

মজিবুর
রহমান পাবেল,
প্রতিবেদক:
কুমিল্লা
সদর দক্ষিণ উপজেলার পদুয়ার বাজার বিশ্বরোড এলাকায় যৌথভাবে একটি চেকপোস্ট স্থাপন করেছে।
এ সময় ট্রাফিক আইন লঙ্ঘনের দায়ে দুটি মোটরসাইকেলের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়।
এ
সময় মোট ৮ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয় এবং একটি মোটরসাইকেল জব্দ করা হয়।
আজ
সোমবার (২ মে) বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে এত তদারকি অভিযান পরিচালিত হয়।
যৌথভাবে
পরিচালিত এই চেকপোস্টে সেনাবাহিনীর সদস্যরা অংশগ্রহণ করেন। যান চলাচলে শৃঙ্খলা নিশ্চিত
ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সেনাবাহিনীর এই তৎপরতা স্থানীয়দের প্রশংসা কুড়িয়েছে।
মন্তব্য করুন


তুষার ধস আর ‘রকফলের’ ঝুঁকি নিয়েই হিমালয়ের
২২ হাজার ৩৪৯ ফুট উচ্চতার আমা দাবলাম চূড়ায় বাংলাদেশের পতাকা উড়িয়েছেন বাংলাদেশের যুবক
তৌফিক আহমেদ তমাল।
তিনি চতুর্থ বাংলাদেশি হিসাবে শুক্রবার
(২৫ অক্টোবর) নেপালের ওই পর্বত চূড়ায় ওঠেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তিনি নিজেই।
তমাল কুমিল্লার সন্তান, কুমিল্লার পথিকৃত সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব প্রয়াত শরীফ আহমেদ অলীর সন্তান।
তৌফিক আহমেদ তমাল তার ফেসবুকে আমা দাবলামের
চূড়ায় পৌঁছে বাংলাদেশের পতাকা হাতে একটি ছবি পোস্ট করেন। সেই সঙ্গে তার নিজের অভিজ্ঞতাও
শেয়ার করেন।
তিনি জানান, আমা দাবলাম পৃথিবীর অন্যতম
কঠিন পর্বতগুলোর মধ্যে একটি, চূড়ায় উড়লো বাংলাদেশের পতাকা। আমরা ২২ তারিখ বেজক্যাম্প থেকে যাত্রা শুরু করি। ২৩ তারিখ রাতে
থাকি ক্যাম্প-১। পরদিন সকালে আবার যাত্রা শুরু। সুজন হুট করেই শারীরিক ভাবে কিছুটা
অসুস্থ বোধ করায়, ক্যাম্প-২ থেকে সামনে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। অত:পর আবহাওয়ার অনিশ্চয়তার
কারণে, সিদ্ধান্ত নেই আজই বের হবো, পরে রাত ১১:৪৫ এ ক্যাম্প-০২ থেকে সামিট পুশ দেই,
মিংমা তেনজেনের সঙ্গে। ২৫ তারিখ আমরা পৌঁছে যাই আমা দাবলামের চূড়ায়। আমা দাবলামের এই
অভিযানের সময় ২ দিনের কিছু বেশী।
মন্তব্য করুন


আন্তঃজেলা ট্রান্সফরমার চোর চক্রের মূল হোতাসহ আরো ৮ সদস্য গ্রেফতার এবং চোরাই মালামাল উদ্ধার করেছে কুমিল্লা জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)।
গত ২৪ জানুয়ারি রুজুকৃত বুড়িচং থানার মামলা নং-১৮, তারিখ-২৪/০১/২০২৪, ধারা- ২০১৮ সালের বিদ্যুৎ আইনের ৩৫ এর রহস্য উদ্ঘাটন পূর্বক গ্রেফতারকৃত আসামী ১। মোঃ মনির হোসেন (৩২), ২। মোঃ সোহেল (৩০), ৩। কামরুল হাসান (৩২), ৪। মাঈনউদ্দিন (২৮), ৫। রুবেল আহমেদ @মিন্টু (২৯) দের গত ০৪/০২/২০২৪খ্রিঃ বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হয়। বিজ্ঞ আদালতে আসামি সোহেল ও মাঈনউদ্দিন ফোজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারা মোতাবেক স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে।
উল্লেখ্য যে, তারা কুমিল্লা জেলার বিভিন্ন থানায় ট্রান্সফরমার চুরি সংক্রান্তে রুজুকৃত ৮টি মামলার ঘটনার সাথে সরাসরি সম্পৃক্ত ছিলো এবং তাদের দেওয়া তথ্য তদন্তকালে প্রাপ্ত সাক্ষ্য প্রমাণে সত্যতা পাওয়া যায়।
আসামী মাঈন উদ্দিন (২৮) এর দেওয়া বিজ্ঞ আদালতের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি মোতাবেক কুমিল্লা জেলা গোয়েন্দা শাখার একটি চৌকস টিম অভিযান পরিচালনা করে তথ্য প্রযুক্তি ও স্থানীয় সোর্সের সহায়তায় চোর চক্রের চোরাই মাল ক্রয় -বিক্রয়ের মূল মধ্যস্থতাকারী রুবেল (২৮) কে নোয়াগাঁও চৌমোহনী এলাকায় মা-বাবার দোয়া এন্টারপ্রাইজ দোকানের সামনে থেকে গ্রেফতার করা হয়। কুমিল্লার অধিকাংশ চোরাই মাল ক্রয়কারী মাঈন উদ্দিন ঢাকায় চোরাই মাল বিক্রয় করে। ঢাকায় চোরাইমাল ক্রয় চক্রের মূলহোতা ভূঁইয়া এন্টারপ্রাইজ এর মালিক দেলোয়ার ও ম্যানেজার মনসুর। তার দেওয়া তথ্য মতে চোরাই মালামাল ক্রয়কারী ভূঁইয়া এন্টারপ্রাইজ এর ম্যানেজার রফিকুল ইসলাম মনছুর কে ঢাকা মিডফোর্ট এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত মনসুরের দেখানো মতে ভূঁইয়া এন্টারপ্রাইজ নামক দোকান হতে ৫০ কেজি চোরাই তামার তার উদ্ধারপূর্বক জব্দ করা হয়।
উল্লেখ্য, ভূঁইয়া এন্টারপ্রাইজের মালিক দেলোয়ার পলাতক রয়েছে।
গ্রেফতারকৃত আসামী রুবেলকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে কুমিল্লায় ট্রান্সফরমার চোর চক্রের সাথে জড়িত অনেক সদস্যের নাম প্রকাশ করে। প্রদত্ত তথ্যের ভিত্তিতে বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করে লালমাই থানার মামলা নং-০২, তারিখ-০৩/০২/২০২৪ ইং, ধারা- ২০১৮ সালের বিদ্যুৎ আইনের ৩৫/৪১ এর পলাতক আসামী চোর চক্রের সক্রিয় সদস্য ১। রবিউল আলম @ রফিক (২৬) কে নোয়াগাঁও চৌমোহনী এলাকায় থেকে গ্রেফতার করা হয় । তার দেখানো স্থান হতে ২টি ট্রান্সফরমারের খালি খোসা, ৩৩ কেজি ষ্টিলের পাত, ২টি ট্রান্সফরমারের ঢাকনা ও ২টি লোহার তৈরি কয়েলের ঢাকনা উদ্ধারপূর্বক জব্দ করা হয়। রবিউল আলম রফিককে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে অত্র মামলার সাথে জড়িত আসামী ২। মেহেদী হাসান শাকিল (২৩), ৩। রুবেল (২৬), ৪। মাসুদ রানা (২৩) দেরকে ভূশ্চি এলাকা হতে গ্রেফতার করা হয় এবং চুরির কাজে ব্যবহৃত অটোটি জব্দ করা হয়।
গ্রেফতারকৃত আসামী রুবেলের দেওয়া তথ্য মতে, তথ্য প্রযুক্তি ও স্থানীয় সোর্সের মাধ্যমে সদর দক্ষিণ থানার মামলা নং-৭, তারিখ- ০২/০২/২০২৪ ইং, ধারা- ৩৭৯ দন্ডবিধি এর পলাতক আসামী জহিরুল ইসলাম (২৮) কে সদর দক্ষিণ থানাধীন সুয়াগাজি থেকে গ্রেফতার করা হয়। জহিরুল ইসলাম (২৮) এর দেওয়া তথ্য মতে, অত্র মামলার আর এক পলাতক আসামী মোঃ কবির হোসেন (৩০) কে জাঙ্গালিয়া বাসস্ট্যান্ড থেকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃত আসামীদের ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানায় যে, তারা ট্রান্সফরমার চোর চক্রের সক্রিয় সদস্য। তারা ৩/৪ বছর যাবৎ কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর, চান্দিনা, চৌদ্দগ্রাম, দেবিদ্বার, সদর দক্ষিণ থানাসহ বিভিন্ন থানা এলাকায় এবং পাশর্^বর্তী জেলা চাঁদপুর ও নোয়াখালী জেলার বিভিন্ন থানা এলাকায় ট্রান্সফরমারের তামার তার চুরি করে আসছে। তারা দিনের বেলায় টার্গেট ট্রান্সফরমারের স্থানে রেকি করে এবং রাতের বেলা গিয়ে ট্রান্সফরমারের ঢাকনা খুলে তামার তার নিয়ে চলে আসে। ট্রান্সফরমার থেকে তামার তার চুরি করতে তাদের মাত্র ২০ থেতে ২৫ মিনিট সময় লাগে। চুরি করার পরে ট্রান্সফরমারের খালি খোলস (বক্স) সাধারণত ঘটনাস্থলেই ফেলে দেয়।
উল্লেখ্য যে, আসামী মোঃ কবির হোসেন এর বিরুদ্ধে পূর্বে ৬টি মাদক মামলা রয়েছে। আসামী জহিরুল ইসলাম জহির এর বিরুদ্ধে পূর্বে ১ টি চুরি মামলা, ৩টি মাদক মামলা, ২টি ডাকাতি প্রস্তুতির মামলা রয়েছে। আসামী মাসুদ রানা এর বিরুদ্ধে পূর্বে ১টি ডাকাতি প্রস্তুতির মামলা রয়েছে। আসামী মেহেদী হাসান শাকিল এর বিরুদ্ধে পূর্বে ১ টি চুরি মামলা, ১টি ডাকাতি প্রস্তুতির মামলা রয়েছে। আসামী রবিউল আলম রফিক এর বিরুদ্ধে পূর্বে ১টি মাদক ও ১টি মারামারি মামলা রয়েছে। আসামী রফিকুল ইসলাম মনছুর এর বিরুদ্ধে পূর্বে ১টি মারামারি মামলা রয়েছে।
গ্রেফতারকৃত আসামীরা হলো:
১। মোঃ কবির হোসেন (৩০), পিতাঃ মোঃ জসিম উদ্দিন, সাং-কাদির বক্স বাড়ী, গ্রাম- সৈয়দপুর, থানা- দেবিদ্বার, জেলা- কুমিল্লা,
২। জহিরুল ইসলাম (২৮), পিতাঃ মৃত মোঃ জাকির হোসেন, সাং- পূর্ব পাড়া, গ্রাম- বড় দৌলতপুর, থানা- কোতয়ালী, জেলা- কুমিল্লা
৩। রুবেল (২৬), পিতাঃ মিজান, সাং- চৌকিদার বাড়ী, গ্রাম- দূর্গাপুর, ওয়ার্ড- ১, থানা- সদর দক্ষিণ, জেলা- কুমিল্লা।
৪। মাসুদ রানা (২৩), পিতাঃ আব্দুল গফুর, সং- গ্রাম- ভুচ্চি (নুরপুর) মুক্তিযোদ্ধা জহির সাহেবের বাড়ী, থানা- লালমাই, জেলা- কুমিল্লা।
৫। মেহেদী হাসান @শাকিল (২৩), পিতাঃ শুক্কুর আলী,সাং- মোহরী বাড়ী, গ্রাম- চেংহাটা, থানা- লালমাই, জেলা- কুমিল্লা।
৬। রবিউল আলম @রফিক (২৬), পিতাঃ মৃত সুরুজ, সাং- ভুচ্চি( নুরপুর) ডাক্তার বাড়ী, থানা- লালমাই, জেলা-কুমিল্লা।
৭। রুবেল (২৮), পিতাঃ মৃত ফোরকান মিয়া, সাং- আহাম্মদপুর(ধানুর বাড়ী), থানা-নবীনগর, জেলা- ব্রাহ্মনবাড়ীয়া
৮। মোঃ রফিকুল ইসলাম @মনছুর (৪৮), পিতাঃ মোঃ শাহজাহান আলী , সাং- পায়না (প্রামানিক বাড়ী), থানা- ভেড়া, জেলা- পাবনা
মন্তব্য করুন


কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলায় বন্যায়
ক্ষতিগ্রস্থ প্রান্তিক মৎস্যচাষীদের রুই জাতীয় পোনামাছ অবমুক্তকরণ ও বিতরণ করা হয়।
বুধবার (২৩ অক্টোবর) বিকেলে রাজস্ব
বাজেটের আওতায় ২০২৪-২০২৫ অর্থ বছরে কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলায় বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ
প্রান্তিক মৎস্যচাষীদের ৮৪ জনের মাঝে ৭৫৩ কেজি রুই জাতীয় পোনামাছ অবমুক্তকরণ ও বিতরণ
করা হয়। উক্ত পোনামাছ বিতরণ কার্যক্রম উদ্বোধন করেন কুমিল্লা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা
মো: বেলাল হোসেন।
এই সময়ে উপস্থিত ছিলেন, কুমিল্লা সদর
দক্ষিণ উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুবাইয়া খানম,
চট্টগ্রাম বিভাগের মৎস্য অধিদপ্তরের সহকারি পরিচালক (সংযুক্ত) শায়লা শারমিন, কুমিল্লা
সদর দক্ষিণ উপজেলার মৎস্য কর্মকর্তা হিজবুল বাহার ভূঁঞা সহ সুফলভোগীসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ
উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য করুন


এমদাদুল
হক সোহাগ, কুমিল্লা:
কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন এলাকার বিভিন্ন খাল দিয়ে অপসারিত স্যুয়ারেজ ও গৃহস্থালীর তরল বর্জ্যের কারনে প্রাণী ও মৎসকূল বিলীনের পাশাপাশি ফসলী জমি পতিত জমিতে পরিণত হওয়ার প্রমাণ মিলেছে। কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন এলাকার অন্তত সাতটি পয়েন্টে থেকে নমুনা সংগ্রহের পর সেগুলো ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষা শেষে সেই তথ্য জানিয়েছে পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম বিভাগীয় পরিচালকের কার্যালয়।
জানা যায়, কৃষক সমবায় ঐক্য পরিষদ নামের একটি সামাজিক সংগঠনের দীর্ঘদিনের দাবির প্রেক্ষিতে কুমিল্লার জেলা প্রশাসক মো: আমিরুল কায়ছার পরিবেশ অধিদপ্তর কুমিল্লা উপ-পরিচালক মোসাব্বের হোসেন মোহাম্মদ রাজীবকে কুমিল্লা ইপিজেড এর সাধারণ বর্জ্য শোধনাগার (সিইটিপি) এর পরিশোধিত তরল বর্জ্য এবং কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের বিভিন্ন খাল সমূহের বিভিন্ন পয়েন্টের স্যুয়ারেজ ও গৃহস্থালী তরল বর্জ্যের গুণগত মান পরীক্ষার জন্য নির্দেশ প্রদান করেন। এরই প্রেক্ষিতে গত ২০ জানুয়ারি ২০২৫ তারিখে পরিবেশ অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয়ের প্রতিনিধিদল কুমিল্লা এসে কুমিল্লা ইপিজেড এর সাধারণ বর্জ্য শোধনাগার (সিইটিপি) এর পরিশোধিত তরল বর্জ্য এবং অপরিশোধিত তরল বর্জ্য নমুনা সংগ্রহ করেন। পাশাপাশি কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের বিভিন্ন খালের বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে যেমন রেইসকোর্স, টমসনব্রিজ, ইপিজেড সীমানার বাহিরের সিটি কর্পোরেশনের খাল, ইপিজেড সীমানার ভেতরের খাল, সিইটিপি আউটলেট ও সিটি কতর্পোরেশনের খালের পানির মিশ্রণের পয়েন্ট, রাজাপাড়া এলাকার ব্রীজ এর নিচ দিয়ে প্রবাহীত খাল এবং দীশাবন্দ এলাকা সহ মোট সাতটি পয়েন্ট থেকে পানির নমুনা সংগ্রহ করে প্রতিনিধি দলটি। চট্টগ্রামে পরিবেশ অধিদপ্তরের ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষার বিশ্লষেণে দেখা যায়, দ্রবীভূত অক্সিজেন, সাসপেন্ডেড সলিডস,জৈবিক/বায়োকেমিক্যাল অক্সিজেনের চাহিদা, রাসায়নিক অক্সিজেনের চাহিদা, বৈদ্যুতিক পরিবাহিতা, অ্যামোনিয়া নাইট্রোজেন, ফসফেট এর মান পরিবেশ সংরক্ষণ বিধিমালা ২০২৩ এর মৎস চাষে ব্যবহার্য ভূ-পৃষ্ঠস্থ পানিতে নির্গমনের এবং পয়: নির্গমনের জন্য নির্ধারিত মান মাত্রার তুলনায় অনেক বেশি পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রামের পরিচালক নাসিম ফারহানা শিরীন। গত ০৬ ফ্রেব্রুয়ারী ২২.০২.১৫০০.১৮৬.০০২.১৯ স্মারকে নমুনা সংগ্রহের গুণগত বিশ্লষন ফলাফল কুমিল্লা কার্যালয়ে প্রেরণ করেন।
রিপোর্ট
বিশ্লেষণে দেখা যায়, রেইসকোর্স খালে ময়লা পানিতে COD অর্থাৎ রাসায়নিক অক্সিজেনের চাহিদা
পাওয়া গেছে ২২৯, টমছন ব্রিজ এলাকায় ২০৭, ইপিজেড সীমানার বাইরে ২৭৩, ইপিজেড সীমানার
ভিতরে ৩১২, রাজাপাড়া ব্রিজ এর নিচে ১৬৯, দিশাবন্দ এলাকার পানিতে ১৭৭ যার মানমাত্রা
৫০ এবং ১২৫ এর নিচে থাকার কথা।
BOD অর্থাৎ জৈবিক/বায়োকেমিক্যাল অক্সিজেনের চাহিদা পাওয়া গেছে রেইসকোর্স এলাকায় ৪৯.৩, টমছন ব্রিজ এলাকায় ৪৬.১, ইপিজেড সীমানার বাইরে ৫৯.২, ইপিজেড সীমানার ভিতরে ৫২.৫, রাজাপাড়া ব্রিজ এর নিচে ৩২.১, দিশাবন্দ এলাকার পানিতে ৩১.৫ যার মানমাত্রা ৬ এবং ৩০ এর নিচে থাকার কথা। PO4 বা ফসফেট পাওয়া গেছে রেইসকোর্স এলাকায় ২০.২, টমছন ব্রিজ এলাকায় ১৮.২, ইপিজেড সীমানার বাইরে ১৯.৭, ইপিজেড সীমানার ভেতরে ৩২.৫, রাজাপাড়া ব্রিজ এর নিচে ৫.৫, দিশাবন্দ এলাকার পানিতে ৯.৯ যার মানমাত্রা ০.৫ এবং ১৫ এর নিচে থাকার কথা। NH3-N মানে অ্যামোনিয়া নাইট্রোজেন পাওয়া গেছে রেইসকোর্স এলাকায় ৩৭.৫, টমছন ব্রিজ এলাকায় ৩০.৫, ইপিজেড সীমানার বাইরে ৪১.৭, ইপিজেড সীমানার ভেতরে ৫০.৬, রাজাপাড়া ব্রিজ এর নিচে ১৩.১৬, দিশাবন্দ এলাকার পানিতে ২৪.৯ যার মানমাত্রা ০.৩ এর নিচে থাকার কথা। এই রিপোর্ট অনুযায়ী কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের স্যুয়ারেজ ও গৃহস্থী বর্জ্যের কারনেই খাল সমূহে মাছ সহ অন্যান্য জলজপ্রাণী বেঁচে থাকার উপযুক্ত পরিবেশ নেই বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে, কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের সচিব মোহাম্মদ মামুন ( সিনিয়র সহকারী সচিব) মুঠোফোনে জানান, তিনি গত ১৬ ফেব্রুয়ারীতে সিটি কর্পোরেশনে যোগদান করেছেন। এ বিষয়ে তাঁর তেমন কিছু জানা নেই।
কুসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সামছুল আলম বলেন, কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের খালের পানির যে নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে সেটার রিপোর্ট ভালো আছে। আমাদের পানির কারনে প্রাণী ও মৎসকূল বিলীন, কৃষিজমি নষ্ট হয়েছে বিষয়টি ঠিক না। আপনারা এসব ভুয়া খবর কোথায় পান? রিপোর্ট আমাদের পক্ষে বলে ফোন কেটে দেন।
কুমিল্লা পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোসাব্বের হোসেন মোহাম্মদ রাজীব বলেন, সিটি কর্পোরেশনের বিভিন্ন খালের নমুনা সংগ্রহের পর যে রিপোর্ট এসেছে তাতে প্রাণী ও মৎসকূল বিলীনের প্রমাণ মিলেছে। গত ০৮ ফেব্রুয়ারী কুমিল্লা জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে আইন শৃঙ্খলা কমিটির সভায় বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। জেলা প্রশাসক মহোদয় কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনকে স্যুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট নির্মাণের জন্য বলেছেন।
এ বিষয়ে জানতে চেয়ে কুমিল্লা জেলা প্রশাসক মো: আমিরুল কায়ছার এর মুঠোফোনে কল করলে তিনি একটি অনুষ্ঠানে আছেন এবং পরবর্তীতে কথা বলবেন বলে জানান।
কুমিল্লার
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) পঙ্কজ বড়ুয়া সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, বিষয়টি আমরা
জেনেছি। গত আইন শৃঙ্খলা সভায় কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনকে দ্রুত স্যুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট
প্ল্যান্ট স্থাপনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের অনুরোধ জানানো হয়েছে।
মন্তব্য করুন


মজিবুর রহমান পাবেল:
কুমিল্লার ময়নামতি ওয়ার সিমেট্রি (যুদ্ধসমাধি)
থেকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নিহত ২৪ জাপানি সৈনিকের দেহাবশেষ সরিয়ে নেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে।
তাদের দেহাবশেষ জাপানে নেওয়া হবে। এরই মধ্যে জাপানের পক্ষ থেকে ৭ সদস্যদের একটি ফরেনসিক
বিশেষজ্ঞ দল ওই ২৪ জাপানি সৈনিকের দেহাবশেষ সরিয়ে নেওয়ার কার্যক্রম শুরু করেছেন। যেটি
শেষ হবে আগামী ২৪ নভেম্বর।
কুমিল্লা-সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়কের পশ্চিম
পাশে কুমিল্লা সেনানিবাস এলাকায় অবস্থিত ময়নামতি ওয়ার সিমেট্রি ঐতিহাসিক দর্শনীয় স্থান
হিসেবে পরিচিত। সেখানে রোববার বিকেল পর্যন্ত খনন করা হয়েছে ১০টি সমাধি। জাপানের বিশেষজ্ঞ
ফরেনসিক টিমকে সহায়তা করছেন বাংলাদেশ সরকার। পুলিশি নিরাপত্তায় খনন কাজ চলছে বলে জানিয়েছেন
কুমিল্লা জেলা প্রশাসক মো. আমিরুল কায়ছার।
সংশ্লিষ্টরা জানান, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে
নিহত বিশ্বের ১৩টি দেশের ৭৩৭জন বীর সৈনিককে ময়নামতি ওয়ার সিমেট্রিতে সমাহিত করা হয়েছিল।
এর মধ্যে ১৯৬২ সালে একজন সৈনিকের দেহাবশেষসহ সমাধির মাটি তার স্বজনরা যুক্তরাষ্ট্রে
নিয়ে গিয়েছিলেন। সেখানে ২৪ জন জাপানি সৈনিকের মরদেহ রয়েছে। গত বুধবার থেকে খনন কাজ
শুরু হয়।
সমাধিস্থলের মাটি খুঁড়তেই মিলছে দ্বিতীয়
বিশ্বযুদ্ধে নিহত জাপানি সৈনিকদের মাথার খুলিসহ শরীরের বিভিন্ন অংশের হাড়। সেগুলো অত্যন্ত
যত্নসহকারে সংরক্ষণ করা হচ্ছে। কমনওয়েলথ ওয়ার গ্রেভস কমিশন এই যুদ্ধ সমাধি ক্ষেত্র
তৈরি ও রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পালন করে আসছে।
সমাধিস্থলের খননকাজে জাপানের প্রতিনিধিদের
সহায়তা করছেন মুক্তিযুদ্ধ গবেষক ও স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.)
কাজী সাজ্জাদ আলী জহির (বীর প্রতীক)। তিনি দীর্ঘদিন ধরে কবর (সমাধি) শনাক্তকরণ, দেহাবশেষ
সরিয়ে নেওয়ার কাজ করছেন। বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমানের দেহাবশেষ সরিয়ে আনার কাজটিও করেছেন
তিনি। জাপানের প্রতিনিধিদলের পক্ষে পুরো কর্মযজ্ঞের বর্ণনা দিয়েছেন তিনি।
কাজী সাজ্জাদ আলী জহির বলেন, ‘জাপান
সরকার ২০১৩ সালে আমাকে তাদের দূতাবাসে ডেকেছিল এই ২৪ জাপানি সৈনিকের দেহাবশেষ সরিয়ে
নেওয়ার বিষয়ে। কিন্তু বিভিন্ন কারণে ওই সময়ে সেটি সম্ভব হয়নি। গত বছর থেকে তারা বিষয়টি
নিয়ে আবারও যোগাযোগ করে। এবার আনুষ্ঠানিকভাবে জাপান সরকার আমাদের সরকারের কাছে চিঠি
লেখে এবং কমনওয়েলথের কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে এই কাজ শুরু করেছে। এখানে জাপানের পক্ষ থেকে
সাতজন ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ কাজ করছেন, যারা এ কাজে অত্যন্ত দক্ষ। তাদের ছয়জন জাপানি ও
একজন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক। এই সমাধিগুলো ৮১ বছরের পুরোনো। এরই মধ্যে খনন করে আমরা
১০ জনের দেহাবশেষ সমাধি থেকে উত্তোলন করতে পেরেছি।’
দেহাবশেষে কী কী পাওয়া যাচ্ছে, জানতে
চাইলে এই বীর মুক্তিযোদ্ধা বলেন, ‘৮১ বছর পর খুব বেশি কিছু পাওয়ার সুযোগ নেই। আমরা
প্রতিটি সমাধির দুই ফুটের মতো খননযন্ত্র (এক্সকাভেটর) দিয়ে খুঁড়ছি। বাকিটা ম্যানুয়ালি
অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে খনন করা হচ্ছে। কোনোটিতে তিন ফুট, আবার কোনোটিতে ছয় ফুট খননের
পর দেহাবশেষ পাওয়া যাচ্ছে। এখন পর্যন্ত যেগুলো খনন করা হয়েছে, সেসব সমাধিতে মাথার খুলি,
শরীরের বিভিন্ন অংশের হাড় পাওয়া যাচ্ছে। তবে যা-ই পাচ্ছি, সবকিছুই জাপানের বিশেষজ্ঞ
দল যত্নসহকারে সংরক্ষণ করছে।’
তিনি বলেন, আমরা এক তরুণ সৈনিকের দেহাবশেষ
তুলতে গিয়ে মাথার খুলির মধ্যে বুলেটের চিহ্ন পেয়েছি। রেকর্ড অনুযায়ী ওই সৈনিকের বয়স
২৮ বছর ছিল। আমার তখন বুকে জড়িয়ে ধরতে ইচ্ছে করেছে। এত তরুণ বয়সে পৃথিবী থেকে চলে গেছে
সে। এখানে জাপানের সৈনিকদের ২৪ সমাধির মধ্যে ২০টির নাম-পরিচয় আছে। বাকি চারটির পরিচয়
শনাক্ত করা এখনো সম্ভব হয়নি। নিশ্চয়ই তারা (জাপানের প্রতিনিধিদল) দেহাবশেষ নিয়ে গেলে
ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে তাদের পরিচয় শনাক্তের চেষ্টা করা হবে।’
কমনওয়েলথ ওয়ার গ্রেভস কমিশনের পক্ষে
দায়িত্ব পালন করা কান্ট্রি অ্যাডমিনিস্ট্রেটর আবদুর রহিম সবুজ বলেন, গত বুধবার সকাল
থেকে জাপানের প্রতিনিধি দল কার্যক্রম শুরু করে। এখানে সমাহিত দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের
সময় নিহত বিশ্বের ১৩টি দেশের।
মন্তব্য করুন


নেকবর হোসেন, কুমিল্লা প্রতিনিধি:
কুমিল্লায় ৪৭ লাখ টাকার ভারতীয় পণ্য জব্দ করেছে বিজিবি।
আজ সোমবার কুমিল্লার আদর্শ সদর উপজেলার চাঁনপুর এলাকা থেকে এসব পণ্য জব্দ করা হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ১০ বিজিবি অধিনায়ক লে. কর্নেল মীর আলী এজাজ ।
জানা গেছে, সোমবার ভোর সাড়ে ৫টার দিকে কুমিল্লা জেলার আদর্শ সদর উপজেলার চাঁনপুর এলাকায় মাদক ও চোরাচালান বিরোধী অভিযান পরিচালনা করে বিজিবি। এসময় সীমান্তবর্তী চাঁনপুর এলাকায় বিজিবির অভিযান টের পেয়ে সড়কের পাশে সিএনজি ভর্তি শাড়ি রেখে পালিয়ে যায় চোরাকারবারীরা। পরে একটি সিএনজিকেসহ ৪৫৫ পিস বিভিন্ন প্রকার ভারতীয় শাড়ি আটক করে। তবে এ ঘটনায় কাউকে গ্রেপ্তার করা যায়নি বলে জানিয়েছে বিজিবি।
১০ বিজিবি অধিনায়ক লে. কর্নেল মীর আলী এজাজ জানান, বিজিবির উদ্ধার করা ৪৫৫টি ভারতীয় শাড়ির আনুমানিক মূল্য সাতচল্লিশ লাখ নব্বই হাজার টাকা। আটককৃত পণ্য কাস্টমস এ জমা করার প্রক্রিয়া চলমান।
মন্তব্য করুন


সুজন মজুমদার, কুমিল্লা :
কুমিল্লা জেলা বরুড়ার সাবেক সফল সংসদ সদস্য মরহুম এ কে এম আবু তাহের ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে কুমিল্লাস্থ বরুড়া ছাত্র-ছাত্রী সংসদের আয়োজনে এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) বিকাল ৩টায় কুমিল্লা শহরের প্ল্যানেট এসআর ভবনে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কুমিল্লাস্থ বরুড়া ছাত্র-ছাত্রী সংসদের উপদেষ্টা আবু নাসের মানিক। তিনি বলেন, “বরুড়া উপজেলার শিক্ষার্থীরা কুমিল্লায় পড়াশোনা করছে নিজেদের ভবিষ্যৎ গড়ার লক্ষ্যে। কিন্তু অনেকে নানা প্রতিবন্ধকতা ও সীমাবদ্ধতার মধ্যে পড়ে পিছিয়ে যায়। আমাদের এই সংগঠনের মূল লক্ষ্য হচ্ছে শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়ানো, তাদের সমস্যা শোনা এবং একে অপরকে সহযোগিতা করা। সংগঠনকে গতিশীল করতে সবাইকে আন্তরিকভাবে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।”
সভায় সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের উপদেষ্টা মোয়াজ্জেম হোসেন কল্লোল। তিনি বলেন, “ছাত্র-ছাত্রী সংসদ কেবল নামেই নয়, কাজে যেন বরুড়ার গৌরব ধরে রাখে — এটাই আমাদের প্রত্যাশা। আমাদের সবাইকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে শিক্ষার্থীদের উন্নয়নে কাজ করতে হবে।”
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের উপদেষ্টা সোহেল পারভেজ, প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ওমর ফারুক রিপন, সাবেক সভাপতি শাহ মোহাম্মদ ইমরান, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক লিটন পন্ডিত ও বর্তমান সদস্য সচিব ডা. নাজমুল হাসান।
সভায় উপস্থিত ছিলেন এনাম মজুমদার, মানিক হোসেন, নূর নাহার মুক্তা, জুথি আক্তার, শরিফ হোসেন ও মেহেদি হাসানসহ আরও অনেকে। তারা কুমিল্লায় অবস্থানরত বরুড়ার ছাত্র-ছাত্রীদের বাসস্থান, পড়াশোনা, নিরাপত্তা ও পারস্পরিক সহযোগিতা বিষয়ে নানা মতামত তুলে ধরেন।
মন্তব্য করুন


মজিবুর রহমান পাবেল, প্রতিবেদক:
কুমিল্লার কোতোয়ালী মডেল থানায় অস্থায়ী ভবন নির্মাণকাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছেন জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মাদ নাজির আহমেদ খাঁন।বুধবার (২৬ নভেম্বর) বেলা ১১টায় আনুষ্ঠানিকভাবে এই নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করা হয়।জানা যায়, বহুল প্রত্যাশিত মডেল ব্যারাক নির্মাণ প্রকল্পের অংশ হিসেবে কোতোয়ালী মডেল থানার পুরোনো ভবন ভাঙার প্রস্তুতি চলছে। নতুন ভবন নির্মাণকাজ চলাকালে থানার নিয়মিত প্রশাসনিক ও দাফতরিক কার্যক্রম নির্বিঘ্ন রাখতে পুলিশ সুপারের উদ্যোগে এই অস্থায়ী ভবন নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
উদ্বোধন অনুষ্ঠানে পুলিশ সুপার নাজির আহমেদ খাঁন বলেন, “অস্থায়ী এই অবকাঠামো নির্মাণের মাধ্যমে পুলিশ সদস্যদের কর্মপরিবেশ আরও উন্নত হবে। একই সঙ্গে সেবাগ্রহীতারা আগের তুলনায় দ্রুত, নিরাপদ ও মানসম্মত সেবা পাবেন।” তিনি আরও আশা প্রকাশ করেন যে নতুন স্থাপনা নির্মিত হলে থানার সার্বিক প্রশাসনিক কর্মকাণ্ড আরও গতিশীল ও সুসংগঠিত হবে।
থানা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা, ফোর্স সদস্যদের জন্য উপযোগী আবাসন এবং কার্যকরী অফিস পরিবেশ নিশ্চিত করতেও এই উদ্যোগ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে জানানো হয়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষা, জনবান্ধব পুলিশিং এবং সেবার মান বৃদ্ধিতে এই অস্থায়ী ভবন সহায়ক হবে বলে মন্তব্য করেন কর্মকর্তারা।
উদ্বোধন অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) রাশেদুল হক চৌধুরী, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোহাম্মদ সাইফুল মালিক, কোতোয়ালী মডেল থানার ওসি মহিনুল ইসলাম, ডিবি ওসি মোঃ আবদুল্লাহসহ জেলা পুলিশের অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
মন্তব্য করুন


কুমিল্লা সদর উপজেলার পালপাড়া এলাকায় দ্রুতগামী মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশে বৈদ্যুতিক পিলারের সাথে সংঘর্ষে নিহত হয়েছে তিনজন আরোহী।
গতকাল মধ্যরাতে কুমিল্লা সদর উপজেলার বুড়িচং সড়কের পালপাড়া এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন সদর উপজেলার আড়াইওরা এলাকার কাউসার খলিলের ছেলে আহাদ হোসেন, ভুবনগড় এলাকার মৃত মনির হোসেনের ছেলে মিনহাজুল এবং বুড়িচং উপজেলার শিকারপুর এলাকার জাকির হোসেনের ছেলে মোহাম্মদ ইমন।
কুমিল্লা কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ মহিনুল ইসলাম জানান,
গতকাল মধ্যরাত আনুমানিক দেড়টার দিকে সদর উপজেলার পালপাড়া এলাকায় বুড়িচং সড়কে দুর্ঘটনা ঘটে।
দ্রুতগামী মোটরসাইকেলটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশের বৈদ্যুতিক পিলারের সাথে ধাক্কায় তিনজন প্রাণ হারিয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। নিহতদের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
নিহত আহাদের মামা পাপন জানান, আড়াই ওরা মধ্যমপাড়া এলাকায় মামার বিয়ের অনুষ্ঠান থেকে ভিডিওগ্রাফার মিনহাজকে বাড়ি পৌঁছে দিতে যাচ্ছিল আহাদ ও ইমন।
যাবার পথেই এই দুর্ঘটনা ঘটে। যতটুকু জানা গেছে,
ঘটনাস্থলেই তাদের মৃত্যু হয়েছে।
মন্তব্য করুন


নেকবর হোসেন,কুমিল্লা প্রতিনিধি:
২০২৪ সালের ৪ ও ৫ আগস্ট, ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’-এ কুমিল্লার দেবীদ্বার পরিণত হয় রণক্ষেত্রে। আওয়ামী লীগের সশস্ত্র কর্মী ও পুলিশের হামলায় নিহত হন পৌর সেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুর রাজ্জাক বাদশা রুবেল (৪৩), স্কুলছাত্র আমিনুল ইসলাম সাব্বির (১৮) ও আব্দুস সামাদসহ মোট ১২ জন। আহত হন অর্ধশতাধিক, এদের মধ্যে স্কুলছাত্র আবুবকর মানসিক ভারসাম্য হারান।
৪ আগস্ট বানিয়াপাড়ায় গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন রুবেল। সে মাটিতে লুটিয়ে পড়ার পরও তাকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। তার স্ত্রী হ্যাপি আক্তার তখন ছিলেন ৯ মাসের অন্তঃসত্ত¦া। নিহতের এক মেয়ে ও পরবর্তীতে জন্ম নেওয়া এক ছেলে রয়েছে। রুবেল দেবীদ্বার পৌর এলাকার বারেরা গ্রামের মৃত রফিকুল ইসলামের ছেলে। রুবেল পেশায় বাস টালক ছিলেন।
৫ আগস্ট থানা ঘেরাওয়ের সময় পুলিশের গুলিতে গুলিবিদ্ধ হন সাব্বির। ৪০ দিন মৃত্যুর সাথে লড়ে ১৪ সেপ্টেম্বর মারা যান। নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী সাব্বির পরিবার চালাতেন ভ্যান চালিয়ে। সিএনজি চালক আমিনুল ইসলাম ছাব্বির দেবীদ্বার পৌর এলাকার ভিংলাবাড়ি গ্রামের মৃত আলমগীর হোসেনের পুত্র। একই ঘটনার জেরে গুলিবিদ্ধ হন আব্দুস সামাদ। তিনি দীর্ঘ সাত মাস চিকিৎসা নিয়ে ৪ মার্চ ঢাকা জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে মারা যান।
আহত শিক্ষার্থী আবুবকর এখন মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেছে। তার পরিবার উন্নত চিকিৎসার জন্য সরকারের সহায়তা কামনা করছে।
দেবীদ্বারে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ১২ শহীদের রক্তে লালিত গণআন্দোলন। সংগ্রামী ছাত্র জনতার আত্মত্যাগের করুণ ইতিহাস।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে দেশের বিভিন্ন স্থানের মতো কুমিল্লার দেবীদ্বারও জেগে উঠেছিল অন্যায়ের বিরুদ্ধে। কিন্তু সে জাগরণ থেমে গেছে গুলির আওয়াজে, রক্তাক্ত হয়েছে শহরের রাজপথ। এ পর্যন্ত দেবীদ্বার উপজেলার ১২ জন শহীদ গণআন্দোলনের অংশ নিয়ে শাহাদাৎ বরণ করেছেন। তাঁদের রক্তে লেখা হয়েছে আন্দোলনের করুণ ইতিহাস।
নিম্নে উল্লেখিত ৩ জন ছাড়া বাকী ৯ জনের শহীদদের নাম, পরিচয় ও শাহাদাতের সংক্ষিপ্ত বিবরণ তুলে ধরা হলো:
দেবীদ্বার উপজেলার এলাহাবাদ ইউনিয়নের কাচিসাইর গ্রামের মো. সফিকুল ইসলাম সরকার’র পুত্র ফয়সাল সরকার (২৪)। সে ঢাকায় একটি পলিটেকনিক্যাল ইনিস্টিটিউটের শিক্ষার্থী ছিলেন। ১৯ জুলাই বিকেলে ঢাকা আব্দুল্লাহপুর এলাকায় পুলিশের গুলিতে ফয়সালের মাথার খুলি উড়ে যায়, পরে হসপিটালে চিকিৎসারত অবস্থায় মারা যান। তাকে বেওয়ারিশ লাশ হিসেবে ঢাকায় অজ্ঞাত স্থানে দাফন করা হয়।
উপজেলার বড়শালঘর গ্রামের মো. হানিফ মোল্লা’র পুত্র মো. সাগর মিয়া(১৯), তিনি পেশায় সবজি বিক্রেতা ছিলেন। ১৯ জুলাই ঢাকা মিরপুর ১০ নম্বরে পুলিশের গুলিতে নিহত হন। ২০ জুলাই তার নিজ বাড়িতে দাফন করা হয়।
উপজেলার রাজামেহার ইউনিয়নের বেতুয়া গ্রামের মো. মানিক মিয়ার পুত্র মোঃ হোসাইন মিয়া (১০), সে পেশায় পপকর্ন বিক্রেতা ছিলেন। ২০ জুলাই বিকেলে চিটাগং রোডে তলপেটে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। ২২ জুলাই নিজ বাড়িতে দাফন সম্পন্ন করা হয়।
উপজেলার ভানী ইউনিয়নের সূর্যপুর গ্রামের মৃত: মোহাম্মদ আলীর পুত্র কাদির হোসেন সোহাগ (২২), তিনি পেশায় চাকরি জিবী(পাঠাও কুরিয়ার সার্ভিস)। ২০ জুলাই ঢাকা গোপীবাগে পুলিশের গুলিতে নিহত হন। ২২ জুলাই নিজ বাড়িতে দাফন সম্পন্ন করা হয়। উপজেলার ইউছুফপুর ইউনিয়নের মহেশপুর গ্রামের মৃত শাহআলম সরকার’র পুত্র জহিরুল ইসলাম রাসেল। তিনি শিক্ষার্থী ছিলেন। ৪ আগস্ট ঢাকা গুলিস্তান এলাকায় পুলিশের গুলিতে নিহত হন। ৬ আগস্ট নিজ বাড়িতে দাফন করা হয়।
উপজেলার ৪ নং সুবিল ইউনিয়নের ওয়াহেদপুর গ্রামের মোঃ ইদ্রিস মিয়ার পুত্র মোঃ রবিন মিয়া (৩৫)। পেশায় একজন ব্যবসায়ি ছিলেন। ৪ আগস্ট যাত্রাবাড়ি গুলিতে নিহত হন। ৬ আগস্ট নিজ বাড়িতে দাফন হয়।
উপজেলার জাফরগঞ্জ ইউনিয়নের খয়রাবাদ গ্রামের ফজর আলীর পুত্র মোঃ রায়হান রাব্বি। তিনি শিক্ষার্থী ছিলেন। ৫ আগস্ট খিলগাঁও তালতলা মার্কেটে গুলিতে নিহত হন। ৬ আগস্ট নিজ বাড়িতে দাফন হয়। উপজেলার এলাহাবাদ গ্রামের মো. সফিকুল ইসলাম রানার পুত্র সাইফুল ইসলাম তন্ময়। উপজেলার রসুলপুর গ্রামের সৈয়দ আবুল কায়েসের ছেলে নাজমুল হাসান। ঢাকার মধ্য বাড্ডায় একটি প্রাইভেট হাসপাতালে চাকরি করতেন তিনি। গত ১৯ জুলাই দুপুরের বাড্ডা এলাকায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান তিনি। পরদিন মরদেহ মাদারীপুরে তার মামার বাড়িতে দাফন করা হয়।
মন্তব্য করুন