মো: মাসুদ রানা, কচুয়া প্রতিনিধি:
চাঁদপুরের কচুয়ায় কমিউনিটি পুলিশিং এর রাত্রীকালীন গ্রাম পাহারা দলের সদস্যদের সহায়তা ২টি অটোরিকশাসহ মহসিন হোসেন নামের এক ডাকাতকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
রবিবার ভোরে কচুয়া উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকা নিন্দপুর গ্রামের চৌরাস্তা এলাকায় তাকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত ডাকাত মহসিন দাউদকান্দি উপজেলার পিপিয়াকান্দি গ্রামের মৃত ছামিল হোসেনের ছেলে।
জানা যায়, রবিবার ভোররাতে নিন্দপুর গ্রামের চৌরাস্তায় চেক পেয়েন্টে মহসিন ডাকাত ও তার সহযোগীরা অটোরিকশা নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। কমিউনিটি পুলিশং এর রাত্রীকালীন পাহারা দলের সার্বিক সহায়তায় ডাকাত মহসিনকে আটক করা হয় এবং দুটি অটোরিকশা জব্দ করা হয়। এদিকে তার বিরুদ্ধে দাউদকান্দি, মতলব উত্তর ও কচুয়া থানায় একাধিক ডাকাতির মামলা রয়েছে।
কচুয়া থানার ওসি মো. মিজানুর রহমান জানান, কচুয়া থানা পুলিশের উদ্যোগে কমিউনিটি পুলিশিং এর ব্যবস্থাপনায় গ্রাম পুলিশ ও গ্রামবাসী যৌথভাবে চুরি-ডাকাতি প্রতিরোধে গ্রামে গ্রামে নৈশকালীন পাহারা দেয়। এতে চুরি-ডাকাতি সহ নানা সংঘবদ্ধ অপরাধ বহুলাংশে নিয়ন্ত্রনে আসে। তবে এ প্রক্রিয়া পুরো শীতকাল জুড়ে অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তিনি।
মন্তব্য করুন
আর দশজন সাধারণ গৃহবধূর মতই জীবন ছিল মেহেরপুর সদর উপজেলার কুতুবপুর ইউনিয়নের সুবিধপুর গ্রামের রেজিয়া খাতুনের। কিন্তু হঠাৎ তার জীবনে নেমে আসে ভয়াবহতা।
৩০ বছর আগে এক রাতে নির্যাতনের পর তাকে অচেতন অবস্থায় সীমান্ত পার করে ভারতে বিক্রি করে দেয়া হয় ।
আর এই দীর্ঘ সময় পরিবার ও গ্রামবাসী জানতেন, রেজিনা মারা গেছেন।
কিন্তু এখন হঠাৎ তিনি ফিরে আসায় তাকে দেখতে বাড়িতে ভিড় জমিয়েছেন আশপাশের কয়েক গ্রামের মানুষ।
গত ১০ নভেম্বর ৫০ বছর বয়সী রেজিয়া বাড়ি ফিরে জানতে পারেন মা-বাবা মারা গেছেন। ভাই-বোনরা বৃদ্ধপ্রায়; সন্তানরা সংসার পেতেছেন।এরপর সোমবার তিনি মেহেরপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে দুজনকে আসামি করে মামলা করেন। তারা হলেন- রেজিয়ার দ্বিতীয় স্বামী আজগর আলী এবং তার সহযোগী জয়নাল।
শুনানি শেষে আদালত দুজনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে। আসামিরা পলাতক থাকায় তাদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা চালানো হচ্ছে বলে থানা থেকে বলা হয়েছে।
এদিকে রেজিয়ার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ১৫ বছর বয়সে গাংনী উপজেলার গাড়াবাড়িয়া গ্রামের সাত্তার আলীর সঙ্গে তার পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। সেই সংসারে এক ছেলে ও মেয়ে রয়েছে। পরে সাত্তারের সঙ্গে রেজিয়ার বিচ্ছেদ হয়।
এরপর রেজিয়া নিজ গ্রামের আজগর আলীকে বিয়ে করেন। কিন্তু বিয়ের পর শুরু হয় রেজিয়ার উপর আজগরের নির্যাতন।
১৯৯৩ সালের এক রাতে নির্যাতনের পর তাকে প্রতিবেশী জয়নালের সহযোগিতায় আজগর সীমান্তের কাঁটাতার পার করে ভারতের কাশ্মিরে নিয়ে যান এবং কোনোকিছু বুঝে উঠার আগেই ফারুক হোসেন নামের এক ব্যক্তির কাছে বিক্রি করে দেন।
রেজিয়া বলেন, ৩০ বছর সীমাহীন কষ্টে বন্দিজীবন পার করেছি। ছেলেমেয়েরা তাদের মায়ের আদর- ভালোবাসা থেকে বঞ্চিত হয়ে বড় হয়েছে। নিখোঁজ অবস্থায় মা-বাবাকে হারিয়েছি। তাদের মরা মুখটাও আমি দেখতে পাইনি।
আমি চাই না আর কারো জীবন যেন এভাবে ধ্বংস হোক সেজন্য মামলা করেছি। আদালত আমার মামলা আমলে নিয়ে আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে।
যদিও রেজিয়ার দ্বিতীয় স্বামী আজগর আলী অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।তিনি বলেন, বিয়ে হওয়ার পর কয়েক বছর আমরা সংসার করি। তারপর সামাজিকভাবে রেজিয়ার সঙ্গে আমার ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। পাচারের বিষয়ে আমি কিছু জানি না।
এদিকে জয়নালের দাবি, যড়যন্ত্র করে রেজিয়ার হারিয়ে যাওয়ার ঘটনায় তাকে জড়ানো হচ্ছে।
দেশে কীভাবে ফিরে আসলেন সে বিষয়ে জানতে চাইলে রেজিয়া জানান, তিন মাস আগে তিনি ভারতের জম্মু-কাশ্মির থেকে ভারতের নদীয়া জেলার পণ্ডিতপুর গ্রামে পায়ের চিকিৎসা নিতে আসেন। সেখানে কথা হয় সুবিধপুরের পাশের কসবা হিন্দি গ্রামের আমিরুল ইসলাম বাবলুর সঙ্গে।তখন রেজিয়া তাকে পুরো ঘটনা জানান এবং গ্রামে পরিবারের কাছে তার বেঁচে থাকার খবর পৌঁছে দিতে বলেন। পরে পরিবারের লোকজন বিভিন্ন মাধ্যমে যোগাযোগ করে তাকে কাশ্মির থেকে মেহেরপুর ফিরিয়ে আনেন।
কসবা হিন্দি গ্রামের বাসিন্দা আমিরুল ইসলাম বাবলু বলেন, রেজিয়ার মুখে সব শুনে মেহেরপুর ফিরে তার ভাইদের সন্ধান করে ঘটনাটি জানান তিনি। পরে রেজিয়ার দেওয়া মোবাইল নম্বর ও কাশ্মিরের ঠিকানা অনুযায়ী সেখানে গিয়ে ফারুকের কাছ থেকে রেজিয়াকে উদ্ধার করে নিয়ে আসে তার পরিবার।
রেজিয়ার বড় ভাই আনারুল ইসলাম বলেন,রেজিয়ার স্বামী আজগর এতদিন বলেছে, আমার বোন ওই রাতে কাউকে না বলে নিখোঁজ হয়ে যায়। দেশের প্রায় সব জেলায় বোনের সন্ধান করেছি। কিন্তু কোথাও হদিস না পেয়ে ভেবেছি, বোন হয়ত মারা গেছে। তিন মাস আগে পাশের গ্রামের আমিরুলের মাধ্যমে বোনের সন্ধান পেলে আমরা ভারতের কাশ্মিরে গিয়ে বোনকে ফিরিয়ে আনি।
রেজিয়ার মেয়ে সালেহা খাতুন বলেন, মাকে ফিরে পেয়ে জীবন ফিরে পেয়েছি মনে হচ্ছে। যারা আমার মাকে এতদিন আমার কাছ থেকে দূরে রেখেছিল আমি তাদের কঠিন বিচার চাই।”
কুতুবপুর ইউনিয়ন পরিষদের সুমিতপুর গ্রামের ওয়ার্ড সদস্য আরিফুল ইসলাম বলেন, আমরা জানতাম রেজিয়া মারা গেছে। তার ফিরে আসার খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে কয়েক গ্রামের মানুষ রেজিয়াকে দেখতে ভিড় করছে। আমরা রেজিয়ার পাশে আছি। তাকে সব ধরনের আইনি সহায়তা করা হবে।
রেজিয়ার দায়ের করা মামলার বিষয়ে মেহেরপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী এ কে এম আছাদুজ্জামান জানান, ঘটনাটি মানবপাচার প্রমাণ হলে আসামিদের মৃত্যুদণ্ড অথবা যাবজ্জীবন সাজা হতে পারে।
মন্তব্য করুন
কুমিল্লার দক্ষিণে বন্যাকবলিত এলাকার বাজারগুলোতে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য ফুরিয়ে আসছে ।
আর উঁচু জায়গার বাজারগুলোতে গত কয়েকদিন ধরে শুকনো খাবারের চাহিদা বেড়ে গেছে। আর এতে টান পড়েছে নিত্যপ্রয়োজনীয় চাল, ডাল, আলু, তেল, পেঁয়াজ, রসুনসহ প্রায় সব পণ্যের। বন্যার কারণে সরবরাহ ঠিকমতো নেই। সে কারণে বাজারগুলোতে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য নেই বললেই চলে।
এছাড়াও জরুরি ওষুধের সংকটও দেখা দিয়েছে। যার কারণে দূর-দূরান্তের বাজারগুলো থেকে চড়া দামে খাদ্যদ্রব্য সংগ্রহ করতে হচ্ছে স্বেচ্ছাসেবক এবং সাধারণ মানুষদের।
চৌদ্দগ্রামের বসুয়ারা গ্রামের আবুল বাশার জানান, এ উপজেলা ফেনী লাগোয়া। কুমিল্লায় সবচেয়ে বেশি বন্যাকবলিত এলাকা চৌদ্দগ্রাম। এখনো ৮০ শতাংশ গ্রাম পানির নিচে। ফেনীর উত্তরাংশ লাগোয়া অনেক গ্রামে যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছে না। তাদের জীবন কীভাবে চলছে বোঝা যাচ্ছে না। ওইসব এলাকার বাজারগুলোও পানির নিচে। টাকা থাকলেও তারা আজ অসহায়।
নাঙ্গলকোটের করপাতি গ্রামের আরিফ হোসেন বলেন, কোনো বাজারেই খাবার নেই। অনেক দূরে লাকসাম বাজারে গিয়ে শুকনো খাবার সংগ্রহ করছি। সেখানেও চড়া দাম। নাঙ্গলকোটের অনেক দুর্গম এলাকায় ত্রাণ পৌঁছাচ্ছে না। প্রবাসী ও স্থানীয় পেশাজীবীরা সহযোগিতা করছেন। এক সপ্তাহ ধরে মানুষ পানিবন্দি। বাজারেও পণ্য না থাকলে এভাবে আর চালিয়ে নেওয়া যাবে না।
এ উপজেলার আইটপাড়া গ্রামের জাবেদ হোসেন বলেন, শহরের কাছাকাছি এলাকায় মানুষ যথেষ্ট ত্রাণ পাচ্ছেন। আমাদের এলাকা দূরবর্তী হওয়ায় বাইরে থেকে সহযোগিতা পাচ্ছি না। আমাদের অনেক অনেক ত্রাণ দরকার।
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত কুমিল্লার লাকসাম, নাঙ্গলকোট, চৌদ্দগ্রাম ও মনোহরগঞ্জের বন্যা পরিস্থিতির সামান্য উন্নতি হয়েছে। প্রায় পাঁচ সেন্টিমিটারের মতো পানি কমেছে ওইসব এলাকায়। অপরদিকে গোমতীর বাঁধ ভেঙে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। বুড়িচংয়ের পর ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার অধিকাংশ এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। গোমতীর পানি ঢুকছে দেবিদ্বার উপজেলাতেও।
মন্তব্য করুন
জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি), কুমিল্লা কর্তৃক ৫২ কেজি গাঁজা ও মাদক পরিবহনে ব্যবহৃত ১টি পিকআপ উদ্ধার।
গত সোমবার রাতে জেলা গোয়েন্দা শাখায় কর্মরত এসআই (নিঃ)/ নাসিম উল হক ইমরান সঙ্গীয় এএসআই/সজীব বড়ুয়া, এএসআই/জনি দেবদাস ও সঙ্গীয় ফোর্স সহ কুমিল্লা জেলার সকল থানা এলাকায় মাদকদ্রব্য উদ্ধার ও বিশেষ অভিযান ডিউটি করাকালে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মুরাদনগর থানাধীন পূর্ব নগরপাড় সাকিনস্থ গকুলনগর গামী রাস্তার পশ্চিম পাশ্বে জনৈক দুলাল মিয়ার মাঠে পৌঁছালে একটি রেজিঃ নম্বরবিহীন নীল রংয়ের পিকআপ গাড়ী পার্কিং করা অবস্থায় দেখে।
উক্ত গাড়ীর নিকট থাকা চালকসহ ০২/০৩ জন লোক ডিবি পুলিশ হিসেবে চিনতে পেরে তারা এদিক সেদিক ছুটাছুটি করে পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে আশপাশ হতে আগত উপস্থিত সাক্ষীদের মোকাবেলায় পলাতক আসামীদের পার্কিং করা রেজিঃ নম্বরবিহীন নীল রংয়ের পিকআপ গাড়ীটি তল্লাশী করে গাড়ীর পিছনের বডিতে বিশেষ কায়দায় তৈরী সেটিং বক্সের ভিতরে লুকানো অবস্থায় খাকী স্কচটেপ দ্বারা মোড়ানো ছোট-বড় মোট ১৭টি পোটলায় সর্বমোট ৫২ কেজি গাঁজা সহ ০১টি পিকআপ গাড়ী উদ্ধার করা হয়।
উক্ত ঘটনায় মুরাদনগর থানায় এজাহার দায়ের করলে মুরাদনগর থানার মামলা নং-০৭, তারিখ-১৩/১১/২০২৩খ্রিঃ, ধারা-২০১৮ সালের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রন আইনের ৩৬(১) এর টেবিল ১৯(গ) রুজু করা হয়।
মন্তব্য করুন
মো: মাসুদ রানা,কচুয়া ॥
চাঁদপুরের কচুয়ায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ১৪ কেজি গাঁজাসহ এক মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করেছে পুলিশ। শনিবার উপজেলার গুলবাহার এলাকা থেকে কচুয়া থনার এসআই মো. এনামুল হক ও এএসআই মফিজুল ইসলাম সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে তাকে গাঁজাসহ আটক করে। আটককৃত মাদক ব্যবসায়ী আলমগীর হোসেন মাছিমপুর গ্রামের মৃত. হোসেন আহম্মেদের ছেলে।
কচুয়া থানার ওসি মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তল্লাসি চালিয়ে গাঁজাসহ আটকে করা হয়। আটককৃত মাদক ব্যবসায়ী আলমীর হোসেনের বিরুদ্ধে কচুয়া থানায় মামলা দায়েরের পর চাঁদপুরের বিজ্ঞ আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরন করা হয়েছে।
মন্তব্য করুন
কুমিল্লা শিশু পার্ক এমন এক জায়গায় যেখানে আনাগোনা সব বয়সী মানুষের হয়, ছোট থেকে বৃদ্ধ পর্যন্ত।
শিশুরা এসে ঘুরে বেড়ানোর জন্য এখানে অনেক রাইড,দোলনা সহ অনেক কিছু যেমন আছে বয়সী ব্যক্তিরা এসেও যেন এখানে দু'দন্ড গাছের ছায়ায় বিশ্রাম নিতে পারে তেমন পরিবেশ রয়েছে।
সারা দেশের দেয়ালগুলো শিক্ষার্থীদের আঁকা গ্রাফিতিতে সুন্দরভাবে সেজে উঠেছে।
কুমিল্লার প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত এই শিশু পার্কের দেয়ালগুলো এর ব্যতিক্রম নয়।
বর্ণিল ক্যালিগ্রাফি আর গ্রাফিতিতে ভরে উঠেছে শিশু পার্কের প্রবেশের তোরণ।
মন্তব্য করুন
লালমনিহাট জেলার পাটগ্রাম উপজেলায় স্বামী হাসান আলীর মৃত্যুর ৭ ঘণ্টা পরই স্বামীর শোকে স্ত্রী মঞ্জু আরা বেগম মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন।
শনিবার (১৫ জুন) ভোর ৪টায় পাটগ্রাম উপজেলার বাউড়া ইউনিয়রের রসুলপুর গ্রামে মৃত্যুবরণ করেন স্বামী হাসান আলী (৫৫)। এরপর স্বামীর মৃত্যুর শোকে বেলা ১১ টায় মৃত্যুবরণ করেন স্ত্রী মঞ্জু আরা বেগম (৪৫)।
হাসান আলী ও মঞ্জু আরা বেগম দম্পতির তিন মেয়ে। দুই মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন আরেক মেয়ে স্থানীয় সরকারি আলিমুদ্দিন ডিগ্রি কলেজে অনার্স প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী।
স্বামীর শোকে মঞ্জু আরা বেগম ভোর থেকে কান্নায় ভেঙে পড়েন। এরপর বেলা ১১ টায় অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে স্থানীয় বাউড়া বাজারে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পর হাতীবান্ধা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এ নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
হাসান আলী একজন সুস্থ-সবল মুদি ব্যবসায়ী ছিলেন। প্রতিদিনের ন্যায় বাজার থেকে রাতে বাড়ি ফিরেন তিনি। এরপর ভোর ৪টার দিকে ঝড়ে পড়া আম খেয়ে কিছুক্ষণ পর স্ত্রীর সামনেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে হাসান আলী।
স্থানীয়রা বলেন, স্বামী স্ত্রীর মধ্যে ভালবাসার বন্ধন ছিল দৃঢ়। একজন আরেকজনকে খুবই ভালোবাসতেন। স্বামী-স্ত্রীর মৃত্যুতে তাদের বাড়িতে শত শত মানুষ ভিড় জমাচ্ছেন।
স্থানীয় সাহেব হোসেন জানান, হাসান আলী একজন সাদামনের মানুষ ছিলেন। আমরা জীবনে এমন মৃত্যু দেখি নাই। স্বামীর মৃত্যুর কয়েক ঘণ্টা পর স্ত্রীর মৃত্যু।
পাটগ্রাম উপজেলার বাউরা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান রাবিউল ইসলাম মিরন জানান, স্বামী স্ত্রীর মৃত্যু খবর পেয়ে তাদের বাড়িতে গিয়ে পরিবারকে সান্ত্বনা দিয়েছি।
মন্তব্য করুন
লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের দুর্গাপুর বাজার সংলগ্ন এলাকার জাকির হোসেন রাব্বি ১৪ বছরে ২৮৬টি বিয়ে করার রেকর্ড গড়ে আলোচনার ঝড় তুলেছেন । তার গ্রামের বাড়ি এলাকায় একজন দানশীল ব্যক্তি নামে পরিচিত ছিলেন। আত্মীয়-স্বজনরা জানতো তিনটি বিয়ের খবর। প্রতিবেশিরাও এতোগুলা বিয়ের খবর শুনে চমকে উঠেছেন।
গত বৃহস্পতিবার (১৮ জানুয়ারি) ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে অসুস্থ হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় জাকিরের।
বৃহস্পতিবার (২৫ জানুয়ারি) সরেজমিনে স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মৃত পনির হোসেন বেপারীর ছোট ছেলে জাকির হোসেন বেপারী এলাকায় একজন দানশীল ও মার্জিত স্বভাবের ব্যাক্তি হিসেবে পরিচিত ছিলেন। ঢাকায় গিয়ে নাম পরিবর্তন করে জাকির হোসেন বেপারীর স্থলে জাকির হোসেন রাব্বি হয়ে যায়।
জানা যায় তিনি ঢাকায় বড় কোম্পানিতে চাকরি করেন এবং উচ্চ শিক্ষিত বলে পরিচয় দিতেন। ঈদ ও শীতসহ বছরের বিভিন্ন সময় এলাকায় এসে খাদ্যসামগ্রী ও শীতবস্ত্র বিতরণ করতেন। গ্রামের অভাবি মানুষজনকে অর্থ সহায়তাও করতেন। এভাবেই জাকির এক সময় গ্রামের মানুষদের প্রিয় মুখ হয়ে যান।
জাকিরের বহু বিবাহের খবর এলাকাবাসী এখনো অনেকেই জানেন না। পোশাক পরিধানে ফিটফাট থাকা জাকিরের ভিতরের মানুষটিকে কখনোই চিনতে ও জানতে পারেনি এলাকার মানুষজন, এমনকি আত্মীয়-স্বজনও। জাকিরের বহু বিবাহের আড়ালে ছিল অর্থ আয় করা। আর ওই অর্থ দিয়েই গ্রামে গড়ে তোলেন দু’চালা টিনের ঘর থেকে পাকা বাড়ি। বোনদের বিয়ে দেয় ভালো ঘর দেখে। সম্প্রতি বেশ জাঁকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠান করে ছোট বোনেরও বিয়ে দেন জাকির।
প্রায় ১৪ বছর আগে বাবা পনির হোসেন বেপারীর মৃত্যু হয়। আর ৫ বছর আগে মারা যান তার মা। ৪ ভাই ও ৬ বোনের মধ্যে জাকির ছিল সবার ছোট। বাবা ছিলেন কোর্টের মুহুরি। ৪ ভাইয়ের মধ্যে এক ভাই মারা গেছেন। এক ভাই ঢাকায় গার্মেন্টের চাকরি করেন। আর এক ভাই গ্রামের বাজারে মুরগীর ব্যবসা করেন। টানাপোড়েন সংসার। এক সময় বাবার আয়েই চলতো পুরো সংসার। দুচালা টিনের ঘরে গাদাগাদি করে থাকতো তারা।বাবা মারা যাওয়ার পর পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়া শোনা করা জাকির এক আত্মীয়ের মাধ্যমে ঢাকা চলে যায়। এক পর শুরু হয় তার কৌশলী জীবনযাপন। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন স্থানে দেখতে সুর্দশন জাকির নিজেকে বিভিন্নভাবে উপস্থাপন করে নারীদের আকৃষ্ট করে বিয়ে করে টাকা হাতিয়ে নিয়ে আত্মগোপনে চলে যেতেন। আবার নতুন স্থানে গিয়ে পরিচয় গোপন রাখে, আবারও বিয়ে করে। এভাবেই চলতে থাকে তার প্রতারণার গল্প।
অবশেষে ঢাকা মিরপুরের এক নারীর করা ধর্ষণ মামলায় গত ২০১৯ সালে জাকির হোসেন রাব্বিকে গ্রেপ্তার করে তেজগাঁও থানা পুলিশ। সেই থেকে জেলেই ছিলেন আলিশান জীবনযাপন করা জাকির। পরে একাধিক নারীর করা মামলায় তাকে রিমান্ডে নিলে জবানবন্দিতে ১৪ বছরে ২৮৬টি বিয়ে করার কথা স্বীকার করেন তিনি। বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় খবর প্রচারিত হলে জাকিরের আসল পরিচয় প্রকাশ পায় ।
তবে জাকিরের প্রতিবেশী হিরন প্রামাণিক জানান, জাকিরকে আমরা গ্রামবাসী ভালো মানুষ হিসেবেই জানি। মাঝে মধ্যে এলাকায় এসে গরীব মানুষদের সাহায্য সহযোগিতা করতো। এতোগুলা বিয়ের খবর আমরা বলতে পারি না।
জাকিরের এলাকার স্থানীয় ইউপি সদস্য মেহেরুল ইসলাম জানান, জাকির এতোগুলা বিয়ে করেছে, এটি অবিশ্বাস্য। এমন খবর জানা নেই। আমরা জাকিরের ৩টি বিয়ের খবর জানি।
এদিকে গত ৩১ ডিসেম্বর ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে জাকির অসুস্থ হলে তাকে হাসপাতালে আনা হয়। পরে, সে সুস্থ হলে আবার তাকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর, ১৮ জানুয়ারি কারাগারে পুণরায় অসুস্থ হয়ে পড়লে তখন ঢাকা সোহরাওয়ার্দী মেডিকেলে আনা হয়। সেখানেই গত ২০ জানুয়ারি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় জাকির।
মন্তব্য করুন
নাটোরের লালপুরের হিরোইন সংরক্ষণ এবং বহনের দায়ে কবির ইসলাম (২০) নামে এক যুবককে যাবজ্জীবন কারাদন্ড ও ২০ হাজার টাকা অর্থদন্ডাদেশ দিয়েছে আদালত।
বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে লালপুর আমলি আদালতে এই রায় ঘোষণা করেন অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ এ এফ এম মারুফ চৌধুরী। কবির ইসলাম রাজশাহী জেলার মোহনপুর উপজেলার জাহানাবাদ গ্রামের মোনতাজ আলীর ছেলে।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে র্যাবের একটি আভিযানিক দল ২০২২ সালের ১৫ নভেম্বর লালপুর উপজেলার তিলকপুর বাজারে অভিযান পরিচালনা করে। অভিযান কালে কবির ইসলামকে সন্দেহ হলে তার দেহ তল্লাশি করা হয়। দেহ তল্লাশির পর তার জুতার ভেতর থেকে ২২০ গ্রাম হেরোইন উদ্ধার করা হয়। এই ঘটনায় র্যাব বাদি হয়ে লালপুর থানায় উপস্থিত হয়ে কবির ইসলামের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দায়ের করে। মামলা দায়েরের দুই বছর পর সাক্ষ্য গ্রহণ এবং শুনানি শেষে মামলার একমাত্র আসামি কবির ইসলামের উপস্থিতিতে যাবজ্জীবন কারাদন্ড এবং ২০ হাজার টাকা অর্থদন্ডাদেশ দেওয়া হয়। জরিমানার অর্থ অনাদায়ে আরো তিন মাসের কারাদন্ড প্রদান করেন আদালত।
মন্তব্য করুন
কুমিল্লায় ১৫ কেজি গাঁজাসহ দুইজন মাদক
ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-১১, সিপিসি-২।
আজ রবিবার (২০ অক্টোবর) দুপুরে র্যাব-১১,
সিপিসি-২ এর একটি বিশেষ আভিযানিক দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে কুমিল্লা জেলার কোতয়ালী
মডেল থানাধীন কাপ্তানবাজার এলাকায় মাদক বিরোধী অভিযান পরিচালনা করে আসামী ১। সোলেমান
আহমেদ ও ২। আবু সায়েম নামের দুইজন মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করে। এ সময় আসামীদ্বয়ের
কাছ থেকে ১৫ কেজি গাঁজা এবং মাদক পরিবহণ কাজে ব্যবহৃত একটি সিএনজি উদ্ধার করা হয়।
গ্রেফতারকৃত আসামী ১। সোলেমান আহমেদ
(২০) কুমিল্লা জেলার বুড়িচং থানাধীন খারেরা পূর্ব পাড়া এলাকার মৃত আব্দুর রাজ্জাক এর ছেলে এবং ২। আবু সায়েম (২১)
একই এলাকার শরিফুল ইসলাম এর ছেলে।
র্যাব জানান, গ্রেফতারকৃত আসামীদ্বয়কে
জিজ্ঞাসাবাদে আরো জানায় যে, তারা দীর্ঘদিন ধরে জব্দকৃত সিএনজি ব্যবহার করে কুমিল্লার
সীমান্তবর্তী এলাকা হতে মাদকদ্রব্য গাঁজা সংগ্রহ করে কুমিল্লাসহ বিভিন্ন স্থানে মাদক
ব্যবসায়ী ও মাদক সেবীদের নিকট পাইকারি ও খুচরা মূল্যে বিক্রয় করে আসছে। র্যাব-১১ এর
মাদক বিরোধী ধারাবাহিক অভিযানের অংশ হিসেবে উক্ত অভিযান পরিচালনা করা হয়। মাদকের মতো
সামাজিক ব্যাধির বিরুদ্ধে র্যাব-১১ এর অভিযান অব্যাহত থাকবে। গ্রেফতারকৃত আসামীদ্বয়ের
বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন।
মন্তব্য করুন
মুকুল বসু , বোয়ালমারী (ফরিদপুর) প্রতিনিধি:
ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার ময়না ইউনিয়নের একটি গ্রামের কৃষকেরা চোর আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে। রাতে ওই গ্রামের বিভিন্ন মাঠ থেকে সেচ মোটর চুরি হওয়ার পর অনেক কৃষক চোরের ভয়ে সেচ মোটর মাঠ থেকে খুলে এনে বাড়িতে রেখে দিয়েছেন বলে জানা গেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত দুই মাসে ময়না ইউনিয়নের কেওয়াগ্রাম থেকেই চুরি হয়েছে ২০-২২টি বৈদ্যুতিক সেচ মোটর। এসব বৈদ্যুতিক সেচ মোটর নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন ওই গ্রামের শতাধিক কৃষক। ভুক্তভোগী কৃষক ও এলাকাবাসীর অভিযোগ, যারা পুরাতন মোটর ক্রয়-বিক্রয় করে তাদের কাছে চুরির সাথে জড়িতদের তথ্য থাকতে পারে। এছাড়া বৈদ্যুতিক কাজে অভিজ্ঞতাসম্পন্ন লোকও এই চুরির কাজে জড়িত থাকতে পারে। ময়না ইউনিয়নের কেওয়াগ্রামের কৃষক হামিদুল্লাহ সিকদার বলেন, গত ১৬ এপ্রিল আমার সেচ পাম্পটি চুরি হয়ে যায়। এতে আমার কয়েক বিঘার জমিতে সেচ নিয়ে সমস্যায় পড়েছি। দিনদিন সেচ মোটর চুরি বেড়েই চলেছে। আমরা এর প্রতিকার চাই। একই গ্রামের আরেক কৃষক রেজাউল করিম বলেন, ‘পানি সেচ দেওয়া নিয়ে ভয়ে আছি। মোটর সংযোগ করলেই নিয়ে যাচ্ছে চোর চক্র। কিছুদিন আগে আমাদের একটি মোটর নিয়ে যায় চোর। ওই সেচ পাম্পের আওতায় থাকা কয়েক একর জমিতে বোরো ধানের আবাদে পানি সেচ কাজ ব্যাহত হচ্ছে। এতে কৃষি কাজে ব্যাঘাত সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা হোসেন মৃধা বলেন, 'আমাদের কেওয়াগ্রামের নূর ইসলাম, মুনাফ সিকদার, ওমর মোল্যা, শাফি শিকদার, ওসমান মৃধাসহ গত দুই মাসে অন্তত ২০টি বৈদ্যুতিক সেচ মোটর চুরি হয়েছে। এতে কৃষকেরা চরম বেকায়দায় পড়েছেন। আমরা চোরের উপদ্রব থেকে রেহাই পেতে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। এ ব্যাপারে ময়না ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল হক মৃধা বলেন, 'বিষয়টি আমার জানা নেই। চুরির ব্যাপারে কেউ কোন অভিযোগও করেনি।
মন্তব্য করুন