা করে তিন ভাগে পুর্ণাঙ্গ কোরআন বাঁধাই করা হয়। কোরআন লিখতে ব্যবহার করা হয়েছে ৬১১টি এ ফোর সাইজের সাদা কাগজ ও ৫৫টি বলপেন কলম। মেয়ের এমন সাফল্যে উচ্ছ্বসিত মা-বাবা,দাদা-দাদী সহ এলাকাবাসী। মা-বাবার আশা মেয়ে উচ্চ শিক্ষা অর্জন করে দেশবাসীর কল্যাণে দ্বীনি শিক্ষা প্রসারে কাজ করবে। নুরে জারিন নুদার নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জের বসুরহাট পৌরসভার ৯নম্বর ওয়ার্ডের মওদুদ স্কুল এলাকার ছেলামত মঞ্জিলের মো.নুরুল হুদা মামুনের মেয়ে।
নুরে জারিন নুদার বলেন, বাবা-মায়ের উৎসাহে আমি চতুর্থ শ্রেণিতে থাকা অবস্থায় পবিত্র কোরআন মাজিদ লেখা শুরু করি। এরপর পঞ্চম শ্রেণিতে উঠলে আমার লেখা শেষ হয়। আমার এ লেখা দেখে মা-বাবা আমাকে মাদরাসায় পড়া লেখার পাশাপাশি এখন হিফজ বিভাগে ভর্তি করে দেয়। আমি দেশ বাসীর কাছে দোয়া চাই।
নুদারের বাবা মো.নুরুল হুদা, আমি প্রথমে আমার মেয়ের সুন্দর আরবি হাতের লেখা দেখে খুব আনন্দিত হই। আমারও তার শিক্ষকদের উৎসাহে ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর মাস থেকে সে কোরআন নিজ হাতে লেখা শুরু করে। যখন এক পারা লেখা সম্পন্ন হতো তখন ইকরা আরাবিয়া মাদরাসার শিক্ষক মুফতি মুহা.আবদুল্লাহ আল নোমান আরবি বানান গুলো যাচাই বাচাই করে পুনঃনিরীক্ষণ করে দিতে। এভাবে ২০২৩ সালের জুলাই মাসে পুরো কোরআন লিখে শেষ হয়। পরে পুনরায় আবার বানান পুনঃনিরীক্ষণ করে ১০ পারা করে তিন ভাগে বাধাই করা হয়। মেয়ের এমন কাজে আমি গর্বিত। এমন কাজে অন্য ছেলে মেয়েরা উদ্ধুদ্ধ হবে বলেও আমি আশা করি।
মা বিবি ফাতেমা বলেন, আমার মেয়ে নিজ হাতে কোরআন লিখেছে, আমরা তাকে উৎসাহ দিয়েছি। লেখার সময় অনেক সময় মনমানসিকতা অন্য রকম হয়ে যেত, তো লিখবো, লিখেনা। আবার মনমানসিকতা ঠিক করে আগ্রহ দিয়ে লিখতে বসত। বিশেষ করে ভালো কাজে শয়তানের প্ররোচনা থাকে। খাতা-কলমে দাগ টানা সহ বিভিন্ন ভাবে তাকে আমি সহযোগিতা করেছি। চার বছর বয়স থেকে সে নিয়মিত নামাজ পড়ে।
ইকরা আরাবিয়া মাদরাসার নাজেমে তালিমাত, মুফতি মুহা.আবদুল্লাহ আল নোমান বলেন, কোরআন লেখার যে প্রাচীন নিয়ম রয়েছে। সে অক্ষরে অত্যন্ত সুনিপুন ভাবে নুদার ১০ মাসের প্রচেষ্ঠায় কোরআন হাতে লিখে সম্পন্ন করেন। ওই সময় আমি তার লেখার তত্বাবধান করি। বোঝার উপায় নেই, এটি হাতে লিখা না, না কম্পিউটারে লিখা। তার লেখা কোরআন পুরোটাই আমি পুনঃনিরীক্ষণ করি।
ইকরা আরাবিয়া মাদরাসা মোহতামিম মাওলানা মোতালেব হোসেন পারভেজ বলেন,নুরানী বোর্ডের সমাপনী পরীক্ষায় নুদার পুরো বাংলাদেশে দশম স্থান অর্জন করে। সে একজন মেধাবী ছাত্রী। তার স্বহস্তে কোরআন লেখার এ কৃতিত্বকে আমরা স্বগত জানাই।
বসুরহাট পৌরসভা ৯নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর এবিএম ছিদ্দিক বলেন, পবিত্র কোরআন হাতে লেখার উদ্যোগ নিয়ে সম্পন্ন করার কাজটি অবশ্যই প্রশংসার দাবিদার। এতো সুন্দর ভাবে কোরআন লিখলেন সেটি আসলেই অবাক হওয়ার মতো ঘটনা। আমি তার উত্তরোত্তর সফলতা কামনা করছি।
মন্তব্য করুন
শনিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) বাদ আসর গাজীপুরের টঙ্গীর তুরাগ তীরে আয়োজিত বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্বে যৌতুকবিহীন ৭২টি বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে।
বিয়ে পরিচালনা করেন ভারতের মাওলানা জুহাইরুল হাসান।
বিশ্ব ইজতেমার মিডিয়া সমন্বয়ক হাবিবুল্লাহ রায়হান জানান, প্রতিবছরের মতো এবারও বিশ্ব ইজতেমায় যৌতুকবিহীন বিয়ের আয়োজন করা হয়।
গত বৃহস্পতিবার (১ ফেব্রুয়ারি) বাদ জোহর আম বায়নের মধ্য দিয়ে শুরু হয় শুরায়ে নিজাম অনুসারীদের বিশ্ব ইজতেমা।আজ বাদ আসর ৭২টি বিয়ে সম্পন্ন করা হয়।
প্রতিবছর বিশ্ব ইজতেমায় আখেরি মোনাজাতের আগের দিন যৌতুকবিহীন বিয়ের আয়োজন করা হয়। এ বছরও বিয়ের আয়োজন করা হয়।
এবার ১৪২ জন নারী-পুরুষের বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে।
আগামী রোববার (৪ ফেব্রুয়ারি) আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে শুরায়ে নিজাম অনুসারীদের বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব।
মন্তব্য করুন
খ্রিষ্টান সম্প্রদায়সহ সকলকে মানবতার মহান ব্রতে উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশের উন্নয়নে এগিয়ে আসার উদাত্ত আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
আগামীকাল (২৫ ডিসেম্বর) ‘বড়দিন’ উপলক্ষ্যে দেওয়া আজ মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) এক বাণীতে তিনি খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব ‘বড়দিন’ উপলক্ষ্যে এ সম্প্রদায়ের সকলকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান।
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, খ্রিষ্টান ধর্মের প্রবর্তক যীশু খ্রিষ্ট এই দিনে বেথেলহেমে জন্মগ্রহণ করেন। পৃথিবীতে ন্যায় ও শান্তি প্রতিষ্ঠা করার মাধ্যমে শোষণমুক্ত সমাজ ব্যবস্থা প্রবর্তন ছিল যীশু খ্রিষ্টের অন্যতম ব্রত। মহামতি যীশু বিপন্ন ও অনাহারক্লিষ্ট মানুষের জন্য নিজেকে উৎসর্গ করেন। তার জীবনাচরণ ও দৃঢ় চারিত্রিক গুণাবলির জন্য তিনি মানব ইতিহাসে অমর হয়ে আছেন।
মন্তব্য করুন
বাংলাদেশের
আকাশে পবিত্র রমজান মাসের চাঁদ দেখা গেছে। আগামীকাল মঙ্গলবার থেকে রমজান মাস শুরু।
সোমবার (১১ মার্চ) সন্ধ্যায় জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সভা শেষে এ কথা জানান ধর্মমন্ত্রী
ফরিদুল হক খান।
আজ
রাতেই এশার নামাজের পর ধর্মপ্রাণ মুসলিমরা তারাবির নামাজ আদায় শুরু করবেন এবং শেষরাতে
সাহরি খাবেন।
তার
আগে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সভাকক্ষে বৈঠক
করে জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটি। এতে সভাপতিত্ব করেন ধর্মবিষয়ক মন্ত্রী ও কমিটির সভাপতি
মো. ফরিদুল হক খান। সভায় ১৪৪৫ হিজরি সনের পবিত্র
রমজান মাসের চাঁদ দেখা সম্পর্কে সব জেলা প্রশাসন, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের প্রধান কার্যালয়,
বিভাগীয় ও জেলা কার্যালয়, বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর এবং মহাকাশ গবেষণা ও দূর অনুধাবন
প্রতিষ্ঠান থেকে পাওয়া তথ্য পর্যালোচনা করে চাঁদ দেখার বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।
মন্তব্য করুন
সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান,
ওএসপি, এসজিপি, পিএসসি; নৌবাহিনী প্রধান এডমিরাল মোহাম্মদ নাজমুল হাসান, ওএসপি,
এনপিপি, এনডিসি, এনসিসি, পিএসসি ও বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার চীফ মার্শাল হাসান
মাহমুদ খান, বিবিপি, ওএসপি, জিইউপি, এনএসডব্লিউসি, পিএসসি শুক্রবার (১১ অক্টোবর) রমনা
কালী মন্দির পরিদর্শন করেন।
পরিদর্শনকালে সেনাবাহিনী প্রধান দুর্গাপূজা
উপলক্ষে হিন্দু ধর্মাবলম্বী সকলকে শারদীয় শুভেচ্ছা জ্ঞাপন করেন এবং বলেন,
"বাংলাদেশ সেনাবাহিনী দেশব্যাপী পূজামন্ডপসমূহের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য
সবসময় প্রস্তুত ও তৎপর রয়েছে। আমাদের লক্ষ্য দেশের প্রতিটি নাগরিকের জন্য
নিরাপত্তা ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখা। ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকল মানুষ যেন
উৎসবমুখর পরিবেশে তাদের ধর্মীয় উৎসব পালন করতে পারে, সেটি আমাদের মূল উদ্দেশ্য।
আমরা অতীতের মতোই সকল ধর্মের মানুষদের মধ্যে সহযোগিতা ও সম্প্রীতি বজায় রাখব এবং
দেশের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করব।"
নৌবাহিনী প্রধান এডমিরাল মোহাম্মদ নাজমুল হাসান
বক্তব্যের শুরুতেই সনাতন ধর্মাবলম্বীদের শারদীয় দুর্গাপূজার শুভেচ্ছা জানান।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ নৌবাহিনী পূজামন্ডপের নিরাপত্তা
নিশ্চিত করার জন্য নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। তিনি সকলের জন্য নিরাপদ ও শান্তিপূর্ণ
পূজা উদযাপনের প্রত্যাশা করেন।
বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার চীফ মার্শাল হাসান
মাহমুদ খান তার বক্তব্যে উল্লেখ করেন, দেশের নিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষার্থে
বিমান বাহিনীও সর্বোচ্চ সতর্কতায় দায়িত্ব পালন করছে।
তিনি সকল ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে সহযোগিতা ও
সম্প্রীতি বজায় রাখার আহ্বান জানান।
সেনাবাহিনী প্রধানের পত্নী সারাহনাজ কমলিকা
জামান পূজা উপলক্ষে উপস্থিত অন্যান্যের সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন এবং তাদের সাথে
শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। পূজামন্ডপ পরিদর্শনের সময় তিনি উপস্থিত সকলকে শারদীয়
শুভেচ্ছা জানান এবং পূজার আনন্দ ও সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে একসাথে সময় কাটান।
পরিদর্শনকালে সশস্ত্র বাহিনী ও অসামরিক প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ এবং গণমাধ্যমের প্রতিনিধিগণ উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য করুন
রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় পশু
কোরবানি দিতে গিয়ে গরুর শিংয়ের আঘাত, গরুর লাথি এবং মাংস কাটতে গিয়ে ৩২০ জন আহত হয়েছে।
সোমবার (১৭ জুন) সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত
ঢামেক ও পঙ্গু হাসপাতালে মোট ৩২০ জনকে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে চিকিৎসা দেয়া হয়।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে
১৫৮ ও জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানে (পঙ্গু হাসপাতাল) ১৬২ জন
চিকিৎসা নিয়েছেন।
ঢামেক জরুরি বিভাগের (ভারপ্রাপ্ত) আবাসিক
সার্জন ডা. আমান বলেন, কোরবানি দিতে গিয়ে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে সন্ধ্যা ৭টা
পর্যন্ত আহত অবস্থায় আমাদের এখানে ১৫৮ জন চিকিৎসা নিয়েছে। আহতদের জরুরি বিভাগ থেকে
সেলাই ও চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
পঙ্গু হাসপাতালের জরুরি বিভাগের আবাসিক
চিকিৎসক ডা. মানস দাস বলেন, আজ সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত পশু কোরবানি দিতে গিয়ে প্রায়
১৬২ জন আহত হয়ে হাসপাতালে এলে তাদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়। এই সংখ্যা আরও বাড়তে
পারে বলে জানিয়েছেন এই চিকিৎসক।
এর আগে ঢাকা মেডিকেল পুলিশ ক্যাম্পের
সহকারী ইনচার্জ মো. মাসুদ জানান, সকাল সাড়ে ৭টা থেকে বিকেল ৪টার মধ্যে ১৫০ জন কোরবানির
গরু জবাই ও গোশত কাটতে গিয়ে আহত হয়ে চিকিৎসা নেন। আহতদের মধ্যে এ পর্যন্ত মৌসুমী
কসাইয়ের সংখ্যাই বেশি।
মন্তব্য করুন
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক
ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার বলেছেন, সম্প্রীতির বাংলাদেশে সকল ধর্মের মানুষ দীর্ঘদিন
যাবৎ শান্তি ও সৌহার্দ্যের মধ্যে বসবাস করে আসছে।
আজ শুক্রবার (১১ অক্টোবর) শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে ঢাকার সিদ্ধেশ্বরীস্থ
বেইলি রোডে সিদ্ধেশ্বরী শ্রী শ্রী কালী মন্দিরে পূজামণ্ডপ পরিদর্শন শেষে সমবেত ভক্ত
ও পূজারীদের উদ্দেশ্য এ কথা বলেন।
গণশিক্ষা উপদেষ্টা বিধান রঞ্জন রায়
পোদ্দার বলেন, সকল ধর্মের মানুষ তাদের নিজ নিজ ধর্মীয় অনুষ্ঠান উৎসবের সঙ্গে পালন করে
আসছে। ধর্ম যার যার, রাষ্ট্রের কাছে সকলেই সমান। অনেকে আশঙ্কা করেছিল দুর্গাপূজা শান্তিপূর্ণভাবে
পালন করা যাবে কিনা । এখন পর্যন্ত সবকিছু ঠিকঠাক আছে, কোন অসুবিধা হচ্ছে না। দুর্গাপূজা
সুন্দরভাবে পালন করা হচ্ছে। যদি আমরা সম্প্রীতি ও সংহতি ধরে রাখতে পারি, তাহলে দুষ্কৃতিকারীরা
তাদের উদ্দেশ্য হাসিল করতে পারবে না।
অনুষ্ঠানে পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি
নিবাস চন্দ্র মাঝি, সাধারণ সম্পাদক নারায়ণ চন্দ্র, উদযাপন পরিষদের স্টিয়ারিং কমিটির
চেয়ারম্যান তপন মজুমদার ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক
প্রমিতা সরকার উপস্থিত ছিলেন।
পরে উপদেষ্টা দু:স্থদের মধ্যে বস্ত্র
বিতরণ করেন।
মন্তব্য করুন
১১৫ বছর বয়সী মোয়াজ্জিন চোখে দেখতে পান না। তবুও দড়ি ও বাঁশ ধরে নিয়মিত পাঁচ ওয়াক্ত মসজিদে গিয়ে নামাজের জন্য ডাকেন সবাইকে।
অন্ধ মোয়াজ্জিন আব্দুর রহমান মোল্লার বাড়ি নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার নগর ইউনিয়নের বড়দেহা গ্রামে। ২০ বছর আগে এক দুর্ঘটনায় দৃষ্টিশক্তি হারান। এর ৬ বছর পর বড় ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে হজ পালন করেন। দেশে ফিরে নিজ গ্রামে তৈরি করেন একটি মসজিদ। এরপর নিজেই সেই মসজিদের মোয়াজ্জিন হিসেবে দায়িত্ব পালন শুরু করেন।
কিন্তু চোখে দেখতে না পাওয়ায় মসজিদে আসা-যাওয়া নিয়ে জটিলতা দেখা দেয় । সমাধানের জন্য বাড়ি থেকে মসজিদ পর্যন্ত টেনে নিয়েছেন রশি ও বাঁশ।
আব্দুর রহমান মোল্লার ছেলে স্কুল শিক্ষক মো: শফিকুল ইসলাম সাইফুল জানান, বাবার বয়স ১১৫ বছর। হজ থেকে আসার পর বাবা যে মসজিদটি স্থাপন করেছেন সেখানে আজান দেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেন। কিন্তু বাড়ি থেকে মসজিদের দূরত্ব প্রায় ২০০ মিটার। তখনই জটিলতা দেখা দেয় আসা-যাওয়া নিয়ে। পরে বাবা বাড়ি থেকে মসজিদ পর্যন্ত রাস্তায় রশি ও বাঁশ টাঙিয়ে দিতে বলেন।
বাবার দেওয়া পরামর্শ অনুযায়ী রশি ও বাঁশ টাঙিয়ে দেন ছেলেরা। এরপর প্রথম দিকে কয়েকদিন তার ছেলে ও নাতিরা রশি ও বাঁশের সাহায্যে মসজিদ পর্যন্ত নিয়ে গিয়ে তাকে যাতায়াত ও রাস্তা পার হতে অভ্যস্ত করে তোলেন।
মোয়াজ্জিন আব্দুর রহমান বলেন, ১০ কাঠা জমি বিক্রি করে সেই টাকা দিয়ে মসজিদটি নির্মাণ করেছি। এখন টিউবওয়েলে পানি না ওঠায় অজু করতে সমস্যা হয়। মসজিদের পাশে একটা পানির পাম্পের ব্যবস্থা হলে খুব ভালো হতো।
মন্তব্য করুন