কুমিল্লা জেলার তিতাস উপজেলায় নানার
বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে নদীতে ডুবে মাহিরা নামের আড়াই বছরের এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। ঘটনাটি
ঘটেছে শনিবার (২৭ জুলাই) সকালে তিতাস উপজেলার বাঘাইরামপুর গ্রামে।
নিহত মাহিরা উপজেলার বন্দরামপুর গ্রামের
মুছা সরকারের মেয়ে।
নিহতের নানা জালাল উদ্দীন বলেন, প্রতিদিনের
মতো মাহিরা বাড়ির অন্য শিশুদের সঙ্গে খেলতে বের হয়। তার কিছুক্ষণ পর অন্যসব শিশুরা
ফিরে এলেও তাদের সঙ্গে মাহিরাকে দেখতে না পেয়ে খোঁজাখুঁজি শুরু করি। অনেক খোঁজাখুঁজির
পর কোথাও না পেয়ে বাড়ির পাশে নদীর তীরে কাদা-পানির মধ্যে মাহিরাকে ভাসতে দেখি। তাৎক্ষণিকভাবে
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
মন্তব্য করুন
কুমিল্লায় নূর আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজে নির্মাণাধীন ভবন ধসে সাইফুল ইসলাম সাগর নামে ৫ম শ্রেণির এক শিক্ষার্থী নিহত হয়েছে।
আজ সকালে সদর দক্ষিণ উপজেলার শাকতলা নোয়াগাও এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত সাইফুল ইসলাম সাগর নূর আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র ছিল। সে শাকতলা এলাকার অলি আহমেদের বড় ছেলে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন সদর দক্ষিণ উপজেলার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলমগীর ভূঁইয়া।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, নূর আইডিয়াল স্কুল ও কলেজের টিনশেড বিল্ডিংয়ে ক্লাশ করছিল সাগর ও তার সহপাঠীরা। এ সময় হঠাৎ করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির নির্মাণাধীন ছয় তলার ওপরের অংশ ভেঙে পড়ে। এ সময় ইট পাথরের নিচে চাপা পড়ে সাগর। স্থানীয়রা সাগরকে উদ্ধার করে কুমিল্লা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক রাসেল খান তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
চিকিৎসক রাসেল জানান, সাগরের মাথায় প্রচণ্ড আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, হসপিটালে নিয়ে যাওয়ার আগেই তার মৃত্যু হয়।
নিহত সাগরের বাবা অলি আহমেদ জানান, সকালে স্কুলের জন্য বাসা থেকে বের হয় সাগর। তারপর লোকমুখে শুনতে পান স্কুলে ভবন ভেঙে পড়ে তার ছেলে মারা যায়।
মন্তব্য করুন
কুমিল্লায়
১০১ পিস মোবাইল ফোনসহ একজন আসামীকে গ্রেফতার করেছে জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)।
গত
মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) রাতে জেলা গোয়েন্দা শাখা, কুমিল্লার একটি টিম কুমিল্লা জেলায় বিশেষ
অভিযান পরিচালনা করে কুমিল্লা কোতয়ালী মডেল থানাধীন ২নং উত্তর দূর্গাপুর ইউপির শংকরপুর
সাকিনস্থ আইএফআইসি ব্যাংকের সামনে পাকা রাস্তার উপর পৌছাঁলে ডিবি পুলিশ চিনতে পেরে
আসামী একটি প্লাষ্টিকের বস্তাসহ দৌঁড়ে পালানোর চেষ্টা করলে বস্তাসহ আটক করা হয়। বস্তুা
তল্লাশি করে ১০১ পিস নতুন-পুরাতন মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।
গ্রেফতারকৃত
আসামী হলো: কুমিল্লা জেলা ব্রাহ্মণপাড়া থানার রানীগাছ গ্রামের মোঃ রুবেল মিয়া’র ছেলে
মোঃ পারভেজ মিয়া (৩০)।
গ্রেফতারকৃত
আসামীর বিরুদ্ধে কুমিল্লা বুড়িচং থানায় মামলা দায়ের করা হয।
মন্তব্য করুন
কুমিল্লার দাউদকান্দিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে নিহত দুই কিশোরের লাশ উত্তোলন করেছে পুলিশ।
মামলার তদন্ত কাজের স্বার্থে আদালতের নির্দেশে গতকাল শনিবার (২৬ অক্টোবর) তাদের লাশ কবর থেকে তোলা করা হয়েছে।
তারা হলেন, দাউদকান্দির সুকিপুর গ্রামের মৃত আব্দুল হামিদের ছেলে মো. রিফাত (১৬)। রিফাত উপজেলার সুন্দলপুর হাই স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্র ছিলেন। অপরজন দিনমজুর মো.বাবু মিয়া (২৩)। বাবু মিয়া উপজেলার তুজারভাঙ্গা গ্রামের অটোরিকশা চালক আব্দুল মান্নানের ছেলে।
গত ৪ আগস্ট দাউদকান্দিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় রিফাত বুকে গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হন। ওইদিন রাতেই মারা যান রিফাত। পরদিন রিফাতের মরদেহ ময়নাতদন্ত ছাড়াই দাফন করে তার পরিবার।
এ ঘটনার ১৪ দিন পর ১৮ আগস্ট রিফাত হোসেনের মামা পরিচয়ে আব্দুর রাজ্জাক ফকির বাদী হয়ে দাউদকান্দি মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এরপর গত ১ সেপ্টেম্বর রিফাত হত্যার ঘটনায় কুমিল্লার আদালতে আরেকটি হত্যা মামলা করেন তার মা নিপা বেগম। মামলাটির তদন্ত করছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
দুই মামলাতেই সাবেক সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার আব্দুস সবুর, উপজেলা চেয়ারম্যান মেজর (অব.) মোহাম্মদ আলী সুমন, পৌর মেয়র নাইম ইউসুফ সেইন-সহ ইউপি চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের চার শতাধিক নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে।
অপরদিকে, গত ৫ আগস্ট বিকেলে দাউদকান্দি মডেল থানার সামনে দিনমজুর মো. বাবু মিয়া (২৩) গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। ময়নাতদন্ত ছাড়াই তাকে দাফন করা হয়। নিহত দিনমজুর বাবুর প্রতিবেশী লিটন আহম্মেদ পাভেল বাদী হয়ে ৪৮ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ১৫০ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন।
ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন না থাকায় আদালতের নির্দেশে তাদের দুজনের লাশ উত্তোলন করা হয় বলে জানিয়েছে পুলিশ।
তাদের লাশ উত্তোলনের সময় উপস্থিত ছিলেন, দাউদকান্দি উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) রেদওয়ান ইসলাম ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা দাউদকান্দি মডেল থানার উপপরিদর্শক হারুনুর রশিদ।
দাউদকান্দি উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) রেদওয়ান ইসলাম জানান, আদালতের নির্দেশে আইনি কার্যক্রম পরিচালনার জন্য লাশ উত্তোলন করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের পর আবার লাশ স্বজনদের নিকট হস্তান্তর করা হবে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনের আলোকে পরবর্তী কার্যক্রম পরিচালিত হবে।
মন্তব্য করুন
আজ রবিবার (৬ জুলাই) সকালে র্যাব-১১, সিপিসি-২
এর একটি বিশেষ আভিযানিক দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে কুমিল্লা জেলার সদর দক্ষিণ মডেল
থানাধীন জীবন্তপুর (মিস্ত্রী পুকুরপাড়) এলাকায় মাদক বিরোধী অভিযান পরিচালনা করে নাজমুল
হাসান (৩৮) নামক একজন মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করেছে।
এ সময় আসামীর হেফাজত হতে ১০ কেজি গাঁজা ও মাদক পরিবহণ কাজে ব্যবহৃত একটি ইজিবাইক উদ্ধার করা হয়।
গ্রেফতারকৃত আসামী নাজমুল হাসান (৩৮) কুমিল্লা
জেলার সদর দক্ষিণ মডেল থানার দিশাবন্দ পশ্চিমপাড়া গ্রামের খোরশেদ আলম এর ছেলে।
র্যাব জানান, সে দীর্ঘদিন ধরে জব্দকৃত ইজিবাইক
ব্যবহার করে কুমিল্লার সীমান্তবর্তী এলাকা হতে মাদকদ্রব্য গাঁজা সংগ্রহ করে
কুমিল্লার বিভিন্ন স্থানে মাদক ব্যবসায়ী ও মাদক সেবীদের নিকট পাইকারি ও খুচরা
মূল্যে বিক্রয় করে আসছে। র্যাব-১১ এর মাদক বিরোধী ধারাবাহিক অভিযানের অংশ হিসেবে
উক্ত অভিযান পরিচালনা করা হয়। মাদকের মতো সামাজিক ব্যাধির বিরুদ্ধে র্যাব-১১ এর
অভিযান অব্যাহত থাকবে। গ্রেফতারকৃত আসামীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ
প্রক্রিয়াধীন।
মন্তব্য করুন
বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের ঘোষণা অনুযায়ী বুধবার (৮ মে) প্রথম ধাপের কুমিল্লার নাঙ্গলকোট উপজেলা নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল। তবে সোমবার (৬ মে) রাত ১০টায় নির্বাচন পরিচালক-২ এর উপসচিব আতিয়ার রহমানের স্বাক্ষরিত চিঠিতে নাঙ্গলকোট উপজেলা নির্বাচন স্থগিত করা হয়।
গতকাল (৬ মে) রাত ১১টার দিকে কুমিল্লা
জেলা সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মুনীর হোসাইন খান এ স্থগিত আদেশের
সত্যতা নিশ্চিত করেন।
নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা যায়, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে সালেহা আক্তার পলি নামের এক প্রার্থী মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেন। যাচাই বাছাই শেষে তার প্রার্থিতা বাতিল করেন জেলা নির্বাচন কমিশনার। পরে তিনি হাইকোর্টে আপিল করেন। সোমবার (৬ মে) দুপুরে হাইকোর্ট তার প্রার্থিতা বৈধ ঘোষণা করেন।
এ দ্রুত সময়ের মধ্যে ব্যালট পেপার ছাপাতে না পারার কারণে এ নির্বাচন পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত স্থগিত করা হয়।
মন্তব্য করুন
সাম্প্রতিক বন্যায় কুমিল্লা জেলার বুড়িচং এলাকা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।বন্যার পানি কমে এলেও এখনো দুর্ভোগ শেষ হয়নি সাধারণ অসহায় মানুষের।
তাইতো কুমিল্লা জেলার বুড়িচং উপজেলার হরিপুর গ্রামের বন্যা দুর্গত এলাকার মানুষের মাঝে উপহার সামগ্রী বিতরণ করতে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে পাশে এসে দাঁড়িয়েছে বিবেক।
বিবেক হচ্ছে একটি সামাজিক সংগঠন। সমাজের মানুষের সহযোগিতার কল্যাণে যে প্রতিষ্ঠানটি সার্বক্ষণিক কাজ করে আসছে।
উক্ত প্রতিষ্ঠানটি প্রতিষ্ঠাতা এবং চেয়ারম্যান হলেন ইউসুফ মোল্লা টিপু যিনি কুমিল্লা মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব।
শনিবার ৭ সেপ্টেম্বর বিবেকের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান এর উদ্যোগে বিবেকের একটি টিম বুড়িচং এলাকায় হরিপুর আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ে বন্যার্তদের মাঝে উপহার সামগ্রী বিতরণ কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করে।
বন্যা
দুর্গতদের পাশে সহযোগিতার হাত নিয়ে বিবেকের এই উদ্যোগ সামনের দিনগুলোতেও চলমান থাকবে।
মন্তব্য করুন
কুমিল্লার দাউদকান্দি থেকে র্যাবের পৃথক অভিযানে ১৬ হাজার ইয়াবা বড়ি ৬ লক্ষ টাকাসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। রোববার দুপুর সাড়ে ১২টায় বিষয়টি নিশ্চিত করেন র্যাব-১১, সিপিসি-২, কুমিল্লার কোম্পানী অধিনায়ক লেঃ কমান্ডার মাহমুদুল হাসান।
র্যাব জানায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রোববার ভোর রাতে কুমিল্লা জেলার দাউদকান্দি উপজেলার তালতলী এলাকায় মাদক বিরোধী অভিযান পরিচালনা করে। অভিযানে মোঃ সোহাগ মোল্লা (২৮) নামে এক মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তার কাছ থেকে ১৬ হাজার ইয়াবা বড়ি ও নগদ পাঁচ লাখ ৯৮ হাজার ৩০০ টাকা উদ্ধার করা হয়।
অন্যদিকে দাউদকান্দি উপজেলার জুরানপুর এলাকায় মাদক বিরোধী অভিযানে মোঃ শাহাদাত হোসেন শান্ত (২৬), হৃদয় মিয়া (২৩) এবং মোঃ শাহিন মিয়া শাকিল (২৩) নামে তিন মাদক ব্যবসায়ী গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে ৩০৪টি ইয়াবা বড়ি উদ্ধার করা হয়।
মন্তব্য করুন
নেকবর হোসেন, কুমিল্লা প্রতিনিধি:
কুমিল্লা সীমান্তে পৃথক অভিযান চালিয়ে ব্যাটালিয়ন (১০ বিজিবি) ১ কোটি ২২ লাখ ২ হাজার টাকার ভারতীয় অবৈধ চোরাচালান পণ্য উদ্ধার করেছে। শনিবার দুপুরে জেলার চৌদ্দগ্রাম সীমান্ত থেকে এসব পণ্য উদ্ধার করা হয়। এ সময় বিজিবি ভারতীয় বাজি ও চিংড়ি মাছের রেণুসহ একটি ট্রাক আটক করেছে।
আজ শনিবার দুপুরে প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ব্যাটালিয়ন (১০ বিজিবি) এই তথ্য নিশ্চিত করেছে। জানা গেছে, কুমিল্লা ব্যাটালিয়ন (১০ বিজিবি) তাদের দায়িত্বপূর্ণ সীমান্ত এলাকায় চোরাচালান প্রতিরোধসহ আন্তঃ সীমান্ত অপরাধ দমনে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করে থাকে। শনিবার দুপুরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে কুমিল্লা জেলার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার আওতাধীন শিবের বাজার বিওপি’র বিশেষ টহলদল দায়িত্বপূর্ণ সীমান্ত এলাকায় মাদক ও চোরাচালান বিরোধী পৃথক পৃথক অভিযান পরিচালনা করে।
উক্ত অভিযানে সীমান্তের ৫ কিলোমিটার বাংলাদেশের অভ্যন্তরে বিজিবি টহল দল কর্তৃক মালিকবিহীন অবস্থায় ১ লাখ ২০ হাজার ৪’শ পিস বিভিন্ন প্রকার ভারতীয় বাজি এবং ৪২ ড্রাম চিংড়ি মাছের রেণুসহ একটি ট্রাক আটক করা হয়। যার মূল্য ১ কোটি ২২ লাখ ২ হাজার টাকা বলে ধারণা করা হচ্ছে। জব্দকৃত মালামাল বিধি মোতাবেক কাস্টমসে জমা করা হবে বলে জানানো হয়েছে।
মন্তব্য করুন
কুমিল্লায়
ক্লুলেস শরীফ হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন, মূলহোতাসহ ৩ জনকে গ্রেফতার এবং হত্যাকান্ডে
ব্যবহৃত মালামাল উদ্ধার করেছে বরুড়া থানা পুলিশ।
গত
২৭ মার্চ সকালে বরুড়া থানাধীন বরুড়া পৌরসভাস্থ শালুকিয়া এলাকায় শরীফ হোসেন(৩৫) এর মৃত
দেহ তার ঘরে মাটিতে পড়া অবস্থায় ছিলো।
মৃত
শরীফ হোসেন এর মা রৌশন আরা বেগম থানায় এজাহার দায়ের করেন। মামলাটি তদন্ত করেন এসআই(নিঃ)
নাজিম উদ্দিন।
ভিকটিম
শরীফ হোসেন(৩৫) এর লাশ পাওয়ার পর হতে পুলিশ সুপার, কুমিল্লার সার্বিক দিক নির্দেশনায়
সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার এ,কে,এম এমরানুল হক মারুফ, সদর দক্ষিণ সার্কেল, কুমিল্লার
তত্ত্বাবধানে বরুড়া থানার অফিসার ইনচার্জ, মোঃ রিয়াজ উদ্দিন চৌধুরী, এসআই(নিঃ) নাজিম
উদ্দিনসহ বরুড়া থানা পুলিশের একটি চৌকস টীম তদন্ত কার্যক্রম শুরু করেন।
তবে
নিহতের পরিবার ও এলাকার লোকজনের সাথে কথা বলে হত্যাকান্ডের কোন যোগসূত্র পাওয়া যাচ্ছিল
না। তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় বিভিন্ন তথ্য উপাত্তের ভিত্তিতে হত্যাকান্ডে জড়িত ব্যক্তিদের
শনাক্তের জন্য বরুড়া থানার অফিসার ইনচার্জসহ টীম বরুড়া বারবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন ও
জিজ্ঞাসাবাদ কার্যক্রম পরিচালনা করেন। তদন্ত কার্যক্রমের একপর্যায়ে হত্যাকান্ডে জড়িত
আসামী ১। আরিফ হোসেন(২২), ২। মোঃ নাছির উদ্দিন(৪৩), ৩। মিসেস খুকী আক্তার(৩৫) কে গ্রেফতার
করেন। গ্রেফতারকৃত আসামীরা হত্যাকান্ডের জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে। ১নং আসামী মৃত
শরীফ হোসেন এর ছোট ভাই, ৩নং আসামী মৃত শরীফ হোসেনের বড় বোন এবং ২নং আসামী ৩নং আসামীর
স্বামী।
গ্রেফতারকৃত
আসামীরা হত্যাকান্ডের জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে জানান, মৃত শরীফ হোসেন উচ্ছৃঙ্খল
জীবন যাপন করত। সে মাদক সেবনসহ বিভিন্ন অপকর্মের সাথে জড়িত ছিল। এলাকার লোকজন তাকে
ভয় পেতো। মৃত শরীফ হোসেন তার মাকে প্রায় সময়ই গালিগালাজ ও মারধর করত। ছোট ভাই আরিফ
হোসেনের সাথেও তার ঝগড়াঝাটি ছিল। কিছুদিন আগে আরিফ হোসেন এর একটি অটোরিক্সা শরীফ হোসেন
জোরপূর্বক বিক্রি করে। ইহাকে কেন্দ্র করে দুই ভাইয়ের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয়। তাছাড়া
মৃত শরীফ হোসেন এলাকার লোকজনের বিভিন্ন রকম ক্ষতি করায় ক্ষতিগ্রস্থ লোকজন তার বড় বোন
খুকি আক্তার এর নিকট বিচার প্রার্থী হলে বড় বোন শরীফ হোসেনকে শাসন করার জন্য বিভিন্ন
কথাবার্তা বলত। ফলে মৃত শরীফ হোসেন বোনকে শক্র মনে করত। এমনকি বোনকে বিভিন্ন রকম হুমকি
দিতো। মৃত শরীফ হোসেনের অত্যাচারে অতিষ্ট হয়ে বড় বোন খুকি আক্তার, বোনের স্বামী মোঃ
নাছির উদ্দিন ও ছোট ভাই আরিফ হোসেন তাদের একজন প্রতিবেশীকে নিয়ে পরিকল্পনা করে যে,
শরীফ হোসেনকে মারপিট করে পঙ্গু করে ঘরে বসিয়ে খাওয়াইবে। পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী আসামীগন
গত ২৬/০৩/২০২৪খ্রিঃ তারিখ দিবাগত রাত ১টায় ঘটিকার সময় বরুড়া থানাধীন বরুড়া পৌরসভাস্থ
শালুকিয়া সাকিনের শঙ্কু ডাক্তারের পুকুর পাড়ে নির্জনস্থানে শরীফ হোসেনকে একা পেয়ে আসামীদের
হাতে থাকা রড, দা ও টর্চ লাইট দিয়ে শরীফ হোসেনের মাথা, হাত, পা ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে
পিটিয়ে গুরুত্বর কাটা রক্তাক্ত ও ফুলা জখম করে। তারপর শরীফ হোসেনের হাত পা বেধে আসামী
নাছির উদ্দিনের বাড়ির উঠানে নিয়ে যায়। সেখানে নিয়ে যাওয়ার পর শরীফ হোসেনকে আবারও মারপিট
করে। তারপর শরীফ হোসেন দুর্বল হয়ে গেলে আসামীগন হাত পা বাঁধা অবস্থায় শরীফ হোসেনকে
তার ঘরে মাটিতে ফেলে আসে। সকালে আসামীরা জানতে পারে শরীফ হোসেন মারা গেছে। সংবাদ পেয়ে
আসামীরা শরীফ হোসেনকে দেখতে যায়।
হত্যাকান্ডে
আসামীদের ব্যবহৃত দা, রড, টর্চ লাইট উদ্ধার করে পুলিশ।
পুলিশ
জানান, গ্রেফতারকৃত আসামীদেরকে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃত আসামী ১।
আরিফ, ২। নাছির এর ১৬৪ ধারা মোতাবেক জবানবন্দি লিপিবদ্ধ করা হয়েছে।
মন্তব্য করুন
মজিবুর রহমান পাবেল, কুমিল্লা:
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত
কয়েদি থেকে কারামুক্ত এক কর্মজীবী নারীতে পরিণত হয়েছেন মোসা: পারভীন আক্তার। হত্যা
মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত হয়ে ২০০২ সালের ১৯ আগস্ট কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারে প্রবেশ
করেছিলেন কয়েদি নম্বর ৩৮০২/এ, পারভীন আক্তার। পরে উচ্চ আদালতে আপিলের মাধ্যমে তার সাজা
কমে গিয়ে হয় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড। দীর্ঘ প্রায় ২৩ বছর পর, প্রশিক্ষণ ও কঠোর পরিশ্রমে
অর্জিত ৫৭ হাজার টাকা সঞ্চয় নিয়ে আজ তিনি মুক্ত হলেন।
কারা
বিভাগ "রাখিব নিরাপদ, দেখাব আলোর পথ" এই শ্লোগানে বন্দিদের দক্ষতা উন্নয়নে
নানা প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকে। সেই ধারাবাহিকতায়, কারাগারে অবস্থানকালে পারভীন আক্তার নেন
নকশীকাঁথা সেলাই ও সুঁই-সুতার কাজের প্রশিক্ষণ। তার হাতে তৈরি কারাপণ্য বিক্রি হয় বাণিজ্য
মেলা ও কারাগারের শো-রুমে। বিক্রয়লব্ধ অর্থের ৫০ শতাংশই পারিশ্রমিক হিসেবে বন্দিদের
হাতে তুলে দেয় কারা কর্তৃপক্ষ।
সেই
ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র আয় থেকেই পারভীন আক্তার নিজের প্রিজনার ক্যাশ একাউন্টে জমা করেন ৫৭
হাজার টাকা। যা তিনি আজ মুক্তির দিন নিজের হাতে পেয়েছেন। প্রশিক্ষণ ও সঞ্চয়ের এই ফল
পেয়ে আবেগাপ্লুত পারভীন জানান, "কারা কর্তৃপক্ষ শুধু শাস্তিই দেয়নি, জীবনের নতুন
আলো দেখিয়েছে। আমি চিরকৃতজ্ঞ।"
বাংলাদেশ
জেলের এই মানবিক ও পুনর্বাসনমূলক দৃষ্টান্ত সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তনের বার্তা দিচ্ছে।
পারভীন আক্তারের জীবন আমাদের মনে করিয়ে দেয়— সংশোধনের সুযোগ থাকলে, প্রত্যেক মানুষই
পরিবর্তনের পথে ফিরতে পারেন।
মন্তব্য করুন