জাপানের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (ইপিএ) করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। এজন্য আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে ৪র্থ দফায় ঢাকায় বৈঠকে বসবে বাংলাদেশ-জাপান।
মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মোহাম্মদ রফিকুল আলম এ তথ্য জানান।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মোহাম্মদ রফিকুল আলম জানায়, গত ১৮-২০ ডিসেম্বর জাপানে বাংলাদেশ এবং জাপানের মধ্যকার মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (ইপিএ) সম্পাদনে ৩য় দফা আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। জাপানের সঙ্গে চলমান এই আলোচনায় বাংলাদেশের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় নেতৃত্ব দিচ্ছে। এই বছর ইতোমধ্যেই আরও দুই দফা আলোচনা হয়েছে। ১ম ও ২য় দফা আলোচনা ঢাকায় ১৯-২৩ মে এবং ১০-১৪ নভেম্বর তারিখে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মোহাম্মদ রফিকুল আলম বলেন, সফলভাবে আলোচনা সম্পন্ন হলে এটি হবে যে কোনো দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের প্রথম মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি। আলোচনার চতুর্থ দফা আগামী ফেব্রুয়ারিতে ঢাকায় এবং পঞ্চম দফা টোকিওতে এপ্রিলে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। মোট ২১টি অধ্যায়ের ওপর আলোচনা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মোহাম্মদ রফিকুল আলম বলেন, এগুলোর মধ্যে রয়েছে ট্রেড ইন গুডস, ট্রেড ইন সার্ভিসেস, রুলস অব অরিজিন, কাস্টমস প্রসিডিউর ও ট্রেড ফেসিলিটেশন, স্যানিটারি ও ফাইটোস্যানিটারি মেজারস, সরকারি ক্রয়, প্রতিযোগিতার নীতি, ই-কমার্স, বিনিয়োগ এবং ইন্টেলেকচুয়াল প্রপার্টি ব্যবসা পরিবেশের উন্নতি।
মন্তব্য করুন
১০০০ টাকার নোট বাতিলের কোনো সিদ্ধান্ত নেই বলে জানিয়ে দিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর।
তিনি বলেন, ১০০০ টাকার নোট বাতিলের গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে, কিন্তু নোট বাতিলের এমন কোনো সিদ্ধান্ত নেই।
মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) বাংলাদেশ ব্যাংকে বোর্ড মিটিং শেষে গভর্নর এ কথা বলেন।
১০০০ টাকার নোট থেকে শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি বাদ দেওয়া ও নতুন গভর্নরের স্বাক্ষর করা নোট শিগগিরই আসবে কি না জানতে চাইলে গভর্নর বলেন, যখন টাকশালে নোট বানানোর প্রয়োজন হবে তখন নোট ছাপানো হবে। তখন গভর্নরের স্বাক্ষর যাবে। আর্থিক অনিয়মের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে সেটা হবে অনিয়মে জড়িত ব্যক্তির বিরুদ্ধে, তাদের প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে নয়। কারণ প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে অনেক কর্মসংস্থানের বিষয় জড়িত আছে।
মন্তব্য করুন
সরকার রোজার শুরুতেই খেজুর ও চিনির দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে ।
সোমবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব ফুয়ারা খাতুনের সই করা এক সার্কুলারে এসব তথ্য জানা গেছে। এতে বলা হয়, নিম্নমানের খেজুরের দাম ধরা হয়েছে কেজিতে ১৫০ থেকে ১৬৫ টাকা। আর বহুল ব্যবহৃত জাইদি খেজুরের কেজি নির্ধারণ করা হয়েছে ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা।
প্রতি কেজি অতি সাধারণ খেজুরের দর ঠিক করা হয়েছে ১৫০ থেকে ১৬৫ টাকা। এছাড়া কেজিপ্রতি চিনির মূল্য ১৪০ টাকা ধার্য করা হয়েছে।
পাশাপাশি প্রতি কেজি চিনির মূল্য ১৪০ টাকা ঠিক করা হয়েছে। তাছাড়া প্যাকেটজাত চিনির সর্বোচ্চ দর ধার্য করা হয়েছে ১৪৫ টাকা। এসব দামে খেজুর ও চিনি বিক্রি করতে ব্যবসায়ীদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু বলেন, সাধারণ মানুষের কথা চিন্তা করে নিম্নমানের খেজুরের মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে দামি খেজুরের দাম ঠিক করে দেয়া হয়নি। ভারত থেকে ৫০ হাজার টন পিঁয়াজ আমদানির প্রক্রিয়া চলছে। আশা করি, শিগগিরই তা দেশে আসবে। এতে মসলাজাতীয় পণ্যটির দরও কমে যাবে।
প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন, সরকার নিত্যপণ্যের দাম কমানোর চেষ্টায় করছে। বাজারে কোনো পণ্যের স্বল্পতা নেই। চালের দরম নিয়েও অস্বস্তি নেই। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখতে মনিটরিং হচ্ছে।
মন্তব্য করুন
উত্তরাঞ্চলের বড় বড় হাট-বাজারগুলোয় ধান-চালের দাম কমতে শুরু করেছে । তার মধ্যে জাত ও মানভেদে ধানের দাম মণে কমেছে ৫০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত। এছাড়া চালের দাম মণে কমেছে ৮০ থেকে ১২০ টাকা পর্যন্ত।
উত্তরাঞ্চলের অন্যতম বড় বাজার বগুড়ার নন্দীগ্রামের রণবাঘা হাট। গতকাল শুক্রবার হাটের ব্যবসায়ীরা জানান, হঠাৎ করে চাল কেজিতে ২ থেকে ৩ টাকা অর্থাৎ মণে ৮০-১২০ টাকা কমে যায়। এর প্রভাব পড়ে ধানের দামে। জাত ও মানভেদে ধানের দাম মণে কমেছে ৫০ থেকে ২০০ টাকা। ধানের দাম কমে যাওয়ায় গতকাল ওই হাটে যেমন কম ছিল পাইকারি ক্রেতা, তেমনি কম ছিলেন ক্ষুদ্র চাষিরা।
কৃষক ও ব্যবসায়ীরা জানান, প্রশাসনিক উদ্যোগের পাশাপাশি অটোরাইচ মিলগুলো হঠাৎ ধান কেনা বন্ধ করে দেওয়ায় বাজারে এর প্রভাব পড়েছে।
পাইকারি ক্রেতারা জানান গত সপ্তাহে এই হাট থেকে ৯০ জাতের চিকন ধান কিনেছিলেন ২ হাজার ১০০ টাকা পর্যন্ত। এখন একই মানের ধানের দাম কমে হয়েছে ১ হাজার ৭৫০ টাকা। অর্থাৎ মণে কমেছে ৩৫০ টাকা।
উত্তরাঞ্চলের অন্যতম বড় ধান উৎপাদনকারী এলাকা নাটোরের সিংড়া উপজেলা। ধান নিয়ে রণবাঘা হাটে এসে ক্ষুদ্র চাষিরা নজরুল ইসলাম প্রতিমণ ধান ১ হাজার ৩১০ টাকা দরে বিক্রি করেন। গত সপ্তাহে তিনি এ হাটেই একই জাতের ধান বিক্রি করেছেন ১ হাজার ৩৬০ টাকা দরে। বাজারে চালের দাম কমে যাওয়ায় পড়ে গেছে ধানের দর। তাদের আশঙ্কা ধানের দাম আরও কমবে।
এদিকে গতকাল দিনাজপুরের বির উপজেলার ওরিয়েন্টাল এগ্রো নামে এক প্রতিষ্ঠানের গুদামে অভিযান চালায় জেলা প্রশাসন। তাদের গুদামে জব্দ করা হয় ৬৫ কেজি ওজনের ৫ হাজার বস্তা ধান।
জেলা খাদ্যনিয়ন্ত্রক কামাল হোসেন জানান, অবৈধ ভাবে মজুত করায় ওই প্রতিষ্ঠানের মালিকের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। দিনাজপুরে ধানের দাম কমেছে মণে মান ও জাতভেদে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা।
বগুড়ায় নন্দীগ্রামে মায়ামানির অটো রাইস মিল মালিক মিজানুর রহমান জানান, প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়ায় বাজারে ধানের দাম কমেছে। তিনি বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখতে আরও প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানান।
মন্তব্য করুন
পটুয়াখালীতে ২৩ হাজার ৬০০ হেক্টর জমিতে সাড়ে ছয় লাখ মেট্রিক টন তরমুজ উৎপাদন হয়েছে। এসব তরমুজের বাজার মূল্য দুই হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে বলে দাবি করছেন জেলার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর।
উৎপাদিত এসব তরমুজ উচ্চমূল্যে বিক্রি করতে পেরে খুশি কৃষক। গত বছরের বৃষ্টিতে তরমুজ চাষের ক্ষতি পুষিয়ে এবার লাভবান চাষিরা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, মাঠের পর মাঠ তরমুজ ক্ষেত। চারদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে তরমুজ। ক্ষেত থেকে তরমুজ তুলে জড়ো করে রেখেছেন বিক্রির জন্য। দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে ব্যাপারীরা তরমুজ কিনতে ক্ষেতে গিয়ে চাষিদের সঙ্গে দরদাম করে কিনে নিচ্ছেন। এই তরমুজ ট্রাক-ট্রলি ও ট্রলারে বোঝাই করে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে পাঠানোর প্রস্তুতি নিচ্ছেন শ্রমিকরা। বর্ষা মৌসুম শুরু হওয়ার আগেই ক্ষেত থেকে তুলে বাজারজাতে ব্যস্ততা দেখা গেছে চাষিদের মাঝেও।
এসব দৃশ্য দেখা গেছে পটুয়াখালীর গলাচিপা, দশমিনা, কলাপাড়া ও রাঙ্গাবালী উপজেলার তরমুজ ক্ষেতে। চাষিরা জানান, জেলার গলাচিপা ও রাঙ্গাবালীতে প্রচুর তরমুজ চাষ হয়েছে। তবে বরি মৌসুমে অল্প সময়ে তরমুজ আবাদ ও লাভজনক হওয়ায় পটুয়াখালীর চাষিদের মধ্যে আগ্রহ অনেক বেড়েছে।
একই এলাকার চাষি সেলিম হাওলাদার (৪২) বলেন, তরমুজ চাষের জন্য অন্যের কাছে থেকে এক বছরের চুক্তিতে দুই একর জমি লিজ নিয়েছি। এর মধ্যে চাষযোগ্য ১৬০ শতাংশ জমিতে তরমুজ আবাদ করেছি। এতে বীজ ও সার-ওষুধসহ মোট খরচ হয়েছে এক লাখ টাকার মতো। আর বিক্রি করেছি চার লাখ টাকা।
তিনি আরও বলেন, আমি গত বছরগুলোতে তরমুজ চাষ করে তেমন লাভ করতে পারিনি। এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় তরমুজ ভালো হয়েছে এবং লাভবান হয়েছি।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর জানিয়েছে, এ বছর জেলায় ২৩ হাজার ৬০০ হেক্টর জমিতে তরমুজের আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি আবাদ হয়েছে গলাচিপা উপজেলায়। এ উপজেলায় আট হাজার ৯৫০ হেক্টর জমিতে রসালো ফলটির চাষ হয়েছে। এ ছাড়াও রাঙ্গাবালীতে ছয় হাজার ৩৫০ হেক্টর, বাউফলে তিন হাজার ৫২০ হেক্টর, কলাপাড়ায় এক হাজার ৭৫০ হেক্টর, দশমিনায় এক হাজার ৭২০ হেক্টর, সদর উপজেলায় ৮০৫ হেক্টর, দুমকি উপজেলায় ৩৫০ হেক্টর ও মির্জাগঞ্জ উপজেলায় ১৫৫ হেক্টর জমিতে তরমুজের আবাদ হয়েছে। উৎপাদিত এসব তরমুজ বাজারে বিক্রি দুই হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করছে কৃষি বিভাগ।
এদিকে গলাচিপা উপজেলার আমখোলা ও গোলখালী ইউনিয়নে গিয়ে দেখা গেছে, ক্ষেতের পর ক্ষেতে তরমুজ। চাষিরা এখন বিক্রিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন।
আমখোলা ইউনিয়নের বাউরিয়া গ্রামের তরমুজ চাষি ইউনুচ হওলাদার (৪০) ১৩ বছর ধরে রবি মৌসুমে তরমুজ চাষ করছেন। এ বছর নিজের ও অন্যের জমি মিলিয়ে দুই একর জমিতে ফলটি চাষ করেছেন। তিনি বলেন, আমার ক্ষেতের কিছু তরমুজ গাছ মারা গেছে, তবুও যা ছিল ফলন ভালো হয়েছে। বৃহস্পতিবার তরমুজ আড়াই লাখ টাকায় বিক্রি করেছি। ক্ষেত থেকে ব্যাপারীরা এখন পর্যন্ত তরমুজ কেটে নেয়নি।
বৌবাজার এলাকার কৃষক তাসলিমা বেগম মাঝেরচর এলাকায় আট একর জমি লিজ নিয়ে তরমুজ চাষ করেছেন। তিনি বলেন, দুই একর জমিতে আগাম জাতের তরমুজ উৎপাদন করে সাত লাখ টাকা বিক্রি করেছি। এখনও ছয় একর জমিতে তরমুজ রয়েছে। আবহাওয়া ভালো থাকলে প্রায় ১৫ লাখ টাকা বিক্রি করতে পারবো।তিনি আরও বলেন, প্রথমে দাম ভালো ছিল- এখন কিছুটা কম। আজকে রোদের তাপ অনেক, আবহাওয়া এভাবে থাকলে তরমুজের বাড়বে।
সুহুরী ব্রিজ এলাকার কৃষক আলআমিন জানান, মৌসুমের আগেই দেশের বিভিন্ন এলাকার ব্যাপারীরা অগ্রিম দাদন দিতে এলাকায় চলে আসেন এবং ফলনের পর তরমুজ সংগ্রহ করতে এলাকায় অবস্থান করেন। তিনি ক্ষেত থেকে তরমুজ তুলে ব্যাপারীদের কাছে বিক্রি শুরু করেছেন।
মৌসুম শুরুর আগেই ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের আড়তদার ও ব্যাপারীরা এখানকার চাষিদের লাখ লাখ টাকা দাদন দিয়ে রেখেছেন। এখন আড়তদাররা এলাকায় এসে চাষিদের কাছ থেকে তরমুজ সংগ্রহ করছেন। ক্ষেত থেকে তরমুজ কিনে ট্রলার কিংবা ট্রলি বোঝাই করে এনে ট্রাক ও কাভার্ডভ্যানে করে দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠাতে দেখা গেছে। এ ছাড়া ঢাকাগামী লঞ্চগুলোতে তরমুজ চলে যাচ্ছে রাজধানীতে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা খায়রুল ইসলাম মল্লিক বলেন, জেলায় ২৩ হাজার ৬০০ হেক্টর জমিতে তরমুজের আবাদ হয়েছে। এতে সাড়ে ছয় লাখ মেট্রিক টন তরমুজ উৎপাদন হবে। প্রায় সবগুলোই অধিক ফলনশীল হাইব্রিড জাতীয়। জেলার আগাম উৎপাদিত তরমুজ বাজারে ভালো দাম পেয়েছে। সেগুলো দেশের বিভিন্ন এলাকায় চলে যাচ্ছে। উৎপাদিত তরমুজের বাজার মূল্য দুই হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে।
তিনি আরও বলেন, আবাদের পর আবহাওয়া অনুকূলে ছিল। এ অঞ্চলে দোআঁশ মাটিতে তরমুজের ফলন ভালো হয়। বৃষ্টির কারণে মাটিতে প্রচুর রস থাকায় তরমুজ আকারে বড় ও উৎপাদন বেড়ে যাবে বলে মনে হচ্ছে। এ ছাড়াও দিনের বেলা প্রখর রোদে তরমুজের রং উজ্জ্বল ও সুস্বাদু হয়। ফলে এ অঞ্চলের তরমুজ খুব সুস্বাদু এবং ক্রেতাদের কাছেও জনপ্রিয়।
মন্তব্য করুন
চাল বিক্রি করার জন্য এখন থেকে বস্তায় ধানের জাত ও মিল গেটের মূল্য লিখতে হবে। সেই সঙ্গে লিখতে হবে উৎপাদনের তারিখ ও প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানের নাম। এমনকি প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানের অবস্থান (জেলা ও উপজেলা) উল্লেখ করতে হবে। থাকবে ওজনের তথ্যও। চালের উৎপাদনকারী মিল মালিকদের গুদাম থেকে বাণিজ্যিক কাজে চাল সরবরাহের প্রাক্কালে চালের বস্তার ওপর উৎপাদনকারী মিলের নাম, জেলা ও উপজেলার নাম, উৎপাদনের তারিখ, মিল গেট মূল্য এবং ধান/চালের জাত উল্লেখ করতে হবে। বস্তার ওপর এসব তথ্য কালি দিয়ে লিখতে হবে।
চাল উৎপাদনকারী মিল মালিকের সরবরাহ করা সব প্রকার চালের বস্তা ও প্যাকেটে ওজন (৫০/২৫/১০/৫/১) উল্লেখ থাকতে হবে। করপোরেট প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রেও একই নির্দেশনা প্রতিপালন করতে হবে। এক্ষেত্রে মিল গেট দামের পাশাপাশি প্রতিষ্ঠান চাইলে সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য উল্লেখ করতে পারবে।
এ বিষয়ে গত ২১ ফেব্রুয়ারি খাদ্য মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সংগ্রহ শাখা থেকে একটি নির্দেশনা জারি করা হয়।
এমন নির্দেশনা সোমবার (১৪ এপ্রিল) থেকে কার্যকর হবে।
ইতোমধ্যে নির্দেশনার কপি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব, কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব, অর্থ বিভাগের সচিব, সব বিভাগীয় কমিশনার, সব জেলা প্রশাসক, সব জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক, সব উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকসহ সংশ্লিষ্টদের পাঠানো হয়েছে।
খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. ইসমাইল হোসেন স্বাক্ষর করা এই নির্দেশনায় বলা হয়েছে, সম্প্রতি দেশের চাল উৎপাদনকারী কয়েকটি জেলায় পরিদর্শন করে নিশ্চিত হওয়া গেছে বাজারে একই জাতের ধান থেকে উৎপাদিত চাল ভিন্ন ভিন্ন নামে ও দামে বিক্রি হচ্ছে।
চালের দাম অযৌক্তিক পর্যায়ে গেলে বা হঠাৎ বৃদ্ধি পেলে মিলার, পাইকারি বিক্রেতা, খুচরা বিক্রেতা একে অপরকে দোষারোপ করছেন। এতে ভোক্তারা ন্যায্যমূল্যে পছন্দমতো জাতের ধানের চাল কিনতে অসুবিধার সম্মুখীন হচ্ছেন এবং অনেক ক্ষেত্রে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।
এ অবস্থার উত্তরণের লক্ষ্যে চালের বাজারমূল্য সহনশীল ও যৌক্তিক পর্যায়ে রাখতে ধানের নামেই যাতে চাল বাজারজাতকরণ করা হয় তা নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে এবং এ-সংক্রান্ত কার্যক্রম মনিটরিংয়ের সুবিধার্থে নির্দেশনায় কয়েকটি বিষয় নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে।
এর ব্যত্যয় ঘটলে খাদ্যদ্রব্য উৎপাদন, মজুত, স্থানান্তর, পরিবহন, সরবরাহ, বিতরণ, বিপণন (ক্ষতিকর কার্যক্রম প্রতিরোধ) আইন, ২০২৩-এর ধারা ৬ ও ধারা ৭ মোতাবেক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আইনটির ধারা-৬-এর অপরাধের জন্য সর্বোচ্চ দুই বছরের কারাদণ্ড অথবা সর্বোচ্চ ১০ লাখ টাকা জরিমানা অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করার সুযোগ রয়েছে। আর ধারা-৭-এর শাস্তি হিসেবে রয়েছে সর্বোচ্চ পাঁচ বছরের কারাদণ্ড অথবা ১৫ লাখ টাকা জরিমানা অথবা উভয় দণ্ডের বিধান।
মন্তব্য করুন
দিনাজপুরের খানসামায় অনুকূল পরিবেশে আশানুরূপ লাভজনক হওয়ায় চলতি বছর বেড়েছে পপকনের চাষ। পপকনকে ঘিরে কৃষক দেখতে শুরু করেছেন রঙিন স্বপ্ন। ধান, সরিষা, আলু ও ভুট্টার পাশাপাশি এ ফসল অধিক লাভজনক।
অন্য ফসলের চেয়ে তুলনামূলক কম খরচ, উৎপাদন ভালো, লাভজনক হওয়ায় স্থানীয়ভাবে সহজলভ্য ও সরাসরি পাইকারি বাজার সৃষ্টি হওয়ায় পপকন চকষে ঝুঁকেছেন সাধারণ কৃষকরা। এছাড়া নিয়মিত কৃষি বিভাগ থেকে উদ্বুদ্ধকরণ, পরার্মশ প্রদান, সরকারি সহায়তার ফলে চাষিদের মধ্যে আগ্রহ বেড়েই চলছে। সব মিলিয়ে অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি হওয়ায় প্রতি মৌসুমে বাড়ছে পপকন চাষ।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর উপজেলায় ১৫২০ হেক্টর জমিতে পপকন চাষের লক্ষমাত্রা থাকলেও ১৬৬০ হেক্টর অর্জন হয়েছে।
গোয়ালডিহি ইউনিয়নের পপকন চাষি মোস্তফা কামাল ডাবলু শাহ্ বলেন, আমি এ এলাকায় সর্বপ্রথম পপকন চাষ করি। আমাকে দেখে অনেকেই অনুপ্রাণিত হয়ে এখন চাষ করছেন পপকনের। প্রথমের দিকে ৬০ থেকে ৬৫ বিঘা চাষ করেছি। গতবার ও এইবার ২০ বিঘা জমিতে চাষ করেছি। গতবার ২০ বিঘা জমিতে শুকনা দেড় টন পপকন পেয়েছি। আশা করছি এবার আরো বেশি পাবো।
একই এলাকার পপকন চাষি লতিফ হাজ্বী বলেন, পপকন চাষে বেশ লাভবান হয়েছি। গতবারের ন্যায় এবারো ৫ বিঘা চাষ করেছি। সব কিছু ঠিক থাকলে ভাল ফলন হবে বলে মনে করছি।
উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা গোপাল রায় বলেন, পুরো উপজেলার মধ্যে গোয়ালডিহি ইউনিয়নে ৭০ ভাগ ও বাকী ৫ ইউনিয়নে ৩০ ভাগ পপকন চাষ হয়। পপকন চাষে চাষিদের পাশে থেকে ভালো ফলন পেতে সার্বিক পরামর্শ ও সহযোগিতা করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা হাবিবা আক্তার বলেন, দিনাজপুরের শস্যভান্ডারখ্যাত এ উপজেলা। ভুট্টার পাশাপাশি এ অঞ্চলের কৃষক পপকন চাষে বেশ আগ্রহী। পপকন চাষে উদ্ভুদ্ধকরণসহ সার্বক্ষণিক কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে কৃষকদের বিভিন্ন পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
মন্তব্য করুন
চলতি মাসে জ্বালানি তেলের দাম অপরিবর্তিত রেখেছে সরকার।
শনিবার (১ মার্চ) বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে
পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানিয়ে বলা হয়, গত ফেব্রুয়ারি মাসের নির্ধারিত
দামেই এই মাসে জ্বালানি তেল বিক্রি হবে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মার্চ মাসে তুলনামূলক সাশ্রয়ী মূল্যে
জ্বালানি তেল সরবরাহ করতে বিদ্যমান দাম অনুযায়ী প্রতিলিটার ডিজেল ও কেরোসিন ১০৫
টাকা, পেট্রোলের দাম ১২২ টাকা ও অকটেনের দাম ১২৬ টাকা রাখা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত বছরের মার্চ থেকে বিশ্ববাজারের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে
জ্বালানি তেলের স্বয়ংক্রিয় মূল্য নির্ধারণ শুরু করেছে সরকার। সেই থেকে প্রতি
মাসে নতুন দাম ঘোষণা করে আসছিল সরকার। তবে চলতি মাসে এর ব্যতিক্রম ঘটলো।
গত ফেব্রুয়ারি মাসে পেট্রোল, অকটেন, ডিজেল ও কেরোসিনের দাম
লিটারপ্রতি এক টাকা বাড়িয়ে এই দাম নির্ধারণ করেছিল সরকার।
মন্তব্য করুন
বুধবার অন্তর্বর্তীকালীন
সরকারের প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, অর্থ আত্মসাৎকারীদের স্থানীয় সম্পদ অধিগ্রহণ এবং বিদেশে পাচারকৃত অর্থ ফেরানোর কাজ শুরু করেছে সরকার।
এতে বলা হয়েছে, ব্যাংকগুলোর নতুন ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ, বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক গোয়েন্দা বিভাগ বিএফআইইউ, পুলিশের সিআইডি ও দুদকের সহায়তায় আত্মসাৎকারীদের স্থানীয় সম্পদ অধিগ্রহণ এবং বিদেশে পাচার করা অর্থ প্রত্যাবাসনের মাধ্যমে আত্মসাৎ করা অর্থ পুনরুদ্ধারে কাজ শুরু হয়েছে।
সরকার খুব শিগগির একটি ব্যাংকিং কমিশন গঠন করবে, যারা সংশ্লিষ্ট প্রতিটি ব্যাংকে তদন্ত সাপেক্ষে প্রকৃত চিত্র প্রকাশ করবে এবং ব্যাংকগুলোর
পুনর্গঠনের জন্য ছয় মাসের মধ্যে একটি বাস্তবায়নযোগ্য রোডম্যাপ প্রণয়ন করবে।
কিছু অসাধু ব্যবসায়ী ও অন্যান্য প্রভাবশালী ব্যক্তি সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ব্যাংকিং খাতে ব্যাপক দুর্নীতি ও প্রতারণার মাধ্যমে নামে-বেনামে বিপুল পরিমাণের অর্থ আত্মসাৎ করেছেন এবং বিদেশে পাচার করেছেন। এর সঠিক পরিমাণ নির্ণয়ের কাজ চলমান আছে। এই আত্মসাৎ করা অর্থের পরিমাণ লক্ষাধিক কোটি টাকার ওপরে বলে ধারণা করা যায়।
অর্থ প্রত্যাবাসনের বিষয়ে বিভিন্ন বিদেশি সংস্থার সহায়তা চেয়ে ইতিমধ্যে যোগাযোগ শুরু করা হয়েছে।
এ ধরনের দুর্নীতি ও অর্থ পাচারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে ইতিমধ্যে সংস্কার কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে। এরই মধ্যে ইসলামী ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংকের পর্ষদ পুনর্গঠন করা হয়েছে। অবশিষ্ট ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে
সংস্কার কার্যক্রম শুরু করা হবে।
নতুন ব্যবস্থাপনা
কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে আত্মসাৎ করা এসব অর্থের প্রকৃত তথ্য সংগ্রহ করা হবে এবং তাদের মাধ্যমে আত্মসাৎ করা অর্থের প্রকৃত পরিমাণ নির্ণয়ে অডিট কার্যক্রম শুরু করা হবে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশ ব্যাংক ও সরকারের লক্ষ্য হলো সব আন্তর্জাতিক
মানদণ্ড পরিপালনে সক্ষম একটি শক্তিশালী ব্যাংকিং খাত গড়ে তোলা। তবে এই উদ্দেশ্য অর্জনের কার্যক্রম শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত আন্তর্জাতিক কারিগরি সহায়তা ও অর্থের প্রয়োজন হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংক ও সরকার অর্থ আত্মসাৎকারীদের দেশি-বিদেশি সম্পদ অধিগ্রহণ ও বিদেশ থেকে ফেরত এনে ব্যাংকগুলোকে পুনর্গঠনের লক্ষ্যে কার্যক্রম হাতে নিচ্ছে। ব্যাংকগুলোর এই পুনর্গঠন ও আর্থিক খাতের কাঠামোগত সংস্কার সময় সাপেক্ষ ব্যাপার। তবে সরকার বাংলাদেশের আর্থিক খাতকে আন্তর্জাতিক
মানের করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।
মন্তব্য করুন
সরকার আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে মিল রেখে দেশের বাজারে ডিজেল ও কেরোসিনের দাম লিটার প্রতি ২ টাকা ২৫ পয়সা কমিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে ।
রোববার (৩১ মার্চ) জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত জারি করা প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, নতুন স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে মিল রেখে দেশের বাজারে ডিজেল ও কেরোসিনের দাম লিটার প্রতি ২ টাকা ২৫ পয়সা কমিয়েছে সরকার। তবে অকটেন ও পেট্রোলের দাম আগের মতোই রয়েছে। নতুন দাম সোমবার (১ এপ্রিল) থেকে কার্যকর হবে।
সরকার গত ২৯ ফেব্রুয়ারি জ্বালানি তেলের স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে মূল্য নির্ধারণের নির্দেশিকার প্রজ্ঞাপন প্রকাশ করে। এরই ধারাবাহিকতায় গত ৭ মার্চ প্রথম প্রাইসিং ফর্মুলা অনুসারে জ্বালানি তেলের মূল্য সমন্বয়ের প্রজ্ঞাপন প্রকাশ করা হয়েছিল।
নতুন দাম অনুযায়ী, ভোক্তা পর্যায়ে প্রতি লিটার ডিজেল ও কেরোসিন ১০৮ টাকা ২৫ পয়সা থেকে কমিয়ে ১০৬ টাকা করা হয়েছে। এক্ষেত্রে প্রতি লিটার ডিজেল ও কেরোসিনে ২ টাকা ২৫ পয়সা কমেছে। আগের মতোই লিটার প্রতি অকটেনের দাম ১২৬ টাকা এবং পেট্রোলের দাম ১২২ টাকা রয়েছে।
ওই সময়ে ভোক্তা পর্যায়ে প্রতি লিটার ডিজেল ও কেরোসিন ১০৯ টাকা থেকে কমিয়ে ১০৮ টাকা ২৫ পয়সা, অকটেন ১৩০ টাকা থেকে ১২৬ টাকা এবং পেট্রোলের দাম ১২৫ টাকা থেকে কমিয়ে ১২২ নির্ধারণ করা হয়। তখন প্রতি লিটার ডিজেল ও কেরোসিনে ৭৫ পয়সা, অকটেনে ৪ টাকা ও পেট্রোলে ৩ টাকা কমানো হয়েছিল।
মন্তব্য করুন
চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের
মধ্যে নির্বিঘ্ন নিরবিচ্ছিন্ন যোগাযোগ ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের
নির্বাহী কমিটি (একনেক) আজ (৭ অক্টোবর) কালুরঘাটে কর্ণফুলী নদীর উপর বিদ্যমান পুরাতন
সেতুর পাশে ১১,৫৬০.৭৭ কোটি টাকার নতুন রেল-কাম-সড়ক সেতু প্রকল্প অনুমোদন করেছে।
প্রধান উপদেষ্টা
অধ্যাপক ডক্টর মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে রাজধানীতে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত
চলতি অর্থবছরের (অর্থবছর ২৫) তৃতীয় ও অন্তর্বর্তী সরকারের দ্বিতীয় একনেক বৈঠকে এ অনুমোদন
দেওয়া হয়।
বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের
ব্রিফিংকালে পরিকল্পনা ও শিক্ষা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ জানান, দিনের বৈঠকে
মোট আনুমানিক ২৪ হাজার ৪১২ কোটি ৯৪ লাখ টাকা ব্যয়ে মোট চারটি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া
হয়েছে। মোট প্রকল্প ব্যয়ের মধ্যে বাংলাদেশ সরকারের অংশ থেকে ৭,৭৪৬.৬৬ কোটি টাকা, প্রকল্প
সহায়তা থেকে ১৬,০১২.৩৩ কোটি টাকা ও সংশ্লিষ্ট সংস্থার নিজস্ব তহবিল থেকে ৬৫৩.৯৫ কোটি
টাকা আসবে।
অনুমোদিত চারটি
প্রকল্পের মধ্যে দু’টি নতুন ও দু’টি সংশোধিত প্রকল্প। এছাড়া বৈঠকে ব্যয় না বাড়িয়ে সাতটি
প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানোর অনুমোদন দেওয়া হয়।
রেলপথ মন্ত্রণালয়
২০৩০ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে রেল-কাম-সড়ক সেতু প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে ।
মোট ১১,৫৬০.৭৭
কোটি টাকার প্রকল্প ব্যয়ের মধ্যে ৪,৪৩৫.৬২ কোটি টাকা আসবে বাংলাদেশ সরকারের কাছ থেকে
এবং বাকি ৭,১২৫.১৫ কোটি টাকা আসবে অর্থনৈতিক উন্নয়ন সহযোগিতা তহবিল (ইডিসিএফ) এবং ইকোনমিক
ডেভেলপমেন্ট প্রমোশন ফ্যাসিলিটিজ (ইডিপিএফ), কোরিয়া থেকে। পরিকল্পনা উপদেষ্টা জানান,
কালুরঘাটে বিদ্যমান সেতুটি পুরনো ও জরাজীর্ণ হওয়ায় এ ব্যাপারে নতুন প্রকল্পের কথা বিবেচনা
করা হয়েছে।তিনি বলেন, সরকার কক্সবাজারকে আরও উন্নত পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে রূপান্তর
করতে চায়। এছাড়াও মাতারবাড়ী কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র ও সংলগ্ন অর্থনৈতিক অঞ্চলের
জন্যও উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা প্রয়োজন। এ জন্য সরকার মনে করেছে, এ ক্ষেত্রে একটি নতুন
প্রকল্প গ্রহণ করা উচিত।
পরিকল্পনা কমিশনের
একজন কর্মকর্তা বলেন, প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য হলো চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের মধ্যে নির্বিঘ্ন
ও নিরবচ্ছিন্ন রেল যোগাযোগ নিশ্চিত করা এবং ট্রান্স এশিয়ান রেলওয়ের সঙ্গে সংযোগের সুযোগ
তৈরি করা। রেলপথ মন্ত্রনালয়ের কর্মকর্তারা জানান, বর্তমানে পুরানো ও জরাজীর্ণ কালুরঘাট
সেতু দিয়ে ঘণ্টায় ১০ কিলোমিটারের বেশি গতিতে ট্রেন চলাচল করতে পারে না। এছাড়া মাতারবাড়ী
গভীর সমুদ্র বন্দর চালু হলে, এ অঞ্চলে ব্যবসা-বাণিজ্য যেমন চাঙ্গা হবে, তেমনি এ রুটের
গুরুত্বও বাড়বে। ইতোমধ্যেই দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইন চালুর মাধ্যমে ঢাকা ও কক্সবাজারের
মধ্যে সরাসরি রেল যোগাযোগ স্থাপিত হয়েছে। ফলে পর্যটন নগরীর সঙ্গে নির্বিঘ্নে যোগাযোগ
নিশ্চিত করতে বিদ্যমান পুরাতন সেতুর পাশে কালুরঘাটে কর্ণফুলী নদীর ওপর নতুন রেল-কাম-সড়ক
সেতু নির্মাণ অপরিহার্য হয়ে পড়েছে। এমন একটি পরিস্থিতিতে প্রকল্পটি তৈরি করা হয়েছে
এবং এইভাবে কোরিয়ান সরকারের অর্থায়নে অনুমোদিত হয়েছে।
বর্তমানে দেশের
আমদানি ও রপ্তানি কার্যক্রমের ৭০ শতাংশ হয়ে থাকে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে। প্রস্তাবিত
প্রকল্পটি চট্টগ্রাম বন্দরের সাথে নির্বিঘ্ন
রেল যোগাযোগ এবং পণ্য পরিবহন নিশ্চিত করতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
নতুন সেতুটি নির্মিত হলে, এই অঞ্চলের বিভিন্ন রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল ও বিশেষ অর্থনৈতিক
অঞ্চলে অবস্থিত কল-কারখানার পাশাপাশি শিল্প প্রতিষ্ঠান তাদের পণ্য পরিবহন করতে সক্ষম
হবে। মূল প্রকল্পের কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে ৭০০ মিটার রেল-কাম-রোড ব্রিজ নির্মাণ,
৬.২০ কিলোমিটার ভায়াডাক্ট নির্মাণ, ২.৪০ কিলোমিটার সড়ক ভায়াডাক্ট, ৪.৫৪ কিলোমিটার বাঁধ,
১১.৪৪ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণ এবং আনুষঙ্গিক কাজ।
অতিরিক্ত ৬,৫৭৩.৯৬
কোটি টাকা ব্যয়ে দ্বিতীয় সংশোধিত মাতারবাড়ী বন্দর উন্নয়নের অনুমোদন প্রসঙ্গে উপদেষ্টা
বলেন, এটি একটি বড় প্রকল্প। প্রকল্পটির ভূ-রাজনৈতিক দিকও রয়েছে। তিনি বলেন, এই বন্দরের
অর্থায়ন নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে চীন ও ভারতের মধ্যে বিরোধ রয়েছে। পরিকল্পনা উপদেষ্টা বলেন,
মাতারবাড়ী বন্দরে প্রয়োজনীয় কাজ এখনো শুরু হয়নি এবং বন্দরের উন্নয়নে রাস্তা নির্মাণ
করা হবে।
সভায় অনুমোদিত
অন্য দুটি প্রকল্প হল- সাজেক রোড কানেক্টিভিটি, প্রকল্প-২: এলেঙ্গা-হাটিকামরুল-রংপুর
মহাসড়ক চার লেনে উন্নীতকরণ, ৩৭৬.৯৯ কোটি টাকা অতিরিক্ত ব্যয়ে দ্বিতীয় সংশোধিত ও ৫,৯০১.২২২
টাকা দিয়ে রেসিলিয়েন্ট আরবান অ্যান্ড টেরিটোরিয়াল ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট (আরইইউটিডিপি)।
মন্তব্য করুন